সাইমন হোসেন,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১১ নং মোহম্মদপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড কাজিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো: রাজু ইসলামের দুই মেয়ে
রাহা ও রোজার চিকিৎসা জন্য আবেদন।
জানা যায়, থেলাসামিয়া রোগে আক্রান্ত দুই বোন মরিয়ম আক্তার রাহা (৫) ও আরফিন রোজা(২) জন্মের পর থেকে তারা এ রোগে ভুগছেন এবং প্রতিমাসে তাদের দুজনকে রক্ত দিতে হয়।
কিন্তুু বর্তমানে সেটাও যোগার হচ্ছেনা কারন রক্ত বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও রক্ত দিতে আনুসাঙ্গিক খরচগুলো যোগার করতে পারছেনা রাহা-রোজার দিন মজুর বাবা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাহা-রোজার দাদীর আকুতি “আমার নাতনি দুইটাকে বাঁচাও বাবা ওদের মুখের দিকে আর তাকানো যাচ্ছেনা রক্তশুন্য মেয়েগুলোকে দেখে আর নিজেদের বাঁচতে ইচ্ছা করছেনা”
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের একটি রাইস মিলে কাজ করে রাহা রোজার বাবা রাজু ইসলাম। সেখান থেকে মাসে যা আয় করে তা দিয়ে মাসে একবারও ভালো তরকারি কেনা সম্ভব হয়না এমনকি অনেক সন্ধ্যা না খেয়েও থাকতে হয় তাদের এবং একটি টিনের ঘর তাতেই গদাগদি করে থাকে তারা।
তারা আরো বলেন, দুই নাতির চিকিৎসার টাকা যোগার করতে ভাঙ্গা একটি ইজিবাইক নিয়ে ছুঁটেন রাহা-রোজার বৃদ্ধ দাদা যদিও ইজিবাইকটি সর্বোচ্চ মাইলেজ ২৫ কিলোমিটার তাতে কোনদিন আয় হয় কোনদিন আবার মেরামত করতেই সব টাকা চলে যায়।
রাহা-রোজার চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক আগেই সর্বশান্ত হয়েছেন পরিবার এখন গ্রামের দুই চার দশজনের উপর ভরসা করেই জীবন প্রদীপ বেঁচে আছে দুই বোনের। কিন্তু সেটিও করোনাকাল থেকে ঝিমিয়ে গেছে দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যখন নিজের সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে রাহা-রোজাকে সাহায্য করা গুটিকয়েক গ্রামবাসী তখন তাদের করণীয় বা আর কি?
স্থানীয়রা বলছেন, সরকার থেকে যদি রাহা-রোজাকে সাহায্য করা যেতো তাহলে নি:ষ্পাপ ফুলের মতো শিশু দুটিকে বাঁচানো সম্ভব।
রাহা-রোজার বাবা রাজু ইসলাম ভরাক্রান্ত হৃদয়ে জানান, আমার সহায় সম্বল যা আছে সবই শেষ আমার মেয়ে দুইটির চিকিৎসার খরচ চলে এলাকার কিছু ভাইয়ের টাকায়। কিন্তু করোনাকালে তাও এখন বন্ধ হয়ে গেছে আমার আয় দিয়ে কোনদিন এক কেজি মাছ বা মাংস কিনে অসুস্থ্য সন্তান গুলোকে খাওয়াতে পারিনি আমার অসুস্থ্য বাবা ইজিবাইক নিয়ে রাস্তায় বের হয় কিন্তু করোনাকালে সেও এখন বেকার আমার মেয়ে দুইটিকে বাঁচাতে পারে শুধুমাত্র হৃদবানরা। আমার অর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন সেটা সরকারি হোক কিনবা ব্যক্তি থেকে যদি তা না পাই তাহলে আমাকে নিজের কিডনি বেঁচে হলেও আমার সন্তানদের চিকিৎসা করাতে হবে কারন ডাক্তার বলেছে উন্নত চিকিৎসা করালে আমার সন্তানরা ভালো হবে।
১১ নং মোহম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: সোহাগ রানা বলেন, শিশুদের সমস্যার কথা আমি শুনেছি। পরিবারটি অনেক গরীব আমি আহ্বান করবো হৃদবানদের এগিয়ে আসতে সেই সাথে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে একটি আর্থিক সাহায্যের আবেদন করতে আমি সুপারিশও করেছি।