সদ্যই করোনামুক্ত হয়ে মাঠে নেমেছিলেন নেইমার। ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অলিম্পিক মার্শেইয়ের মুখোমুখি হয় পিএসজি। সেই ম্যাচে ১-০ গোলে হেরে বসে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে ম্যাচের ফলাফল ছাড়িয়ে আলোচনার মূল বিষয়ে পরিণত হয়েছে ম্যাচ শেষের নাটকীয়তা। যাতে অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে নেইমারের দিকেই।
ঘটনাটা হলো- ম্যাচের শেষ দিকে নেইমারকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী গালি দেন মার্শেই ডিফেন্ডার আলভারো গঞ্জালেজ। আর তাতেই হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায় ঘটনাটি। এরপর দুই দলের পাঁচ খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এর মধ্যে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার জুনিয়রও। মাঠের মধ্যে মেজাজ হারিয়ে ফেলায় নিষিদ্ধ হতে পারেন নেইমার। তবে নেইমারের অভিযোগ, ম্যাচের ভেতর তাকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী আচারণ করেন মার্শেইর আলভারো গঞ্জালেজ।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম আরএমসি স্পোর্টস জানিয়েছে, এই ঘটনায় সাত ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হতে চলেছেন ২৮ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। কেননা খেলার মাঠে প্রতিপক্ষের গায়ে সরাসরি হাত তোলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। এমন অপরাধ করার পর এক চুল ছাড় দিতে নারাজ ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান কর্তৃপক্ষ। নেইমারের অভিযোগটি আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। যদিও পিএসজি জানিয়েছে, নেইমারের প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে আলভারোও পাশে পেয়েছেন তার ক্লাবকে।
এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে পিএসজির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘পিএসজি খুবই আন্তরিকভাবে নেইমারকে সমর্থন দিচ্ছে। তিনি বলেছেন তাঁর সঙ্গে প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড় বর্ণবাদী আচরণ করেছেন। ক্লাব আবারও ব্যাপারটা পরিষ্কার করে বলতে চায়, সমাজের কোনো জায়গায় বর্ণবাদের জায়গা নেই। না ফুটবলে, না আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে। আমরা আশা করি এই জঘন্য আচরণের প্রত্যেক প্রকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হবে সবাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘১৫ বছর ধরে সমাজের বিভিন্ন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে পিএসজি ও তার সঙ্গী এসওএস রেসিজমে, লিক্রা ও স্পোর্তিতিউদ। এলএফপির (ফরাসি লিগ ওয়ান কমিটি) শৃঙ্খলা কমিশনের তদন্ত ও সত্যতা নির্ধারণের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। তদন্তে যে কোনো ধরনের সহায়তার জন্য এলএফপির পাশেই আছি আমরা।’
এদিকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া মার্শেই দাবি করেছে, ‘আলভারো গঞ্জালেজ বর্ণবাদী নন। ক্লাবে যোগ দেয়ার পর তার জীবন-যাপন সে কথা বলে না। সতীর্থরাও তার পক্ষে রায় দিয়েছে।’ অন্যদিকে আলভারো নেইমারের ভক্তকূলের কাছ থেকে মৃত্যুর হুমকিও পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
এ ব্যাপারে মার্শেই এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আলভারোর ব্যক্তিগত যোগাযোগ নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমে। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হওয়ার পাশাপাশি হত্যার হুমকিও পাচ্ছেন আলভারো।’
এর আগে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় নেইমার বারবার টিভি ক্যামেরা উদ্দেশ্য করে বলছিলেন- তিনি বর্ণবাদের আচারণের শিকার। আর সে কারণেই আলভারোর মাথায় চড় মারেন তিনি। ম্যাচ শেষে এই ব্যাপারটিকে তিনি নিয়ে যান সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম পর্যন্ত। সেখানে নেইমার প্রথমে বলেন, ‘আমার একটাই হতাশা যে- আমি ওই বেয়াদবের মুখে চড় মারিনি।’