ক্রিড়া ডেস্ক :

দিনের হাই ভোল্টেজ ম্যাচ আর্জেন্টিনা বনাম উরুগুয়ে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হয়।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুই ম্যাচ, কোপা আমেরিকার মিশনে নেমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ড্র, গত তিন সপ্তাহে টানা তিন ড্রয়ের পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখল আর্জেন্টিনা। উরুগুয়েকে হারাতেই হবে, এমন সময়ে টানাটানির এক জয়ে ড্রয়ের চক্র থেকে বেরিয়ে এলো লিওনেল মেসির দল।

শনিবার ভোরে ব্রাসিলিয়ায় গারিঞ্জা স্টেডিয়ামে গ্রুপ ‘বি’র ম্যাচে উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।

উরুগুয়ের বিপক্ষে গোল করার পর উল্লাসিত আর্জেন্টিনা

কোচ লিওনেল স্কালোনির মুখে হাসি ফোটানো গোলটি করেছেন গুইডো রদ্রিগুয়েজ, বল উড়ে এসেছিল মেসির দারুণ এক বাঁকানো কিক থেকে।

দরকারি জয়টি দিয়ে গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে আর্জেন্টিনা। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট মেসিদের।

কোপার ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল উরুগুয়ে শিরোপা জিতেছে ১৫টি। এই আসরে তারা প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল আজকেই। কিন্তু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলতে নেমে সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। বরং প্রান্ত দিয়ে তাদের পরীক্ষা নিয়েছেন আকুইনা ও নিকোলাস গনসালেজ। অবশ্য সর্বশেষ ৪ ম্যাচেও ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না উরুগুয়ের। দুই দলের লড়াইয়ে তারা জয় পায়নি একটিও। মেসিদের বিপক্ষে তাদের সর্বশেষ জয়টা ২০১৩ সালের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে।

মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে চিলির সঙ্গে ১-১ ড্র করা দলটি থেকে চার পরিবর্তন আনেন আর্জেন্টিনা কোচ স্ক্যালোনি। মন্তিয়েল, মার্তিনেজ ও তাগলিয়াফিকোর বদলে ডিফেন্সে আসেন আকুইনা, রোমেরো ও মলিনা। পেরেদেসের বদলে মিডফিল্ডে আসেন গুইদো রদ্রিগেজ। এই পরিবর্তন কাজে দিয়েছে শেষ পর্যন্ত। তুলনামূলক রক্ষণটা ছিল গোছানো। এর ফলে সুয়ারেজ-কাভানিরা সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।

বরং শুরু থেকে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলতে থাকে মেসির দল। ৪ মিনিটে সুযোগ তৈরি করলেও আকুইনা বল মেরে বসেন সরাসরি গোলকিপারের হাতে।

দারুণ কিছু সুযোগ তৈরির পর ১৩ মিনিটে আর হতাশ করেননি মেসি। তার বানিয়ে দেওয়া বলেই আসে প্রথম গোল। স্কোর করেন গুইদো রদ্রিগেজ। দি পলের ছোট করে নেওয়া কর্নার কিকে বল পান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তিনি বক্সের কাছে উরুগুয়ের খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দূরের পোস্ট বরাবর বাতাসে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন বল। হেড করে জালে বল পাঠাতে ভুল করেননি রদ্রিগেজ।

মেসি পুরো ম্যাচেই ঝলক দেখানোর চেষ্টা করেছেন। নেতৃত্ব দিয়ে বার বার স্বভাসিদ্ধ ভঙ্গিমায় আক্রমণে গিয়েছিলেন, না হলে সতীর্থদের দিয়ে চেষ্টা করিয়েছেন।

যেমনটি করেছিলেন ২৭ মিনিটে। কাউন্টার অ্যাটাকে বল নিয়ে দৌড় দিয়েছিলেন মেসি। বক্সের কাছে উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার পর বল তুলে দেন ডান প্রান্তে দৌড়ে আসে মোলিনার। কিন্তু আর্জেন্টাইন রাইট ব্যাকের দ্রুত গতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন উরুগুয়ে গোলকিপার। ৪৩ মিনিটে ফ্রি কিকের পর উরুগুয়ের গোলের সুযোগ তৈরি হলেও বল লক্ষ্যের বাইরে দিয়ে মেরে বসেন বেন্তাকুর।

পুরো ম্যাচে সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি সুয়ারেজ। ৭৫ মিনিটে পেনাল্টি এরিয়ার কাছে সতীর্থের ক্রস পেয়ে বাইসাইকেল কিক নিয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যের ওপর দিয়ে মেরে বসেন বল। এর পরেই সময় নষ্টের কারণে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক  মার্টিনেজ।

৮০ মিনিটে আবারও আক্রমণে ছিলেন মেসি। ৪ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের কাছে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সেখানেই ফেলে দেন ডিয়েগো গদিন। শেষ দিকে ব্যবধানে আর হেরফের না হওয়ায় ৩ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে মেসির দল।

এদিকে একই গ্রুপে দিনের প্রথম ম্যাচে জয়ে ফিরেছে চিলিও। বলিভিয়াকে তারা হারিয়েছে ১-০ গোলে। এর ফলে ‘বি’ গ্রুপে শীর্ষে থাকা দুটি দলেরই সমান ৪ পয়েন্ট।

আগামী মঙ্গলবার প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হবে লিওনেল মেসির দল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে