আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনা কোম্পানি হুয়াওয়েকে যুক্তরাজ্য তার ৫জি নেটওয়ার্ক থেকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অল্প কিছুদিন আগেও চীন তার এ টেলিকম জায়ান্টের বিচরণক্ষেত্র হিসেবে যুক্তরাজ্যকে গণ্য করত।
তবে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি ও হংকংয়ের ওপর চীনের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়ার মত দুটি ঘটনা এ অবস্থা পুরো উল্টে দিয়েছে। প্রথম ঘটনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র এত দিন হুয়াওয়ের বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্র বানানোর জন্য যে প্রয়োজনীয় উন্নত সেমিকন্ডাক্টর বানিয়ে এসেছে গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সাপ্লাইয়ার হুয়াওয়েকে সেমিকন্ডাক্টর (বিশেষত, মোবাইল ফোন সেটের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরির ধাতব কাঁচামাল, যেমন সিলিকন) সরবরাহ করতে পারবে না বলে ঘোষণা দেয়।
দ্বিতীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে বরিস জনসনের জন্য যুক্তরাজ্যে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করা সহজ করে দিয়েছে, সেটি হলো গত ২০ জুন চীনের পার্লামেন্টে পাস হওয়া এ কালাকানুন, প্রকৃতপক্ষে সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদাকে শেষ করে দিয়েছে। ১৯৮৪ সালে চীন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক চুক্তিতে বলা ছিল, ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেবে। তবে শর্ত হলো তার পরের ৫০ বছর হংকংকে স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রের মর্যাদা দিতে হবে। সেই ভিত্তিতে ‘এক দেশ দুই নীতি’ চালু ছিল। কিন্তু নতুন এ আইন হংকংয়ের সেই আইনানুগ অধিকার খর্ব করেছে। এটি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চীনের প্রকাশ্য বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
এখন এটি পরিষ্কার যে চীন ক্রমাগত নিজের শত্রুদেশের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। গত কয়েক মাসে ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব খারাপ জায়গায় গেছে। কোভিড–১৯ মহামারির উৎপত্তিস্থলের অনুসন্ধান চালাতে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই কারণে অস্ট্রেলিয়ার ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপিয়েছে চীন। জাপানের সঙ্গেও চীনের শত্রুতা বেড়েছে। এত দেশকে খেপিয়ে চীনের পক্ষে সামনে এগোনো কঠিন হবে।