বছরজুড়ে সীমিত পরিমাণে গোস্ত খেলেও কোরবানির ঈদ এলে অনেকের গোস্ত খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর কোরবানির ঈদে গোস্ত বলতেই থাকে গরু, ছাগল, খাসি অথবা উটের মাংস। যেগুলো কিনা প্রাণীজ আমিষ বা রেড মিট। এই রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল থাকে যার কারণে অনেক ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা থাকে। তাই স্বাস্থ্যকর উপায়ে গোস্ত খাওয়ার ১১টি টিপস জেনে নেয়া যাক।

এক. আপনার শারীরিক পরিস্থিতি, বয়স এবং স্বাস্থ্য বুঝে গোস্ত পরিমিত হারে খেতে হবে। খাবারের পরিমাণের ওপর এই নিয়ন্ত্রণ রাখাটা সবার জন্যই জরুরি। চেষ্টা করুন তিন বেলা গোস্ত না খাওয়ার। রাতে রেড মিট এড়িয়ে চলাই ভাল।

দুই. কোরবানির গোস্ত বাড়িতে আসার সাথে সাথে সেটা ভালভাবে ধুয়ে, রক্ত পরিষ্কার করে রান্না করতে হবে অথবা ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় গোস্ত বেশিক্ষণ বাইরে রাখলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। তবে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে সঠিকভাবে গোস্ত জ্বাল দিয়ে রাখতে হবে এবং ছয় ঘণ্টা পরপর সেটা পুনরায় জ্বাল দিতে হবে।

তিন. রান্নার আগেই গোস্তের চর্বি কেটে আলাদা করে ফেলুন। এছাড়া গোস্তের ভেতরে যে চর্বি আছে সেটা গলাতে গরম পানিতে গোস্ত সেদ্ধ করে নিতে পারেন।

চার. রান্নার সময় গোস্তের টুকরোগুলো ছোট করে কাটলে সেইসঙ্গে গোস্তটি টক দই, লেবুর রস, সিরকা, পেঁপে বাটা দিয়ে মেখে রাখলে একদিকে যেমন কম সময়ে মাংস সেদ্ধ হয়, তেমনি চর্বির ক্ষতিকর প্রভাব অনেকটাই কাটানো যায়।

পাঁচ. গোস্ত অল্প তেলে রান্না করতে হবে। তেলটি অলিভ অয়েল হলে সবচেয়ে ভাল।

ছয়. গোস্ত উচ্চতাপে ভালভাবে সেদ্ধ করে খেতে হবে। সবচেয়ে ভাল আগুনে ঝলসে খেতে পারলে। এতে জীবাণুর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না। আধা সেদ্ধ গোস্ত বা স্টেক পরিহার করাই ভাল।

সাত. একদিনে কয়েক পদের রেড মিট রান্না না করে গোস্তের পাশাপাশি প্রতি বেলায় যথেষ্ট সবজি অথবা সালাদ রাখুন। কেননা সবজিতে থাকা ফাইবার গোস্তের চর্বি হজমে সাহায্য করে। এছাড়া সবজি থাকার কারণে গোস্ত খাওয়ার পরিমাণও কিছুটা কমানো যায়।

আট. কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি, সরবত, ফলের রস, ইসবগুলের ভুষি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে।

নয়. গরুর মগজ, কলিজা সেইসঙ্গে গোস্তের ঝোল বা স্টকে সবচেয়ে বেশি চর্বি থাকে, তাই খাওয়ার সময় সেগুলো পরিমিত খাওয়াই ভাল।

দশ. গোস্তের তৈরি ভাজা আইটেমে তেল বেশি মনে হলে খাওয়ার আগে টিস্যুতে বাড়তি তেলটা শুষে নিতে পারেন।

এগারো. কোরবানির ঈদে যেহেতু গোস্ত বেশি খাওয়া হয় তাই অতিরিক্ত ক্যালরি পোড়াতে প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। তবে খাওয়ার পরপরই সেটা করতে যাবেন না। এতে ফলাফল উল্টো হতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গোস্ত রান্না করে পরিমাণ বজায় রেখে খেলে যেকোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে সুস্থ থাকা সম্ভব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে