কথায় বলে- ক্যাচ ধরো, ম্যাচ জেতো। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচটা পাখির মতোই শরীর ছুড়ে দিয়ে ধরলেন ঈশান কিষাণ। আর ওই ক্যাচটাই হয়তো ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল। হায়দরাবাদও ম্যাচ হারলো ৩৪ রানে।
ওয়ার্নারকে তখন রীতিমতো বিপজ্জনক দেখাচ্ছিল। তিনি ক্রিজে থাকা মানেই ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া। মুম্বাইয়ের ২০৮ রানও তুলে দিতে পারে হায়দরাবাদ, এমন সম্ভাবনা বাড়ছিল। ঠিক সেই সময়েই প্যাটিনসনের বলে ওয়ার্নারের (৪৪ বলে ৬০) ক্যাচটা ধরেন ঈশান কিষাণ। ওয়ার্নার ফিরতেই হায়দরাবাদও ম্যাচ থেকে হারিয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত মুম্বাইয়ের ২০৮ রানের জবাবে ওয়ার্নারের দল করলো সাত উইকেটে ১৭৪ রান।
শারজার মাঠটি ছোট। আগের ম্যাচগুলোয় এই মাঠে অনেক রান হয়েছে। গতরাতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালস করেছিল ২২৮ রান। এবারের টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোর এটাই। আজ রোববার সেই একই মাঠে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স করলো ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ২০৮ রান।
এ দিন টস জিতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতেই ধাক্কা খায় চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। সন্দীপ শর্মার বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রোহিত (৬)। মুম্বাই অধিনায়ক দলের স্তম্ভ। তাঁর মতো ব্যাটসম্যানের উইকেট শুরুতে হারালে চাপে পড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
কুইন্টন ডি কক ও সূর্যকুমার যাদব সেই চাপ কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। তৃতীয় উইকেটে সূর্যকুমার ও কক ৪২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। যাদব সহজাত ব্যাটিং করছিলেন। ১৮ বলে ২৭ রান করে সিদ্ধার্থ কলের বলে আউট হন। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল ছ’টি বাউন্ডারি দিয়ে।
সূর্যকুমার আউট হওয়ার পরে ডি কক দলের ইনিংস গোছানোর কাজ শুরু করেন। তিনি ও ঈশান কিষাণ জুটিতে ৭৮ রান জোড়েন। রশিদ খান জুটি ভাঙেন। কুইন্টন ডি কককে (৩৯ বলে ৬৭) গুগলিতে বোকা বানান আফগান স্পিনার। ককের ক্যাচটা ধরেন রশিদ খান নিজেই। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা ঈশান কিষাণ ২৩ বলে ৩১ রানে আউট হন। দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন মণীশ পাণ্ডে।
হার্দিক পাণ্ডিয়াকে (১৯ বলে ২৮) দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড করেন সিদ্ধার্থ কল। শেষের দিকে কাইরন পোলার্ড (১৩ বলে ২৫) ও ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার (৪ বলে ২০) মারকুটে ব্যাটিংয়ের সুবাদে দুশো অতিক্রম করে মুম্বাই। ক্রুনালের ওই ৪ বলে ২০ রান যে হায়দরাবাদের কাজটা আরও কঠিন করে দেয় তাতে সন্দেহ নেই।
যাইহোক জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিলেন হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টো। বাউণ্ডারি মেরে শুরু করা মুম্বাইয়ের বাঁহাতি বোলার ট্রেন্ট বোল্টের বলেই ফেরেন বেয়ারস্টো। তার আগে অবশ্য ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান ১৫ বলে ২৫ রান করেন। হায়দরাবাদের রান তখন এক উইকেটে ৩৪। এর পরে ওয়ার্নার ও মণীশ পাণ্ডে ৬০ রান জোড়েন। ১৯ বলে ৩০ রান করে আউট হন মণীশ। কেন উইলিয়ামসনের কাছ থেকে দলের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু কিউয়ি অধিনায়ক (৩) এদিন ব্যর্থ হন।
আর আগের ম্যাচের নায়ক প্রিয়ম গার্গ (৮) ফুলটস বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন রাহুল চাহারের হাতে। শেষ ২ ওভারে হায়দরাবাদের জেতার জন্য দরকার ছিল ৪৭ রান। যশপ্রীত বুমরাহ, পোলার্ডের মতো অভিজ্ঞ বোলারদের সামলে এই রান তোলা খুবই কঠিন ছিল হায়দরাবাদের পক্ষে।
মুম্বাই দলে আসলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। হায়দরাবাদ দলে যা তুলনামূলক কম। মূলত এই অভিজ্ঞতার অভাবেই ম্যাচটা হারতে হলো ওয়ার্নারদের। পাঁচ ম্যাচে মাত্র ২ জয় নিয়ে ছয়ে অবস্থান দলটির। অন্যদিকে সমান সংখ্যক ম্যাচে তিন জয়ে শীর্ষে রোহিতের মুম্বাই।