মোঃ এনামুল হক বাদশা,সিংড়া(নাটোর)প্রতিনিধিঃ

অতি বৃষ্টিপাত ও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নাটোরের সিংড়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারের অনেকে আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করছে। ইতোমধ্য প্রায় ৫০ টির মত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তৃত রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। পৌর এলাকার ৪ টি কেন্দ্রে শতাধিক পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের ৮ টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যায় আত্রাই, গুরনই, বারনই এবং নাগর নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিংড়া পয়েন্টে শনিবার সকালে ৭৫ সে: মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সিংড়া পৌরসভা সহ কলম,শেরকোল ও তাছপুর ইউনিয়ন। এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বেশ কিছু সড়ক যেকোন মুহূর্তে ধসে যেতে পারে । এছাড়াও রোপা অামন ও ৫ শতাধিক পুকুর ভেসে গেছে। তাছাড়া বিলের ঘাস ডুবে যাওয়ায় খাদ্য সঙ্কটে রয়েছে গবাদিপশু। অনেক স্কুল, কলেজ, হাটবাজার, গ্রামীণ রাস্তা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার ওয়ালী উল্লাহ মোল্লাহ জানান, বন্যায় মৎস্য খাতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ৪৬৮ টি পুকুর ডুবে গেছে। প্রায় ২১৩ হেক্টর পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত। প্রায় ২ শ হেক্টর মাছ ও পোনা বন্যায় ভেসে গেছে। আমরা তদারকি করছি। ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা প্রেরণ করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার জানান, ১২ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১৫৪ টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৬ মে: টন চাল বরাদ্দ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তালিকা অব্যহত আছে। ইতোমধ্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরন করেছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে প্রত্যক পরিবারকে চাল, শুকনা খাবার ১.৫ কেজি আলু,৫০০ গ্রাম মশুর ডাল,১ লিটার সয়াবিন তেল দেয়া হচ্ছে।
সিংড়া পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, পৌরসভার সিংড়া বাজারে পানি উঠেছে। সরকারপাড়া ও গোডাউন পাড়া, নিংগইন মহল্লা ঝূকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁধ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্য পৌর এলাকার মহেশচন্দ্রপুর, নিংগইন, চলনবিল মহিলা কলেজ এবং আনোয়ারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ১১০ টি পরিবার আশ্রয় গ্রহন করেছে। আমরা তাদের সরকারী সহায়তা হিসেবে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান,শনিবার সিংড়া পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সে. মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরকোল এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে। অপরদিকে, ত্রিমোহনী কলেজ এলাকার রাস্তা সংস্কার কাজ অাজ শুরু হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন বানু জানান, সিংড়া পৌর এলাকা এবং উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্য তাজপুর, শেরকোল ও কলম ইউনিয়ন ঝুকিপূর্ণ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে গবাদি পশুসহ পরিবার আশ্রয় নিচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে