ইতিহাসে প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে জায়গা করে নিল প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। শুধু তাই নয়, গত রাতে ২৫ বছর পর ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ কোন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলেছে পিএসজি। আর তাতেই আরবি লেইপজিগকে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলো তারা।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম সেমিফাইনালে আরবি লেইপজিগের মুখোমুখি হয় পিএসজি। অনভিজ্ঞ লাইপজিগকে ৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে পিএসজি।
এর আগে টানা সাত মওসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে পিএসজিকে। যার মধ্যে প্রথম চার মওসুম কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে আর শেষ তিন মওসুম রাউন্ড অব ১৬ থেকেই। তবে সব ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে অবশেষে সে খরা কাটলো ক্লাব প্রতিষ্ঠার পঞ্চাশতম বর্ষে এসে। এ মাসের ১২ তারিখ ক্লাবের ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পূর্ণ হলো। আর এ বছরেই মিললো স্বপ্নের ফাইনালের দেখা।
যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের ১৫ বছর পর এই প্রথমবার সেমিফাইনালে নেই লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে সময়ের আরেক সেরা খেলোয়াড় নেইমার এবার স্বপ্ন দেখছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ইউরোপিয়ান ট্রফি জেতার। সেই লক্ষ্যে আর এক ধাপ পাড়ি দিতে হবে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে। আগামী রোববারের ফাইনালে তার দল পিএসজির প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ কিংবা লায়ন, বুধবার হবে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল।
লিসবনে গোটা ম্যাচে দাপট দেখিয়েছে পিএসজি। প্রথমবার দুই দল কোনও প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হয়েছিল। অচেনা প্রতিপক্ষের এই লড়াইয়ে মোটেও পাত্তা পায়নি লাইপজিগ। ষষ্ঠ মিনিটে দুর্দান্ত সুযোগ নষ্ট হয় নেইমারের। কিলিয়ান এমবাপ্পে লাইপজিগ গোলরক্ষক পিটার গুলাকসিকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। তার শট দূরের পোস্টে আঘাত করে।
পরের মিনিটে জার্মান ক্লাবের জালে বল ঢুকেছিল। কিন্তু নেইমারের হ্যান্ডবলের কারণে গোলদাতার খাতায় নাম লিখতে পারেননি এমবাপ্পে, রেফারি গোল বাতিল করে দেন। তবে ১৩ মিনিটের সময় স্বস্তির গোলের দেখা পায় পিএসজি। আনহেল দি মারিয়ার ফ্রি কিক থেকে মারকুইনহোসের দুর্দান্ত হেডে ১-০তে এগিয়ে যায় তারা।
৩৬ মিনিটে আবারও নেইমার সুযোগ নষ্ট করেন বল পোস্টে আঘাত করলে। তবে বিরতিতে যাওয়ার আগেই পিএসজি ব্যবধান দ্বিগুণ করে। লাইপজিগের গোলকিপার বল ক্লিয়ার করলে নেইমার তা দখল করেন এবং বল বাড়িয়ে দেন ডি মারিয়ার দিকে। আর্জেন্টাইন প্লেমেকার চ্যাম্পিয়নস লিগের মঞ্চে তার ২১তম গোল করতে ভুল করেননি। ফলে ২-০তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় তারা।
বিরতি থেকে ফিরে প্রথম দশ মিনিট পিএসজির বক্সে কিছুটা আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেছিল লাইপজিগ। কিন্তু তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ আশাকে জলাঞ্জলি দিতে হয় ৫৬ মিনিটে। ডি মারিয়ার ক্রস থেকে হুয়ান বার্নাটের হেড গুলাকসির হাতে লেগে জাল খুঁজে নেয়।
৭০ ও ৭২ মিনিটে এমবাপ্পের দুটি শট ব্যর্থ হলে আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি পিএসজি। তাতে করে ১৯৯৭ সালের উয়েফা কাপ উইনার্স কাপের পর প্রথমবার ইউরোপিয়ান কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনালে জায়গা করে নিলো ফরাসি ক্লাবটি।