Dhaka ১২:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামলার আগেই পাকিস্তানকে জানায় নয়াদিল্লি, ভারতে চলছে তোলপাড়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১৬:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • ৩১ Time View

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছেন ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর আগে পাকিস্তানকে অবহিত করেন তারা। তার এ ‘স্বীকারোক্তির’ পর ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, হামলার আগে পাকিস্তানকে সবকিছু জানিয়ে দিয়ে ভারতের নিরাপত্তা ও সেনাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, আগে জানানোর কারণে পাকিস্তান কয়টা বিমান ধ্বংস করেছে।

এক্সে তিনি লিখেছেন, “হামলার আগে পাকিস্তানকে জানানো ছিল অপরাধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন ভারত সরকার এটি করেছে। কে এটির অনুমোদন দিয়েছেন। এর কারণে আমাদের বিমানবাহিনী কতগুলো বিমান হারিয়েছে?”

রাহুল গান্ধী জয়শঙ্করের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেখানে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে’ হামলার আগে পাকিস্তানকে অবহিত করা হয়। তিনি বলেন, “অপারেশনের শুরুতে, আমরা পাকিস্তানকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলি, ‘আমরা সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছি এবং আমরা পাক সেনাদের কিছু হামলা চালাব না। এতে পাক সেনাদের দূরে এবং এতে জড়িত না হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা আমাদের এই ভালো পরামর্শ না নেওয়াকে বেঁছে নেয়।”

তবে ভারতের সরকারি প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) দাবি করেছে, জয়শঙ্কর পাকিস্তানকে হামলার আগে হামলা সম্পর্কে জানানো হয়েছে, এমন কিছু বলেননি। তার কথা ভুলভাবে প্রচারিত হচ্ছে।

তবে ভিডিওতে জয়শঙ্করকে স্পষ্টভাবে বলতে শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানকে তারা এ ব্যাপারে আগেই জানিয়েছেন। এছাড়া ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেনি।

নয়াদিল্লি ভিত্তিক আম আদমি পার্টিও এ বিষয়টির সমালোচনা করেছে। দলটির নেতা ও রাজ্যসভার এমপি সঞ্জয় সিং বলেছেন, এটি ছিল দেশদ্রোহিতা। তিনি বলেন, “যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে বলেন হামলার আগে পাকিস্তানকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এটি ভারত এবং আমাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেঈমানির সামিল। পাকিস্তানকে আগে এ ব্যাপারে জানানো ছিল অভূতপূর্ব। এটি ক্ষমার অযোগ্য।”

তিনি আরও বলেন, “এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উত্তর দিতে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কতটা সত্যি বলছেন। আর আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে দাবি করেছেন সেগুলোর সত্যতা কতটা। কেন পাকিস্তানকে আগে বলা হলো। এটি কি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা ছিল। ভারতের মানুষের এ ব্যাপারে জানার অধিকার আছে। মোদি সরকারকে উত্তর দিতে হবে। তারা কি সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বেঈমানি এবং আমাদের নিরাপত্তাকে অবমূল্যায়ন করেছে কি না। এরপর বিরোধী দল সাধারণ মানুষকে জানাবে এবং এরসঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

হামলার আগেই পাকিস্তানকে জানায় নয়াদিল্লি, ভারতে চলছে তোলপাড়

Update Time : ০৩:১৬:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছেন ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর আগে পাকিস্তানকে অবহিত করেন তারা। তার এ ‘স্বীকারোক্তির’ পর ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, হামলার আগে পাকিস্তানকে সবকিছু জানিয়ে দিয়ে ভারতের নিরাপত্তা ও সেনাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, আগে জানানোর কারণে পাকিস্তান কয়টা বিমান ধ্বংস করেছে।

এক্সে তিনি লিখেছেন, “হামলার আগে পাকিস্তানকে জানানো ছিল অপরাধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন ভারত সরকার এটি করেছে। কে এটির অনুমোদন দিয়েছেন। এর কারণে আমাদের বিমানবাহিনী কতগুলো বিমান হারিয়েছে?”

রাহুল গান্ধী জয়শঙ্করের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেখানে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে’ হামলার আগে পাকিস্তানকে অবহিত করা হয়। তিনি বলেন, “অপারেশনের শুরুতে, আমরা পাকিস্তানকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলি, ‘আমরা সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছি এবং আমরা পাক সেনাদের কিছু হামলা চালাব না। এতে পাক সেনাদের দূরে এবং এতে জড়িত না হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা আমাদের এই ভালো পরামর্শ না নেওয়াকে বেঁছে নেয়।”

তবে ভারতের সরকারি প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) দাবি করেছে, জয়শঙ্কর পাকিস্তানকে হামলার আগে হামলা সম্পর্কে জানানো হয়েছে, এমন কিছু বলেননি। তার কথা ভুলভাবে প্রচারিত হচ্ছে।

তবে ভিডিওতে জয়শঙ্করকে স্পষ্টভাবে বলতে শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানকে তারা এ ব্যাপারে আগেই জানিয়েছেন। এছাড়া ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেনি।

নয়াদিল্লি ভিত্তিক আম আদমি পার্টিও এ বিষয়টির সমালোচনা করেছে। দলটির নেতা ও রাজ্যসভার এমপি সঞ্জয় সিং বলেছেন, এটি ছিল দেশদ্রোহিতা। তিনি বলেন, “যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে বলেন হামলার আগে পাকিস্তানকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এটি ভারত এবং আমাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেঈমানির সামিল। পাকিস্তানকে আগে এ ব্যাপারে জানানো ছিল অভূতপূর্ব। এটি ক্ষমার অযোগ্য।”

তিনি আরও বলেন, “এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উত্তর দিতে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কতটা সত্যি বলছেন। আর আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে দাবি করেছেন সেগুলোর সত্যতা কতটা। কেন পাকিস্তানকে আগে বলা হলো। এটি কি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা ছিল। ভারতের মানুষের এ ব্যাপারে জানার অধিকার আছে। মোদি সরকারকে উত্তর দিতে হবে। তারা কি সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বেঈমানি এবং আমাদের নিরাপত্তাকে অবমূল্যায়ন করেছে কি না। এরপর বিরোধী দল সাধারণ মানুষকে জানাবে এবং এরসঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করবে।”