বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যেও পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ সৌদি আরবে উদযাপিত হল ঈদুল আযহা। সেই সাথে, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপসহ বিশ্বের একাধিক দেশেও ঈদুল আযহা উদযাপন করা হচ্ছে।

শুকবার (৩১ জুলাই) সকালে হাজিরা মুজদালিফা থেকে ফিরে মিনায় পশু কোরবানিসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজের পর ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করেন মুসল্লিরা। সেই সাথে মক্কা ও মদিনায় সীমিত আকারে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে অন্যান্য বছরের মতো এবার খোলা মাঠে কোন ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি জানিয়েছিল স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

হজব্রত পালনকারী হাজিরা পবিত্র মুজদালিফা ময়দানে খোলা আকাশের নিচে সারারাত এবাদত বন্দেগীর পর সকালে ফজরের নামাজ আদায় করে মিনায় পৌঁছেন। প্রথম দিন বড় শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ করে পশু কোরবানি দিয়ে মাথা মুন্ডন করে শেষ করছেন হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। পর্যায়ক্রমে আরও তিন দিন মিনায় অবস্থান করে তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন আগত হাজিরা।

নামায শেষে আবারও মিনায় গিয়ে বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে, গোসল করে ঈদ উদযাপন করবেন হাজিরা। তবে অন্যান্য বছরের থেকে এবারের হজ আনুষ্ঠানিকতার চিত্র ভিন্ন। করোনার বৈশ্বিক মহামারির কারণে এ বছর শুধু সৌদি আরবের নির্বাচিত কিছু মুসল্লি হজের সুযোগ পান।

মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যে সীমিত পরিসরে হজে অংশগ্রহণ করা হাজীদের মধ্যে কোন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ অথবা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, এ ধরনের কোন খবর পাওয়া যায়নি। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে হাজিরা সুষ্ঠুভাবে হজ পালন করছেন বলে জানা গেছে।

তবে অবৈধ বা অনুমতিপত্র ছাড়া হজে অংশগ্রহণ করার কারণে কয়েকশো স্থানীয় এবং প্রবাসীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটককৃত প্রবাসীরা কোন দেশের নাগরিক তা জানা যায়নি।

মক্কা বাংলাদেশ হজ মিশনের কাউন্সিলর হজ মো. মাসুদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে কত সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এবারের হজে অংশগ্রহণ করেছেন, অথবা অবৈধভাবে হজ পালন করার কারণে কত জনকে আটক করা হয়েছে হজ মিশনের কাছে এই ধরনের কোন তথ্য নেই বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

এবারের ঈদ ছিল প্রবাসীদের মাঝে ভিন্ন ইমেজ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে নামাজ শেষে পশু কোরবানি দিয়ে নিজেরা নিজেদের মতো করে ঈদের আনন্দটা উপভোগ করছে।

প্রবাসে পরিবার পরিজন নিয়ে যারা থাকেন তাদের আনন্দটা ছিল ভিন্ন। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছে । বিকেলে সমুদ্রের ধারে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে