অনুকূল বিশ্বাস, মালদহ জেলার প্রতিনিধি:
বিশ্বের প্রথম করোনা ভাইরাস ধ্বংসের যন্ত্র আবিষ্কার করল ভারতের বেঙ্গালুরু ভিত্তিক সংস্থা ‘ডেসকালেনি'(de Scalene and Scalene Cybernetics Ltd.)। যন্ত্রটির নাম ‘সাইকোকান ‘(Shycocan)।
সংস্থার চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সাইন্টিস্ট রাজা বিজয় কুমার এটি আবিষ্কার করেছেন। সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই যন্ত্রটি ‘Make in India’ প্রকল্পের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ভারতে এই সাইকোকান যন্ত্রটির ম্যানুফ্যাকচারিং ও মার্কেটিং করছে ইউরেকা ফোর্স। তবে যন্ত্রটি তৈরি করার জন্য আরও বেশ কয়েকটি সংস্থা ওদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।যন্ত্রটিকে ইতি মধ্যে ভারত সরকার পেটেন্ট দিয়েছে।এছাড়াও মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন(FDA) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকেও এটি সম্মানিত হয়েছে।
এই যন্ত্রটি একটি ছোট ড্রামের মতো যা হাসপাতাল, নার্সিং হোম ,ডাক্তারের চেম্বার, অফিস ,ব্যাংকসহ যেসব বদ্ধ জায়গায় জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে সেইসব স্থানে খুব সহজে এটি বসানো যায়। এখন দেখা যাক যন্ত্রটি কিভাবে করোনাভাইরাস ধ্বংস করে। যন্ত্রটি 230 ভোল্ট ও 5 এম্পিয়ার প্লাগের সঙ্গে যুক্ত করলে যন্ত্রের মধ্যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। সেই বিদ্যুৎ যন্ত্রের মধ্যে থাকা বিশেষ ধরনের ধাতু যৌগের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলে যন্ত্র থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটন মেডিয়েটেড ইলেকট্রন বেরিয়ে আসে, যা ওই যন্ত্রের আশেপাশে ইলেকট্রন মেঘ সৃষ্টি করে। যন্ত্রটি যেখানে রাখা থাকবে তার আশেপাশে এক হাজার স্কয়ার ফিটের মধ্যে সেই ইলেকট্রন মেঘ কার্যকর হয়। ওই ইলেকট্রন মেঘের মধ্যে কোনো করোনা রোগীর হাঁচি ,কাশি থেকে করোনাভাইরাস বাতাসে মিশলে সঙ্গে সঙ্গে ওই ইলেকট্রন মেঘ তা ধ্বংস করে দেয়। এক্ষেত্রে ওই ইলেকট্রন বাতাসে ভাসমান করোনা ভাইরাসকে ধরে নেয় এবং ভাইরাসের S- প্রোটিন যুক্ত অংশ ধ্বংস করে দেয় যার ফলে ভাইরাস তার সক্রিয়তা হারিয়ে ফেলে। জানালা দরজা বন্ধ থাকলে ওই ইলেকট্রন মেঘের মধ্যে 99.9 শতাংশ সুরক্ষিত বাতাস পাওয়া যায় অর্থাৎ সেখানে করোনা ভাইরাস মুক্ত বায়ু থাকে। এখানে আরো একটা মজার ঘটনা ঘটে। এই মেশিন বায়ুতে যেসব উপকারী ভাইরাস ,ব্যাকটেরিয়া ,ছত্রাক ও অন্যান্য অনুজীব থাকে তাদের নষ্ট করে না। সেই সঙ্গে বায়ুতে ওজোন জেনারেশনও খুব কম থাকে, যা আমাদের শরীরের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।
এমন ম্যাজিক করোনা কিলার যন্ত্রটি কলকাতায় তৈরি করছে ‘ Made-inn Healthcare’ নামক একটি সংস্থা। সূত্রের খবর ইতিমধ্যে দশ হাজার মেশিন তৈরি হয়ে গেছে। জিএসটি সহ দাম পড়ছে কুড়ি হাজার টাকা। সংস্থার তরফ থেকে জিএসটি মকুবের জন্য সরকারে কাছে আবেদন করা হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন প্রাইভেট নার্সিং হোম,সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও প্রাইভেট অফিস ইতিমধ্যে সাইকোকান মেশিন বসিয়েছে।এদের মধ্যে অন্যতম রাম কৃষ্ণ মিশন। রামকৃষ্ণ মিশনের হাসপাতাল “সেবা প্রতিষ্ঠান’ তাঁদের এমার্জেন্সি বিভাগে দুটি এই যন্ত্র বসিয়েছেন। এছাড়াও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড়ে দশটি সাইকোকান মেশিন বসানো হয়েছে। আগামী আইপিএল দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সূত্রের খবর সেখানকার প্লেয়ার রুমগুলোতে এই যন্ত্র বসানোর জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের কবল থেকে রেহাই পাওয়ার এটা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার সেকথা বলা ই যায়। ভ্যাকসিন আমাদের অনেকটাই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করছে কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার দেশে এই মুহূর্তে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।এই পরিস্থিতিতে সাইকোকান যন্ত্রের আবিষ্কার নিঃসন্দেহে আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।এই মুহূর্তে মাস্ক, স্যানিটাইজার, ভ্যাকসিন ও সাইকোকান যন্ত্র আমাদের করোনা মুক্ত পৃথিবী উপহার দেওয়ার দিকে একটু একটু করে এগোচ্ছে একথা বললে অত্যুক্তি হবে না।