ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরুত্ব মেনে আগামীকাল রোববার পবিত্র আশুরার অনুষ্ঠান ইনডোরে পালন করা যাবে। এ উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশসহ কোন অনুষ্ঠান উন্মুক্তস্থানে পালন করা যাবে না বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আশুরা উপলক্ষে ডিএমপির পক্ষ থেকে রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আশুরা কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ও বিস্তার রুখতে আগামীকাল রোববার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে খোলা স্থানে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’

কমিশনারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে উন্মুক্তস্থানে আশুরার অনুষ্ঠান না করারা জন্য সকলে একমত পোষণ করেছেন। ডিএমপি কমিশনার সম্প্রতি ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে পবিত্র আশুরা উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীতে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় এ কথা বলেন।

আশুরার অনুষ্ঠান আয়োজকদের প্রতি আহ্ববান জানিয়ে কমিশনার বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের বিস্তার রুখতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। অনুষ্ঠান স্থলে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিবেন না। সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে ইমামবাড়াগুলোতে সবাইকে এক সাথে না ঢুকিয়ে খন্ড খন্ড দলে বিভক্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেখানে অবস্থান করতে পরামর্শ দেন ডিএমপি কমিশনার।’

আশুরার বেদনা বিধুর ঘটনা স্মরণ করে কমিশনার বলেন, ‘আমরা ধর্মীয়ভাবে উদার একটি সমাজ ও রাষ্ট্রে বসবাস করি। আশুরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’ যে কোন প্রয়োজনে আয়োজকদের পাশে থাকারও নিশ্চয়তা দেন ডিএমপি কমিশনার।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি এবং লালবাগ, মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগের শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আশুরা উপলক্ষে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আশুরা কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ পোশাকে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানস্থল ডগ স্কোয়াড ও বোম নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিট দিয়ে সুইপিং করানো এবং ইমামবাড়াসহ তার আশাপাশে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশি করে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে সকলকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। এ ছাড়া আয়োজক কমিটি পরিচয়পত্রসহ পর্যাপ্ত সেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবেন।

ইমামবাড়াকেন্দ্রিক আয়োজক কমিটিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, প্রতিটি ইমামবাড়ার প্রবেশ পথ ও প্রস্থানের পথ পৃথক করতে হবে। প্রবেশমুখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেসিন, পানির ট্যাংক, সাবান এবং পৃথকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা ও জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রবেশ মুখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। কোনক্রমেই মাস্ক ছাড়া কাউকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। সামাজিক দূরত্ব কমপক্ষে ৩ ফুট কঠোরভাবে বজায় রাখতে হবে। করোনা সন্দেহজনক উপসর্গ যেমন- জ্বর, সর্দি-কাশি, শরীর ব্যাথা ইত্যাদি নিয়ে কোন ব্যক্তিকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে শিশু ও ষাটোর্ধ্ব এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের ইমামবাড়ায় প্রবেশে নিরুৎসাহিত করতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন কমিশনার।

(বাসস)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে