Dhaka ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্কটল্যান্ডের কাছে অসহায় বাঘের আত্নসমর্পণ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:২৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১
  • 52

ক্রীড়া ডেস্ক :

এ যেনো করুন পরাজয়। অসহায় বাঘের দুর্বল প্রকাশ। স্কটল্যান্ডের দেয়া মাত্র ১৪১ রানের লক্ষ্য টপকাতে গিয়ে শুরু থেকেই পিছু হটা মনোভাবে ছিল টাইগাররা। কথায় আছে টি-টোয়েন্টিতে কোনো দলই ছোট নয়।

আর সেই কথাটা আবারও প্রমাণ করলো স্কটল্যান্ড। ফলে বিশ্বকাপে হার দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের মিশন।

এদিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আসরের প্রথম পর্বে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে রোববার (১৭ অক্টোবর) ওমানের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা শুরু হয়।

প্রথমে ব্যাট করা স্কটিশরা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে। জবাবে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশ। মাত্র ৬ রানের হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল মাহমুদউল্লাহ বাহিনীরা।

১৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। দলীয় দ্বিতীয় ওবার ও ৮ রানে সৌম্য সরকার জস ডেভির বলে জর্জ মুন্সেকে ব্যক্তিগত ৫ রানে ক্যাচ দেন। ১০ রান পর ব্র্যাড হোয়েলের বলে সেই মুন্সেকেই ক্যাচ দেন লিটন। তিনিও ৫ রান করেন।

শুরুতে দুই উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে আসা সাকিব আল হাসান স্বস্তি নিয়ে ব্যাট করতে পারছিলেন না। তবে মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টায় ছিলেন। অবশেষে বড় শট খেলতে গিয়ে বিদায় নিলেন।

ক্রিস গ্রিভসের ১২ ওভারের করা প্রথম বলে বাউন্ডারিতে ম্যাকলিউডকে ক্যাচ দেন। ২৮ বলে একটি চারে ২০ রান করেন তিনি। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুশফিকের সঙ্গে ৪৭ রান করেন। সাকিবের পর দ্রুত বিদায় নেন মুশফিকও সেই গ্রিভসের পরের ওভারে স্কুপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। এই ডানহাতি ৩৬ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৮ রান করেন।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৩২ রান যোগ করে বিদায় নেন আফিফ হোসেন। ব্যক্তিগত ১৮ রানে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। ১২ বলে ২টি চার হাঁকান তিনি। ১৯তম ওভারে নুরুল হাসান সোহান ২ রান করে আউট হন। ব্র্যাড হোয়েলের একই ওভারে পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ আউট হলে বাংলাদেশের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। শেষদিকে মেহেদী হাসান ৫ বলে ১৩ করে হারের ব্যবধানটাই কেবল কমান।

৩ উইকেট পাওয়া ব্র্যাড হোয়েল স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার। গ্রিভস পান ২ উইকেট। ব্যাটে বলে অসাধারণ করা এই গ্রিভসই ম্যাচ সেরা হন।

এর আগে বেশ ধারালো বোলিংয়ে শুরু করা বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলীয় তৃতীয় ওভারে স্কটল্যান্ড অধিনায়ক কাইল কোয়েটজারকে শূন্য রানে সরাসরি বোল্ড করেন সাইফ।

নিজেদের ৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর স্কটল্যান্ড দারুণ প্রতিরোধের গড়ে তুলে। তবে প্রথম ওভারে এসেই জোড়া আঘাত করেন মেহেদী হাসান। দলীয় অষ্টম ওভারে এসে ১১ রানে থাকা ম্যাথিউ ক্রসকে এলবির ফাঁদে ফেলেন। একই ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার জর্জ মুন্সেকে সরাসরি বোল্ড করেন। মুন্সে ২৩ বলে ২টি চার ও সমান ছক্কায় ২৯ রান করেন।

মেহেদী হাসান ও সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে এক সময় কোনঠাসা হয়ে পড়ে স্কটল্যান্ড। মেহেদী এসে এক ওভারে জোড়া আঘাতের পর সাকিবও এক ওভারে জোড়া আঘাত করেন। এরপর মেহেদী এসে প্রতিপক্ষের আরও একটি উইকেট তুলে নেন।

সাকিব ১১তম ওভারে এসে রিচি বেরিংটনকে ও মাইকেল লিস্ককে বিদাং করেন। পরের ওভারে কালাম ম্যাকলিওডকে ফেরান মেহেদী। এদের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। ফলে স্কটিশদের ৪৫ রানে ২ উইকেট থেকে ৮ রানের ব্যবধানে আরও ৪টি উইকেটের পতন হয়।

৬ উইকেট হারিয়েও অবশ্য হেলে পড়েনি স্কটল্যান্ড। দলীয় ৫৩ রানেই যেখানেই প্রথম ৬ উইকেট হারায় তারা, কিন্তু সপ্তম উইকেট জুটিতেই দুই শেষের ব্যাটার ৫১ রান তুলে নেন। এদের এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। মার্ক ওয়াটকে ব্যক্তিগত ২২ রানে সৌম্য সরকারের ক্যাচে ফেরান তিনি। ১৭ বলে ২টি চারে ২২ করেন ওয়াট।

দলীয় শেষ ওভারে বল করতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান পর পর দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন। দ্বিতীয় বলে স্কটিশদের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোর করা ক্রিস গ্রিভসকে ফেরান লংয়ে থাকা সাকিবের ক্যাচে। এই ব্যাটার ২৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন। পরের বলেই জস ডেভিকে সরাসরি বোল্ড করেন।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে মেহেদী ৩টি উইকেট লাভ করেন। সাকিব ও মোস্তাফিজ ২টি করে উইকেট ভাগ করে নেন। এছাড়া তাসকিন ও সাইফ একটি করে উইকেট পান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

স্কটল্যান্ডের কাছে অসহায় বাঘের আত্নসমর্পণ

Update Time : ০২:২৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১

ক্রীড়া ডেস্ক :

এ যেনো করুন পরাজয়। অসহায় বাঘের দুর্বল প্রকাশ। স্কটল্যান্ডের দেয়া মাত্র ১৪১ রানের লক্ষ্য টপকাতে গিয়ে শুরু থেকেই পিছু হটা মনোভাবে ছিল টাইগাররা। কথায় আছে টি-টোয়েন্টিতে কোনো দলই ছোট নয়।

আর সেই কথাটা আবারও প্রমাণ করলো স্কটল্যান্ড। ফলে বিশ্বকাপে হার দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের মিশন।

এদিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আসরের প্রথম পর্বে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে রোববার (১৭ অক্টোবর) ওমানের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা শুরু হয়।

প্রথমে ব্যাট করা স্কটিশরা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে। জবাবে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশ। মাত্র ৬ রানের হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল মাহমুদউল্লাহ বাহিনীরা।

১৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। দলীয় দ্বিতীয় ওবার ও ৮ রানে সৌম্য সরকার জস ডেভির বলে জর্জ মুন্সেকে ব্যক্তিগত ৫ রানে ক্যাচ দেন। ১০ রান পর ব্র্যাড হোয়েলের বলে সেই মুন্সেকেই ক্যাচ দেন লিটন। তিনিও ৫ রান করেন।

শুরুতে দুই উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে আসা সাকিব আল হাসান স্বস্তি নিয়ে ব্যাট করতে পারছিলেন না। তবে মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টায় ছিলেন। অবশেষে বড় শট খেলতে গিয়ে বিদায় নিলেন।

ক্রিস গ্রিভসের ১২ ওভারের করা প্রথম বলে বাউন্ডারিতে ম্যাকলিউডকে ক্যাচ দেন। ২৮ বলে একটি চারে ২০ রান করেন তিনি। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুশফিকের সঙ্গে ৪৭ রান করেন। সাকিবের পর দ্রুত বিদায় নেন মুশফিকও সেই গ্রিভসের পরের ওভারে স্কুপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। এই ডানহাতি ৩৬ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৮ রান করেন।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৩২ রান যোগ করে বিদায় নেন আফিফ হোসেন। ব্যক্তিগত ১৮ রানে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। ১২ বলে ২টি চার হাঁকান তিনি। ১৯তম ওভারে নুরুল হাসান সোহান ২ রান করে আউট হন। ব্র্যাড হোয়েলের একই ওভারে পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ আউট হলে বাংলাদেশের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। শেষদিকে মেহেদী হাসান ৫ বলে ১৩ করে হারের ব্যবধানটাই কেবল কমান।

৩ উইকেট পাওয়া ব্র্যাড হোয়েল স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার। গ্রিভস পান ২ উইকেট। ব্যাটে বলে অসাধারণ করা এই গ্রিভসই ম্যাচ সেরা হন।

এর আগে বেশ ধারালো বোলিংয়ে শুরু করা বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলীয় তৃতীয় ওভারে স্কটল্যান্ড অধিনায়ক কাইল কোয়েটজারকে শূন্য রানে সরাসরি বোল্ড করেন সাইফ।

নিজেদের ৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর স্কটল্যান্ড দারুণ প্রতিরোধের গড়ে তুলে। তবে প্রথম ওভারে এসেই জোড়া আঘাত করেন মেহেদী হাসান। দলীয় অষ্টম ওভারে এসে ১১ রানে থাকা ম্যাথিউ ক্রসকে এলবির ফাঁদে ফেলেন। একই ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার জর্জ মুন্সেকে সরাসরি বোল্ড করেন। মুন্সে ২৩ বলে ২টি চার ও সমান ছক্কায় ২৯ রান করেন।

মেহেদী হাসান ও সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে এক সময় কোনঠাসা হয়ে পড়ে স্কটল্যান্ড। মেহেদী এসে এক ওভারে জোড়া আঘাতের পর সাকিবও এক ওভারে জোড়া আঘাত করেন। এরপর মেহেদী এসে প্রতিপক্ষের আরও একটি উইকেট তুলে নেন।

সাকিব ১১তম ওভারে এসে রিচি বেরিংটনকে ও মাইকেল লিস্ককে বিদাং করেন। পরের ওভারে কালাম ম্যাকলিওডকে ফেরান মেহেদী। এদের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। ফলে স্কটিশদের ৪৫ রানে ২ উইকেট থেকে ৮ রানের ব্যবধানে আরও ৪টি উইকেটের পতন হয়।

৬ উইকেট হারিয়েও অবশ্য হেলে পড়েনি স্কটল্যান্ড। দলীয় ৫৩ রানেই যেখানেই প্রথম ৬ উইকেট হারায় তারা, কিন্তু সপ্তম উইকেট জুটিতেই দুই শেষের ব্যাটার ৫১ রান তুলে নেন। এদের এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। মার্ক ওয়াটকে ব্যক্তিগত ২২ রানে সৌম্য সরকারের ক্যাচে ফেরান তিনি। ১৭ বলে ২টি চারে ২২ করেন ওয়াট।

দলীয় শেষ ওভারে বল করতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান পর পর দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন। দ্বিতীয় বলে স্কটিশদের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোর করা ক্রিস গ্রিভসকে ফেরান লংয়ে থাকা সাকিবের ক্যাচে। এই ব্যাটার ২৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন। পরের বলেই জস ডেভিকে সরাসরি বোল্ড করেন।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে মেহেদী ৩টি উইকেট লাভ করেন। সাকিব ও মোস্তাফিজ ২টি করে উইকেট ভাগ করে নেন। এছাড়া তাসকিন ও সাইফ একটি করে উইকেট পান।