করোনা সংক্রমণের কমতির ধারা অব্যাহত থাকলে ১৬ অক্টোবর থেকে দেশের সিনেমা হলগুলোকে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক দর্শক নিয়ে খোলার অনুমতি দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তবে এ বিষয়ে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি। 

আজ বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান। তথ্যসচিব কামরুন নাহার, প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিঞা আলাউদ্দিন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরফুদ্দীন এলাহী সম্রাট প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সিনেমা হল খোলার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিল। আমরা এ মাসের শুরুর দিকে প্রথমে একবার বসেছিলাম। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত ছিল ১৫ সেপ্টেম্বরের পরে বৈঠক করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। সেই মর্মে আজকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং আমরা ঐক্যমতে উপনীত হয়েছি, যদি করোনা পরিস্থিতি এখন যে পর্যায়ে আছে এবং এই ধারাটা যদি কমতির দিকেই অব্যাহত থাকে, তাহলে আমরা ১৬ অক্টোবর থেকে সিনেমা হল খুলে দিতে পারি। তবে এ ব্যাপারে আমরা অবশ্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণ করবো।”

সিনেমা হল খোলার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং ধারণক্ষমতার অর্ধেক দর্শক নিয়ে হলগুলো চালু হবে। কিভাবে আসন বিন্যাস হবে সে নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি, জানান ড. হাছান।

সিনেমা হল খুলে দেবার বিষয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে বাংলাদেশে বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে আগে যে বিধিনিষেধ ছিল, সেটি তুলে দেয়া হয়েছে, স্বাভাবিক সময়ের মতো যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। সিনেমার সাথে বহু শিল্পী কলাকুশলীসহ বহু মানুষের কর্মসংস্থান যুক্ত। যেহেতু অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে, পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে, সেকারণে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।’ তবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সিদ্ধান্ত ভিন্ন হবে, বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী এসময় সিনেমা হল নির্মাণ, পুণরায় চালু করা ও সংস্কারে সহজ শর্তে ঋণ তহবিল গঠনে প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানান।
ড. হাছান বলেন, ‘আপনারা জানেন যে বাংলাদেশে একসময় ১২শ’ সিনেমা হল ছিল, সেটি কমতে কমতে এখন ২শ’ আড়াইশ’র মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়েছে। সিনেমা হলগুলো হচ্ছে এই শিল্পের প্রাণ। সিনেমা হল না থাকলে সিনেমা বানিয়ে সেটি প্রদর্শন করার তো জায়গা থাকে না।

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলগুলো পুনরায় চালু করা, যে সিনেমা হলগুলো চালু আছে সেগুলোর আধুনিকায়ন এবং একইসাথে নতুন সিনেমা হল কেউ যদি নির্মাণ করতে চায়, সেই ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী স্বল্প সুদে ঋণের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করার অনুমোদন চেয়েছিলাম। তিনি এটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছেন, যা চলচ্চিত্র শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে একটি বৈপ্লবিক ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে” বলেন তথ্যমন্ত্রী।

চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস এসময় তার বক্তব্যে এই তহবিল ঘোষণার জন্য তথ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধা জানান।

মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ব্রিফিংকালে ‘বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান জিয়ার মাজারে তথ্যমন্ত্রীর ওপর বিষোদগার করেছেন’ এবিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাজনীতিতে সমালোচনা থাকবে। আমাদের সমালোচনা অবশ্যই আমাদের প্রতিপক্ষ করতে পারে, তাদের সমালোচনা আমাদের পক্ষ থেকে হতে পারে। কিন্তু কারো ওপর ব্যক্তিগতভাবে বিষোদগার করা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। একইসাথে আমি দলের পক্ষেও কথা বলি। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করা হয়। সেই মিথ্যাচারের জবাব দেয়া আমাদের দায়িত্ব।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে