রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। চলতি আইপিএলের দ্বিতীয় সুপার ওভার। যেখানে বাজিমাত করে দিল বিরাট কোহলির রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (আরসিবি)। পরিসংখ্যানে অনেক পিছিয়ে। অথচ সেই আরসিবিই টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে হারিয়ে দিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে।

শারজা নয় দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। বিশেষজ্ঞদের মতে যেখানে ১৭০/১৮০ রান মানে ম্যাচ জয়ের মতো স্কোর। অথচ সেই মাঠেই কিনা প্রতিপক্ষকে ২০১ রানের সামনে দাঁড় করিয়েও স্বস্তিতে থাকতে পারল না বিরাট কোহলি অ্যান্ড কোং।

সৌজন্যে মুম্বাইয়ের দুই ব্যাটসম্যানের অতিমানবীয় ইনিংস। একজন তরুণতুর্কি ইশান কিশান আর অন্যজন টি-টোয়েন্টিতে পিএইচডি করা কাইরন পোলার্ড। রোববার রাজস্থান বনাম পাঞ্জাবের অভাবনীয় ম্যাচের পর আজ সোমবার ফের আইপিএলের লেভেল সেট করে দিল আরসিবি বনাম মুম্বাই যুদ্ধ। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে যেখানে শেষ হাসি হাসলেন বিরাট কোহলি।

ম্যাচটা শুধুই রোহিত বনাম কোহলির অধিনায়ত্বের ছিল না। বরং আরও বেশি করে ছিল, এবি বনাম বোল্টের। কাইরন পোলার্ড বনাম নবদীপ সাইনির। তবে তারকা সমাবেশে খানিকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ঢুকে পড়ে লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছিলেন কিশান।

নিজের ব্যাট দিয়ে নতুন করে টি-টোয়েন্টির সংজ্ঞা রচনা করলেন তিনি। তবে একইসঙ্গে রয়ে গেল একটি রান না করতে পারার চাপা যন্ত্রণাও। ৫৮ বলে ৯৯ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়লেন। মুম্বাই ইনিংসের শেষ বলে চার হাঁকিয়ে তার অসমাপ্ত থাকা কাজটাই যেন করলেন পোলার্ড।

২৪ বলে ৬০ রান করে অপরাজিত থেকে ম্যাচ নিয়ে গেলেন সুপার ওভারে। যেখানে রোহিত নিজে না নেমে পাঠালেন হার্দিককে। সঙ্গী পোলার্ড। পোলার্ড আউট হওয়ার পর শেষ বলে আসেন তিনি। স্কোরবোর্ডে তুললেন মোটে ৭ রান। আরসিবির সামনে তখন জয়ের জন্য লক্ষ্য ৮ রান। বাউন্ডারি দিয়ে যার মধুর সমাপ্তি টানলেন বিরাট কোহলি নিজে।

টস জিতে রোহিত শর্মা প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন। কিন্তু বোলাররা ছাপ ফেলতে পারেননি। শুরুটা দারুণ করল আরসিবি। ওপেনিং জুটিতে ৮১ রানে তুলে নেন অ্যারোন ফিঞ্চ ও দেবদত্ত পাড্ডিকাল। তরুণ দেবদত্ত অভিষেক আইপিএলেই ইতিমধ্যে করে ফেললেন দুটি অর্ধশতরান। এদিন তার ব্যাট থেকে এল ৪০ বলে ৫৪ রান। ইনিংস সাজালেন ৫টি চার ও ২টি ছয় দিয়ে।

উল্টোদিকে অ্যারোন ফিঞ্চ করলেন ৩৫ বলে। সাতটি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা মেরেছেন অসি অধিনায়ক। বিরাট কোহলি আজও ব্যর্থ। মাত্র ৩ রান করলেন ১১ বলে। এরপর শুরু হল এবি ডি ভিলিয়ার্স শো। ২৪ বলে ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকলেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। চারটি চার ও সমসংখ্যক ছক্কা এল তার ব্যাট থেকে।

শেষ ওভারে শিবাম দুবের (‌১০ বলে অপরাজিত ২৭)‌ তিনটি ছক্কা বেঙ্গালুরুর রানকে ২০০ পার করে দিল। আরসিবি থামল ২০১/‌৩ রানে। ট্রেন্ট বোল্ট দুটি উইকেট পেলেন। একটি রাহুল চাহার। জেমস প্যাটিনসন, জসপ্রিত বুমরা ব্যর্থ।

জবাবে মুম্বাই থামল ৫ উইকেটে ২০১ রানে। ৭৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারালেও দলকে টেনে নিয়ে গেলেন ইশান কিশান ও কাইরন পোলার্ড। ৫৮ বলে ৯৯ করলেন কিশান। এক রানের জন্য শতরান হল হাতছাড়া। ২টি চার ও ৯টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। পোলার্ড ২৪ বলে করলেন অপরাজিত ৬০। তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কা মারলেন। বড় ব্যবধানে হারতে থাকা ম্যাচ সুপার ওভারে নিয়ে গেলেন কিশান-পোলার্ড।

তবে আরসিবি ফিল্ডিং এদিনও জঘন্য। একাধিক ক্যাচ পড়ল। না হলে ম্যাচ যেতো না সুপার ওভারে। রোহিত, ডি’‌কক, সূর্যকুমাররা এদিন ব্যর্থ। আরসিবির উদানা দুটি উইকেট পান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে