Dhaka ০৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • ১০ Time View

বাড়ি ভাড়া নিয়ে পাঠদান পরিচালনা করা ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিজস্ব জমিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে না পারায় তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) এই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

গত ৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন–২০১০–এর ৭(২) ও ১১(২) ধারার বিধানমতে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করেনি বিধায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০–এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০–এর ১২(১) ধারায় বলা আছে, ‘কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা ক্ষেত্রমতে নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হলে অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯–এর কোনো শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে, সাময়িক অনুমতিপত্র বা ক্ষেত্রমতে নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা–সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, ওই ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সাতমসজিদ রোডের ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, রাজারবাগের দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, গুলশানের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, বনানীর প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, শ্যামলীর আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, পান্থপথের সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি ও মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস।

এ ছাড়া সিলেটের নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ফেনীর ফেনী ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রামের চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিও এ তালিকায় রয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সাময়িক অনুমতি নিয়ে চলছিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে প্রতিষ্ঠার সাত বছর পার হয়ে যাওয়ায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাময়িক অনুমতির মেয়াদ শেষ। সাময়িক মেয়াদ শেষ হলেও নিজস্ব জমিতে স্থাপিত ক্যাম্পাসে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থানান্তরিত না হওয়ায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী পূর্ণ সনদপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের শর্ত পূরণ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউজিসিকে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্যোগ আছে, তাদের কিছুটা সময় দেওয়া হবে। আর যারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্যোগই নেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেব না যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

Update Time : ০৩:৩৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

বাড়ি ভাড়া নিয়ে পাঠদান পরিচালনা করা ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিজস্ব জমিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে না পারায় তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) এই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

গত ৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন–২০১০–এর ৭(২) ও ১১(২) ধারার বিধানমতে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করেনি বিধায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০–এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০–এর ১২(১) ধারায় বলা আছে, ‘কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা ক্ষেত্রমতে নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হলে অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯–এর কোনো শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে, সাময়িক অনুমতিপত্র বা ক্ষেত্রমতে নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা–সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, ওই ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সাতমসজিদ রোডের ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, রাজারবাগের দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, গুলশানের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, বনানীর প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, শ্যামলীর আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, পান্থপথের সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি ও মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস।

এ ছাড়া সিলেটের নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ফেনীর ফেনী ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রামের চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিও এ তালিকায় রয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সাময়িক অনুমতি নিয়ে চলছিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে প্রতিষ্ঠার সাত বছর পার হয়ে যাওয়ায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাময়িক অনুমতির মেয়াদ শেষ। সাময়িক মেয়াদ শেষ হলেও নিজস্ব জমিতে স্থাপিত ক্যাম্পাসে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থানান্তরিত না হওয়ায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী পূর্ণ সনদপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের শর্ত পূরণ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউজিসিকে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্যোগ আছে, তাদের কিছুটা সময় দেওয়া হবে। আর যারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্যোগই নেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেব না যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’