নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর হার দিয়েই তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যান-বোলারদের ব্যর্থতা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও ফুটে উঠেছে। এতে ৬৬ রানের জয়ে সিরিজে এখন ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।

তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। সিরিজে সমতা আনতে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না টাইগাররা।

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস।

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদি ছিলো বাংলাদেশ। কারণ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বড় দল-ছোট দলের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি বাংলাদেশ।

হ্যামিল্টনে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ংয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২১০ রানের বিশাল পুঁজি পায় কিউইরা। কনওয়ে ৫২ বলে ১১টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৯২ রান করেন। ৩০ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৩ রান করেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ইয়ং।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে নজর কেড়েছেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের প্রথম ওভারে আক্রমণে এসেই উইকেট তুলে নেন নাসুম। পরবর্তীতে আরও একটি উইকেটও পান তিনি। ফলে ম্যাচে ৪ ওভারে ৩০ রানে ২ উইকেট নেন নাসুম।

তবে অন্যান্য বোলারদের কল্যাণে ২১১ রানের বিশাল টার্গেট দেয় নিউজিল্যান্ড। যা স্পর্শ করতে গিয়ে কিউই স্পিনার ইশ সোধির মায়াবী ঘূর্ণিতে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সৌম্য সরকার ৫, মোহাম্মদ মিঠুন ৪, অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১১ ও মাহেদি হাসান শুণ্য রান করে সোধির শিকার হন। এতে ৭ দশমিক ৫ ওভারে ৫৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফলে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে টাইগাররা।

শেষ পর্যন্ত আফিফ হোসেনের ৪৫ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অপরাজিত ৩৪ রানে বড় হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান করে দল।

ম্যাচ হারলেও, দলের পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব দেখে আমার ভালো লেগেছে। আমি মনে করি, আমাদের ভালো সুযোগ ছিলো। আমরা শুরুতে উইকেট নিয়েছি এবং তাদের রান রেট সাতের নিচে রেখেছি। তবে ডেভন যেভাবে ব্যাটিং করেছিল, সে ম্যাচটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন এবং আমাদের কোনও সুযোগ দেননি তিনি।’

মাহমুদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমাদের বোলাররা ভাল বোলিং করেছে, তাই আমি তাদের দোষ দিতে পারি না। আমাদের কিছু মিস ফিল্ডিং হয়েছে। যেগুলো বাউন্ডারি হয়েছে। আমরা যদি তাদের ১৯০তে আটকে রাখতে পারতাম, তবে রান তাড়া করতে পারতাম। তবে আমরা ব্যাটিংয়ে শুরুতে উইকেট হারিয়েছি, যা আমাদের সহায়তা করতে পারেনি, তবে দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের ব্যাটিং এমনটি বারবার ঘটছে।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ৮ ম্যাচ খেলে এখনও জয়হীন বাংলাদেশ। অবশ্য নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এখনও কোনও ফরম্যাটেই জয় পায়নি বাংলাদেশ। এই সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ ও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারের ফলে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের হার এখন ৩০ ম্যাচে (১৬টি ওয়ানডে, ৯টি টেস্ট ও ৫টি টি-টোয়েন্টি)।

মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা জানি, নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন আমাদের জন্য সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। আমরা যদি ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারি, তবে ম্যাচের ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এখানে জয়ের ক্ষুধা রয়েছে। আমরা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছি। আশা করি, আমরা সেরা ক্রিকেট খেলতে পারবো।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে