Dhaka ০৪:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোমবার বিদায় নিচ্ছে স্কাইপ, এক প্রযুক্তি ইতিহাসের সমাপ্তি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৫৮:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • ১০ Time View

একটা সময় ভিডিও কলিংয়ের সমার্থক ছিল স্কাইপ। অফিস মিটিং থেকে শুরু করে দূর দেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করার একমাত্র ভরসা ছিল এই অ্যাপ। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তি আরও বহুদূর এগিয়েছে। সেই পরিবর্তনের তোড়ে অবশেষে দু’দশকের পথচলার পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কাইপ।
মাইক্রোসফটের ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকেই স্কাইপের পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি জগতের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে।

২০০৩ সালে স্কাইপের যাত্রা শুরু। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেই সময় ইন্টারনেটের গতি ধীর হলেও স্কাইপ ভিডিও ও ভয়েস কলের মাধ্যমে বিপ্লব ঘটায়।

২০১১ সালে স্কাইপ কিনে নেয় মাইক্রোসফট, প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। স্কাইপ তখন প্রতিদিন ব্যবহার করতেন প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। মাইক্রোসফট এরপর একাধিকবার অ্যাপটির ডিজাইন পরিবর্তন করে, নতুন ফিচার যেমন- স্কাইপ ক্লিপস ও এআই-ভিত্তিক কো-পাইলট যুক্ত করেও আগের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি।

স্কাইপের পতনের মূল কারণ ছিল যোগাযোগ প্রযুক্তিতে হঠাৎ পরিবর্তন। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, জুম, গুগল মিট—এসব প্ল্যাটফর্ম একদিকে যেমন সহজে ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে, অন্যদিকে দ্রুত উন্নত ফিচার এনে স্কাইপকে ছাপিয়ে গেছে।

মাইক্রোসফটেরই আরেক পরিষেবা টিমস এখন কর্পোরেট মিটিং ও অফিস কমিউনিকেশনের জনপ্রিয় মাধ্যম। ফলে ধীরে ধীরে স্কাইপ হয়ে পড়ে এক প্রকার অপ্রয়োজনীয়। শেষমেশ এই “প্রযুক্তি আইকন” বিদায়ের পথে।

স্কাইপ শুধু একটি অ্যাপ ছিল না। এটি ছিল দূরত্ব ঘোচানোর মাধ্যম। বিদেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা, দূরদর্শনের যুগে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ভিডিও আড্ডা, আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে ব্যবসার আলোচনা এই সবই স্কাইপের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছিল এক সময়।

বহু মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্কাইপের স্মৃতি। তাই এই বিদায় কেবল একটি অ্যাপের নয়, প্রযুক্তির একটি আবেগঘন যুগেরও অবসান।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, বর্তমান ব্যবহারকারীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। সকল চ্যাট, কনট্যাক্ট ও তথ্য মাইক্রোসফট টিমস-এ স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের তথ্য সেখানেই সংরক্ষণ করতে পারবেন।

প্রযুক্তির জগতে কিছু নাম ইতিহাস হয়ে যায়—স্কাইপ তারই একটি উদাহরণ। প্রায় ২২ বছরের ইতিহাস শেষে বিদায় নিচ্ছে এই অ্যাপ, রেখে যাচ্ছে স্মৃতিভরা যুগ, ডিজিটাল সংযোগের এক বৈপ্লবিক অধ্যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

সোমবার বিদায় নিচ্ছে স্কাইপ, এক প্রযুক্তি ইতিহাসের সমাপ্তি

Update Time : ০৫:৫৮:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

একটা সময় ভিডিও কলিংয়ের সমার্থক ছিল স্কাইপ। অফিস মিটিং থেকে শুরু করে দূর দেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করার একমাত্র ভরসা ছিল এই অ্যাপ। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তি আরও বহুদূর এগিয়েছে। সেই পরিবর্তনের তোড়ে অবশেষে দু’দশকের পথচলার পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কাইপ।
মাইক্রোসফটের ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকেই স্কাইপের পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি জগতের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে।

২০০৩ সালে স্কাইপের যাত্রা শুরু। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেই সময় ইন্টারনেটের গতি ধীর হলেও স্কাইপ ভিডিও ও ভয়েস কলের মাধ্যমে বিপ্লব ঘটায়।

২০১১ সালে স্কাইপ কিনে নেয় মাইক্রোসফট, প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। স্কাইপ তখন প্রতিদিন ব্যবহার করতেন প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। মাইক্রোসফট এরপর একাধিকবার অ্যাপটির ডিজাইন পরিবর্তন করে, নতুন ফিচার যেমন- স্কাইপ ক্লিপস ও এআই-ভিত্তিক কো-পাইলট যুক্ত করেও আগের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি।

স্কাইপের পতনের মূল কারণ ছিল যোগাযোগ প্রযুক্তিতে হঠাৎ পরিবর্তন। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, জুম, গুগল মিট—এসব প্ল্যাটফর্ম একদিকে যেমন সহজে ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে, অন্যদিকে দ্রুত উন্নত ফিচার এনে স্কাইপকে ছাপিয়ে গেছে।

মাইক্রোসফটেরই আরেক পরিষেবা টিমস এখন কর্পোরেট মিটিং ও অফিস কমিউনিকেশনের জনপ্রিয় মাধ্যম। ফলে ধীরে ধীরে স্কাইপ হয়ে পড়ে এক প্রকার অপ্রয়োজনীয়। শেষমেশ এই “প্রযুক্তি আইকন” বিদায়ের পথে।

স্কাইপ শুধু একটি অ্যাপ ছিল না। এটি ছিল দূরত্ব ঘোচানোর মাধ্যম। বিদেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা, দূরদর্শনের যুগে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ভিডিও আড্ডা, আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে ব্যবসার আলোচনা এই সবই স্কাইপের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছিল এক সময়।

বহু মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্কাইপের স্মৃতি। তাই এই বিদায় কেবল একটি অ্যাপের নয়, প্রযুক্তির একটি আবেগঘন যুগেরও অবসান।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, বর্তমান ব্যবহারকারীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। সকল চ্যাট, কনট্যাক্ট ও তথ্য মাইক্রোসফট টিমস-এ স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের তথ্য সেখানেই সংরক্ষণ করতে পারবেন।

প্রযুক্তির জগতে কিছু নাম ইতিহাস হয়ে যায়—স্কাইপ তারই একটি উদাহরণ। প্রায় ২২ বছরের ইতিহাস শেষে বিদায় নিচ্ছে এই অ্যাপ, রেখে যাচ্ছে স্মৃতিভরা যুগ, ডিজিটাল সংযোগের এক বৈপ্লবিক অধ্যায়।