Dhaka ০৮:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৌদিতে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা দুই মাস বাড়ালো ইসি সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনেই ভালো ফল পাওয়া যাবে না : কমিশন প্রধান ঢাকায় রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস, বাড়বে গরমের অনুভূতি জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় টেকসই কর্মসূচি বাড়ানো হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা রাজনৈতিক পর্যায়ে সার্কের অগ্রগতি হয়নি : নেপালের রাষ্ট্রদূত শান্তিরক্ষা মিশনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ১৯১ রানেই অলআউট টাইগাররা প্রধান উপদেষ্টা কাতার সফরে যাচ্ছেন সোমবার

১০ হাজার টাকার গুজবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরল কুড়িগ্রামের শিক্ষার্থীরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মার্চ ২০২১
  • ১২৪ Time View

সোহেল রানা,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:

করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।

আর এই গুজবে বিশ্বাস করে আজ শনিবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল কুড়িগ্রাম শহরে। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের প্রত্যয়ন নিতে শহরের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় যায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এমনকি শহরে অবস্থান না করা শিক্ষার্থীরাও আবেদনের জন্য ফিরে এসেছে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে শহরে লেগে যায় যানজট। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে।

কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানশিক্ষকরা জানান, গত বছরের মতো এ বছরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ অনুদানের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। দুরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা এই অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। দুস্থ, প্রতিবন্ধী, গরিব ও অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সংস্কার, আসবাবপত্র, খেলার সামগ্রী এবং পাঠাগার উন্নয়নের জন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে। আগামী ৭ মার্চ আবেদনের শেষ সময়। তবে এটি করোনা প্রণোদনা বা স্টুডেন্ট ভাতা না।

শিক্ষার্থীরা জানায়, করোনাকালীন স্টুডেন্ট ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা প্রদান করার কথা শুনে তারা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে অনলাইনে আবেদনের জন্য ভিড় করেছেন। কিন্তু নির্ধারিত ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছে না। এ ছাড়া কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে প্রত্যয়ন দিলেও কোনো প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা ৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিন জানায়, ১০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার কথা শুনে মাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া জানায়, প্রত্যয়ন নিতে গণিত বিভাগের ক্লার্ক ৫০ টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা ১০০-২০০ টাকা চেয়েছেন।

অভিভাবক বজলুর রশিদ জানান, সবার মুখে মুখে শুনে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন আবেদন করতে। কিন্তু সার্ভারে ঢোকা যাচ্ছে না।

কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, এ ধরনের চিঠি গত বছরেও এসেছিল এবং সীমিতসংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুদান পেয়েছেন। কিন্তু গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে এ বছর ধনী-দরিদ্র সকল শিক্ষার্থী প্রত্যয়ন নিয়ে আবেদন করার জন্য ভিড় করছেন।

কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, যে চিঠি এসেছে তাতে সব শিক্ষার্থীর আবেদনের সুযোগ নেই। কিন্তু গুজবের কারণে সবাই প্রত্যয়নের জন্য ভিড় করছে।

কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম জানান, তাদের কাছে করোনার কোনো অনুদানের কাছে চিঠি আসেনি। একটি মহল গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে স্বার্থ হাসিল করতে চায় বলে তার মনে হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

১০ হাজার টাকার গুজবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরল কুড়িগ্রামের শিক্ষার্থীরা

Update Time : ০৪:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মার্চ ২০২১

সোহেল রানা,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:

করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।

আর এই গুজবে বিশ্বাস করে আজ শনিবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল কুড়িগ্রাম শহরে। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের প্রত্যয়ন নিতে শহরের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় যায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এমনকি শহরে অবস্থান না করা শিক্ষার্থীরাও আবেদনের জন্য ফিরে এসেছে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে শহরে লেগে যায় যানজট। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে।

কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানশিক্ষকরা জানান, গত বছরের মতো এ বছরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ অনুদানের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। দুরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা এই অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। দুস্থ, প্রতিবন্ধী, গরিব ও অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সংস্কার, আসবাবপত্র, খেলার সামগ্রী এবং পাঠাগার উন্নয়নের জন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে। আগামী ৭ মার্চ আবেদনের শেষ সময়। তবে এটি করোনা প্রণোদনা বা স্টুডেন্ট ভাতা না।

শিক্ষার্থীরা জানায়, করোনাকালীন স্টুডেন্ট ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা প্রদান করার কথা শুনে তারা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে অনলাইনে আবেদনের জন্য ভিড় করেছেন। কিন্তু নির্ধারিত ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছে না। এ ছাড়া কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে প্রত্যয়ন দিলেও কোনো প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা ৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিন জানায়, ১০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার কথা শুনে মাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া জানায়, প্রত্যয়ন নিতে গণিত বিভাগের ক্লার্ক ৫০ টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা ১০০-২০০ টাকা চেয়েছেন।

অভিভাবক বজলুর রশিদ জানান, সবার মুখে মুখে শুনে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন আবেদন করতে। কিন্তু সার্ভারে ঢোকা যাচ্ছে না।

কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, এ ধরনের চিঠি গত বছরেও এসেছিল এবং সীমিতসংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুদান পেয়েছেন। কিন্তু গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে এ বছর ধনী-দরিদ্র সকল শিক্ষার্থী প্রত্যয়ন নিয়ে আবেদন করার জন্য ভিড় করছেন।

কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, যে চিঠি এসেছে তাতে সব শিক্ষার্থীর আবেদনের সুযোগ নেই। কিন্তু গুজবের কারণে সবাই প্রত্যয়নের জন্য ভিড় করছে।

কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম জানান, তাদের কাছে করোনার কোনো অনুদানের কাছে চিঠি আসেনি। একটি মহল গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে স্বার্থ হাসিল করতে চায় বলে তার মনে হয়।