Dhaka ০৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করলেন ট্রাম্প

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০৮:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫
  • 28

বিশ্বের ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) জারি করা এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

পাশাপাশি আরও ৭টি দেশের নাগরিকদের ওপর কঠোর ভ্রমণ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস এ তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, স্থানীয় সময় বুধবার এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া এই আদেশ কার্যকর হবে আগামী সোমবার থেকে।

যে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেগুলো হলো: আফগানিস্তান, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন।

এছাড়া যে ৭টি দেশের নাগরিকদের ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো হলো: বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।”

হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, সম্প্রতি কোলোরাডোর বোল্ডারে এক ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে হামলা তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি দাবি করেন, “এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে, অপর্যাপ্তভাবে যাচাইকৃত বিদেশিদের প্রবেশ আমাদের জন্য কতটা বিপজ্জনক।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “ইউরোপে যেটা ঘটেছে, আমরা তা আমেরিকায় হতে দেবো না। আমরা এমন কোনো দেশ থেকে খোলা দরজা নীতিতে অভিবাসন গ্রহণ করতে পারি না, যেখান থেকে আগতদের সঠিকভাবে যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়।”

তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায়, তাদের আমরা আমাদের দেশে ঢুকতে দেবো না।”

অবশ্য ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তার প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে জারি করা বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতা বলেই বিবেচিত হচ্ছে। তখন তিনি মুসলিম-প্রধান সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন। সেসব দেশ ছিল: ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন।

সে সময় অনেক যাত্রী বিমানবন্দরেই আটকা পড়েন বা ফ্লাইটেই উঠতে পারেননি। এতে শিক্ষার্থী, গবেষক, ব্যবসায়ী ও পরিবারের কাছে আসা বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ট্রাম্প শুরু থেকেই এ নিষেধাজ্ঞাকে “জাতীয় নিরাপত্তা” রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেন। যদিও ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রকাশ্যে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিলেন।

পরে বিভিন্ন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত ট্রাম্পের সংশোধিত নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে। সেখানে ইরান, সোমালিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া, লিবিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও ভেনেজুয়েলার কিছু কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করলেন ট্রাম্প

Update Time : ০৩:০৮:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫

বিশ্বের ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) জারি করা এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

পাশাপাশি আরও ৭টি দেশের নাগরিকদের ওপর কঠোর ভ্রমণ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস এ তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, স্থানীয় সময় বুধবার এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া এই আদেশ কার্যকর হবে আগামী সোমবার থেকে।

যে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেগুলো হলো: আফগানিস্তান, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন।

এছাড়া যে ৭টি দেশের নাগরিকদের ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো হলো: বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।”

হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, সম্প্রতি কোলোরাডোর বোল্ডারে এক ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে হামলা তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি দাবি করেন, “এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে, অপর্যাপ্তভাবে যাচাইকৃত বিদেশিদের প্রবেশ আমাদের জন্য কতটা বিপজ্জনক।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “ইউরোপে যেটা ঘটেছে, আমরা তা আমেরিকায় হতে দেবো না। আমরা এমন কোনো দেশ থেকে খোলা দরজা নীতিতে অভিবাসন গ্রহণ করতে পারি না, যেখান থেকে আগতদের সঠিকভাবে যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়।”

তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায়, তাদের আমরা আমাদের দেশে ঢুকতে দেবো না।”

অবশ্য ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তার প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে জারি করা বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতা বলেই বিবেচিত হচ্ছে। তখন তিনি মুসলিম-প্রধান সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন। সেসব দেশ ছিল: ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন।

সে সময় অনেক যাত্রী বিমানবন্দরেই আটকা পড়েন বা ফ্লাইটেই উঠতে পারেননি। এতে শিক্ষার্থী, গবেষক, ব্যবসায়ী ও পরিবারের কাছে আসা বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ট্রাম্প শুরু থেকেই এ নিষেধাজ্ঞাকে “জাতীয় নিরাপত্তা” রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেন। যদিও ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রকাশ্যে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিলেন।

পরে বিভিন্ন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত ট্রাম্পের সংশোধিত নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে। সেখানে ইরান, সোমালিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া, লিবিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও ভেনেজুয়েলার কিছু কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল।