নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর পার্শ্ববর্তি বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে পথচারীদের বিভিন্ন ক্ষতিসহ পরিবেশ দূষণের অভিযোগ উঠেছে একটি ধানের গুড়া ভাঙ্গানো মিলের বিরুদ্ধে।

সান্তাহার পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডে নেসকো অফিস সংলগ্ন গুড়া ভাঙ্গানো মিলটির বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ দেওয়ার দীর্ঘদিন পার হলেও অজানা কারণে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোন জোড়ালো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

ধানের গুড়া ভাঙ্গানো মিলটি জনগুরুত্বপূর্ন ছাতিয়ান গ্রাম-তিলোকপুরের রাস্তায় অবস্থিত। প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে শতশত লোক যাতায়াত করে। মিলটি রাস্তার পাশে অবস্থিত হলেও মিলে নেই কোন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। এতে চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ব্যস্ততম রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের। ফলে যে কোন পথচারীর বিভিন্ন অসুখে অসুস্থ্য হওয়াসহ চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ন বিষয়ে প্রশাসন লিখিত ভাবে অভিযোগ পাওয়ার দীর্ঘ সময় পার হলেও কেন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী নুরুল ইসলামের বাড়ির দক্ষিণ পাশের্ব ২নং ওয়ার্ডে নেসকো অফিস সংলগ্ন ওই এলাকার সেকেন্দার সরদারের ছেলে সাইফুল ইসলাম একটি ধানের গুঁড়া ভাঙ্গানো মিল স্থাপন করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। ভাঙ্গানো গুড়া ঐ মিলের ভিতর থেকে বাহিরে এসে বাতাসের সাথে মিশে এলাকায় মারাত্মক ভাবে পথচারীদের বিভিন্ন ক্ষতিসহ পরিবেশ দূষণ করে আসছে। এর ফলে এলাকার নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধরাসহ সকল বয়সের মানুষের শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়াসহ অসুস্থ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এছাড়া ইতিপূর্বে ঐ মিলের ভাঙ্গানো গুড়া পথচারীদের চোখে পড়ে চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে আসছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম গত বছরের জুন মাসে অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ভুক্তভ্থগি নুরুল ইসলাম উপজেলা প্রশাসনের নিকট থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে পৌরসভার মেয়র বরাবর আরো একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পথচারী নেহাল আহমেদ, আব্দুল হাকিম, মনোয়ার হোসেনসহ অনেকেই বলেন মিলের গুড়া মিশ্রিত বাতাসের কারণে রাস্তায় চোখ মেলে চলাচল করা খুবই কঠিন। অনেক সময় চোখ বন্ধ করে চলাচল করার সময় ছোট-বড় যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষেরও ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হওয়া অব্যাহত রয়েছে। কারন এই রাস্তা দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়তই চলাচল করতে হয়। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান চাই।

মিলের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন বলে গনমাধ্যমকর্মীদের জানান।

সান্তাহার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মো: তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু বলেন, আমি এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ওই মিল মালিককে নোটিশের মাধ্যমে তার মিলে স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি। যদি মিল মালিক নোটিশ মোতাবেক কাজ না করে তাহলে জনস্বার্থে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাহথীর বিন মোহাম্মদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে