Dhaka ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিরক খণ্ডের লোভে মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে হুড়মুড়িয়ে ছুটছেন হাজারো মানুষ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৩:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুন ২০২১
  • ৮৯ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে কাকতালীয়ভাবে এক পশুপালকের হাতে পড়েছিল অচেনা এক পাথর। পাথরটি কী- তা সে জানতো না। তবে এ রকম পাথর আগে কখনও দেখেনি সে। উজ্জ্বল, সাদা, সূর্যের আলো পড়লে যেন জ্যোতি ঠিকরে পড়ছে তার চারপাশ থেকে। ঠিক যেন হীরক খণ্ড!

ওই পশুপালকের এই আবিষ্কারের কথা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় আরেক কাণ্ড! বড়লোক থেকে শুরু করে মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে হুড়মুড়িয়ে সেই লক্ষ্যে ছুটছেন সব ধরণের লোকজন।

শত শত মানুষের এই হুল্লোড় নিমেষে নজর টেনেছে সারা বিশ্বের। সত্যিই ওই এলাকার মাটির নীচে হীরক খণ্ড আছে কি-না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধাঁধাঁ।

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার খালাথি গ্রামে ঘটেছে এমনই ঘটনা। ওই গ্রামে রয়েছে একটি বিস্তৃত ফাঁকা মাঠ। সেই মাঠে সচরাচর মানুষের যাতায়াত নেই। মূলত গৃহপালিত পশুদেরই চারণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ওই এলাকা। সম্প্রতি সেখান থেকেই মাটি খুঁড়ে ওই অচেনা উজ্জ্বল পাথরের খোঁজ মেলে।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত লোক ওই পাথরের খোঁজে শহরে আসতে শুরু করেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন মাটি খোঁড়ার নানা যন্ত্রও। তাঁদের বিশ্বাস, ওই এলাকায় মাটির নীচে লুকিয়ে আছে হীরা। কিন্তু মাটি খুঁড়ে কোয়ার্টজ ছাড়া আর কিছুর সন্ধান মেলেনি এখনও।

কোয়ার্টজ হলো মূলত একটি রাসায়নিক যৌগ। যা একটি অংশ সিলিকন এবং দুটি অংশ অক্সিজেনের সমন্বিত। এটি সিলিকন ডাই অক্সাইড (co2)। এটি ভূপৃষ্ঠে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ হিসেবে এবং এর অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলো এটিকে সবচেয়ে দরকারী প্রাকৃতিক পদার্থ হিসাবে উপস্থাপন করে।

মূলত আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকারের সংখ্যা দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটির বেশির ভাগ পরিবারই দরিদ্র সীমার নীচে। সে কারণেই এই আবিষ্কারের কথা জানতে পেরে বহু মানুষ ছুটে গিয়েছেন ওই এলাকায়। তাঁদের অনেকেই উদ্ধার করেছেন নানা রকমের পাথর। ওই অঞ্চলে ঘাঁটি ফেলে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেছে একাধিক হীরা উত্তোলক সংস্থাও।

কিন্তু সত্যিই কী সেখানে হিরে পাওয়া গেছে? বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূতত্ত্ববিদদের একটি দল পাঠানো হয়েছে সেখানে। যত দ্রুত সম্ভব ওই এলাকা খালি করার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তার পরই সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে পারবেন বিশেষজ্ঞরা। উদ্ধার হওয়া পাথরগুলো হীরারই ভিন্ন রূপ কি না, তা জানা যাবে শীঘ্রই।

যদিও বিষয়টি বেশ উদ্বেগের। তার ওপর চলমান করোনাকালে এতো লোকের জমায়েতও উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রশাসনের। কেননা, দক্ষিণ আফ্রিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩ হাজার ৫৭৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪৯ জনের। যা নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লাখ ১০ হাজার ১৬৪ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৮ হাজার ৫৯০ জনের।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

হিরক খণ্ডের লোভে মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে হুড়মুড়িয়ে ছুটছেন হাজারো মানুষ

Update Time : ০৮:২৩:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুন ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে কাকতালীয়ভাবে এক পশুপালকের হাতে পড়েছিল অচেনা এক পাথর। পাথরটি কী- তা সে জানতো না। তবে এ রকম পাথর আগে কখনও দেখেনি সে। উজ্জ্বল, সাদা, সূর্যের আলো পড়লে যেন জ্যোতি ঠিকরে পড়ছে তার চারপাশ থেকে। ঠিক যেন হীরক খণ্ড!

ওই পশুপালকের এই আবিষ্কারের কথা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় আরেক কাণ্ড! বড়লোক থেকে শুরু করে মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে হুড়মুড়িয়ে সেই লক্ষ্যে ছুটছেন সব ধরণের লোকজন।

শত শত মানুষের এই হুল্লোড় নিমেষে নজর টেনেছে সারা বিশ্বের। সত্যিই ওই এলাকার মাটির নীচে হীরক খণ্ড আছে কি-না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধাঁধাঁ।

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার খালাথি গ্রামে ঘটেছে এমনই ঘটনা। ওই গ্রামে রয়েছে একটি বিস্তৃত ফাঁকা মাঠ। সেই মাঠে সচরাচর মানুষের যাতায়াত নেই। মূলত গৃহপালিত পশুদেরই চারণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ওই এলাকা। সম্প্রতি সেখান থেকেই মাটি খুঁড়ে ওই অচেনা উজ্জ্বল পাথরের খোঁজ মেলে।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত লোক ওই পাথরের খোঁজে শহরে আসতে শুরু করেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন মাটি খোঁড়ার নানা যন্ত্রও। তাঁদের বিশ্বাস, ওই এলাকায় মাটির নীচে লুকিয়ে আছে হীরা। কিন্তু মাটি খুঁড়ে কোয়ার্টজ ছাড়া আর কিছুর সন্ধান মেলেনি এখনও।

কোয়ার্টজ হলো মূলত একটি রাসায়নিক যৌগ। যা একটি অংশ সিলিকন এবং দুটি অংশ অক্সিজেনের সমন্বিত। এটি সিলিকন ডাই অক্সাইড (co2)। এটি ভূপৃষ্ঠে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ হিসেবে এবং এর অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলো এটিকে সবচেয়ে দরকারী প্রাকৃতিক পদার্থ হিসাবে উপস্থাপন করে।

মূলত আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকারের সংখ্যা দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটির বেশির ভাগ পরিবারই দরিদ্র সীমার নীচে। সে কারণেই এই আবিষ্কারের কথা জানতে পেরে বহু মানুষ ছুটে গিয়েছেন ওই এলাকায়। তাঁদের অনেকেই উদ্ধার করেছেন নানা রকমের পাথর। ওই অঞ্চলে ঘাঁটি ফেলে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেছে একাধিক হীরা উত্তোলক সংস্থাও।

কিন্তু সত্যিই কী সেখানে হিরে পাওয়া গেছে? বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূতত্ত্ববিদদের একটি দল পাঠানো হয়েছে সেখানে। যত দ্রুত সম্ভব ওই এলাকা খালি করার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তার পরই সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে পারবেন বিশেষজ্ঞরা। উদ্ধার হওয়া পাথরগুলো হীরারই ভিন্ন রূপ কি না, তা জানা যাবে শীঘ্রই।

যদিও বিষয়টি বেশ উদ্বেগের। তার ওপর চলমান করোনাকালে এতো লোকের জমায়েতও উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রশাসনের। কেননা, দক্ষিণ আফ্রিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩ হাজার ৫৭৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪৯ জনের। যা নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লাখ ১০ হাজার ১৬৪ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৮ হাজার ৫৯০ জনের।