সালমান খান। ভারতের কিংবদন্তি চিত্রনাট্যকার-লেখক সেলিম খানের বড় পুত্র। তাঁর নামই এখন বড় ব্র্যান্ড। ১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ ছবিতে সহ-অভিনেতা হিসেবে অভিনয়ে অভিষেক। তবে ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ তাঁর প্রতি আকর্ষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সে সময় সালমান টগবগে তরুণ, বয়স ২৫। এ ছবিই বহু নারীভক্ত জুটিয়েছিল। এখন বয়স ৫৪ হলেও বলিউডের অন্যতম আকাঙ্ক্ষিত ব্যাচেলর!

লাভার বয় থেকে অ্যাকশন স্টার, সালমানের ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য সুপারহিট চলচ্চিত্র। ‘কিক’, ‘দাবাং’, ‘ওয়ান্টেড’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’, ‘সুলতান’, ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’, ‘এক থা টাইগার’সহ কত নাম। তিন দশকের ক্যারিয়ারে ভিন্ন ভিন্ন গল্প আর নানা চরিত্রে দেখা গেছে সালমানকে।

এত তারকাখ্যাতি সত্ত্বেও অন্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে একটুও দ্বিধা করেননি সালমান খান। ১৯৯১ সালে সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে ‘সাজন’; ১৯৯৪ সালে আমির খানের সঙ্গে ‘আন্দাজ আপনা আপনা’; ১৯৯৬ সালে সানি দেওলের সঙ্গে ‘জিত’; ১৯৯৫ সালে শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘করণ অর্জুন’, ১৯৯৮ সালে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ও ২০০২ সালে ‘হাম তুমহারে হ্যায় সনম’ ছবি করেছেন। ২০০৪ সালে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ‘মুঝছে শাদি কারোগি’ ও ২০০৬ সালে ‘জান-এ-মান’ করেছেন। সালমান অন্যতম সুপারস্টার, যিনি কখনো ‘টু-হিরো’ ফিল্মকে ‘না’ বলেননি।

‘বিবি নাম্বার ওয়ান’ তারকার অভিনয়যাত্রার অনেকাংশই প্রেমিক চরিত্রে। আর তাই নারীভক্ত জুটেছে বেশি। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে মারকুটে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। ‘ওয়ান্টেড’, ‘রেডি’, ‘বডিগার্ড’ ও ‘কিক’ এসবের অন্যতম। এসব ছবি তাঁকে পুরুষভক্ত বাড়িয়েছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এখন তিনি সবার ভাইজান। এ ছাড়া ‘বিগ বস’ ও ‘দশ কা দম’-এর মতো টিভি রিয়েলিটি শো তাঁকে সবার ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিয়েছে। বড় পর্দা ও ছোট পর্দা, সব মাধ্যমেই সরব সালমান।

ভালোবেসে অনেক নামেই ডাকেন ভক্তরা। সোনাক্ষি সিনহা, সুরজ পাঞ্চোলিসহ অনেককেই বলিউডে অভিষেক করিয়েছেন। হিমেশ রেশমিয়া, আরমান মালিক, অমল মালিক ও সাজিদ-ওয়াজিদের মতো সুরকার-শিল্পীদের বলিউডে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছেন সাল্লু ভাই।

অনেক অভিনয়শিল্পীর বয়ানে উঠে এসেছে, তাঁরা সালমান খানের কাছে ঋণী। অনেকেই তাঁর অনুপ্রেরণা। তাঁর ‘সিক্স প্যাক অ্যাবস’ও অনুসরণীয়। যেমন আয়ুশ শর্মা, সুরজ পাঞ্চোলি, অর্জুন কাপুর, এমনকি হৃতিক রোশনও বহুবার বলেছেন, শরীর গঠনে সালমানকে অনুসরণ করেন তাঁরা। অর্জুন তো তাঁর ‘তেবর’ ছবিতে ‘সুপারম্যান… সালমান কা ফ্যান’ গানও করেছেন।

সালমান খানের রয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিয়িং হিউম্যান ফাউন্ডেশন’। ভারতের সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সহায়তা করে সংগঠনটি। ২০০৭ সালে তিনি এ সংগঠনের যাত্রা শুরু করেন। এখন এর অধীনে অনেক কোম্পানি রয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসুবিধা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সংগঠনটি বদ্ধপরিকর।

সালমান খানের চলচ্চিত্র মানেই ঘরোয়া বক্স অফিসে ২০০ কোটি রুপির হিট। বিশ্বব্যাপী তাঁর রয়েছে অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী। এখন তাঁর হাতে রয়েছে ‘রাধে’, ‘কিক টু’, ‘টাইগার থ্রি’, ‘কাভি ঈদ কাভি দিওয়ালি’, ‘ভেটেরান’সহ বেশ কয়েকটি ছবি। সালমানের তুলনা সালমান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে