Dhaka ০৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সখি : 🖋 নীল আকাশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:০৭:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
  • 372

সখি

নীল আকাশ

ছোট গল্প : ছোট্ট মিনি দৌড়ে আসে । বাবা, ও বাবা আমিও বাজারে যাবো ।

রান্নাঘরে মা চিৎকার করে ওঠে, না..না…কখনো না, একদম না।

না..না..আমি যাবোই। বাবার গলা জড়িয়ে ধরে মিনি, বাবা ও বাবা নিয়ে চলোনা বাবা।

ছোট্ট একমাত্র মেয়ের জেদের কাছে হার মানে বাবা। রেইনকোটটা নে মা,পথঘাট বড্ড পিচ্ছিল,মিনিকে নিয়ে বাবা বাজার গেল। বাবা-মেয়ে ঘুরে ঘুরে বাজার করে বাজারের থলে পূর্ণ করে।

আনন্দে হাসতে হাসতে বাড়ির পথে পা বাড়ায় ছোট্ট মিনি ও তার বাবা। বাজারের শেষ প্রান্তে এককোণে জীর্ণ বসনে এক বৃদ্ধা কিছু চারাগাছ নিয়ে বসে আছে।

বাবু, ও বাবু একটা চারা নিয়ে যাও, তোমার আঙিনার এককোণে লাগিয়ে দিবে।

শুনেও যেন শুনেনা বাবা। বাবা..ও বাবা নাওনা একটা মাধবীলতার চারা। মায়ের রান্নাঘরের কোণে বসাবো।

বাবা কিনে দিলেন দুটি পয়সা দিয়ে। বৃদ্ধার মনে হাসি ফুটলো,প্রাণ ভরে আশির্বাদ করলো।

ছোট্ট মিনি একরত্তি মাধবীলতা চারা হাতে নিয়ে আহ্লাদে বাড়ির পথে পা বাড়ায়।

মা, ও মা দেখবে এসো কি এনেছি, মা..ও মা শুনতে পাওনা বুঝি?

আসছি বাবা আসছি,নিশ্চয় ছোট মাছ এনে কাজ বাড়িয়েছে আমার। মিনির হাতে ছোট্ট চারাগাছ দেখে অবাক হলেন মা, এ আবার কি? কোথায় বসাবি এটা?

এই যে, মা তোমার রান্নাঘরের কোণে।

অতি যত্নে বেড়ে উঠতে থাকে। ছোট্ট মাধবীলতা শৈশব,কৈশোর পেরিয়ে ভরা যৌবনে রান্নাঘরের চাল ভরে উঠেছে অসংখ্য মাধবী ফুলে।

মিনিও আর ছোট্টটি নেই। তাকেও এ বাড়ি,বাবা-মা আর তার সখি মাধবীকে ছেড়ে শশুর বাড়ি যেতে হলো।

অতি আদরের মিনি শশুর বাড়ির ধমকানি-চমকানি ও অনাদরে মুষড়ে পড়ে। ক্রমাগত রোগা হয়ে যায়। হাসতে ভুলে যায় সর্বদা হাসিখুশি থাকা সেই মেয়েটি।

বাবা আর নেই,মায়ের আঁচলে চোখ মুছে মিনি। মাধবীলতা গাছটিকে আঁকড়ে ধরে সে। মাধবী ও মাধবী একটি চারা দিবে আমায়?

ছোট্ট মাধবী মিনির সাথে আসে নতুন বাড়িতে,নতুন পরিবেশে। ধীরে ধীরে হাসি ফুটতে থাকে মিনির চোখে-মুখে।

এভাবেই বেঁচে থাকে মিনি-মাধবীর সখিত্ব।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

সখি : 🖋 নীল আকাশ

Update Time : ০৫:০৭:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০

সখি

নীল আকাশ

ছোট গল্প : ছোট্ট মিনি দৌড়ে আসে । বাবা, ও বাবা আমিও বাজারে যাবো ।

রান্নাঘরে মা চিৎকার করে ওঠে, না..না…কখনো না, একদম না।

না..না..আমি যাবোই। বাবার গলা জড়িয়ে ধরে মিনি, বাবা ও বাবা নিয়ে চলোনা বাবা।

ছোট্ট একমাত্র মেয়ের জেদের কাছে হার মানে বাবা। রেইনকোটটা নে মা,পথঘাট বড্ড পিচ্ছিল,মিনিকে নিয়ে বাবা বাজার গেল। বাবা-মেয়ে ঘুরে ঘুরে বাজার করে বাজারের থলে পূর্ণ করে।

আনন্দে হাসতে হাসতে বাড়ির পথে পা বাড়ায় ছোট্ট মিনি ও তার বাবা। বাজারের শেষ প্রান্তে এককোণে জীর্ণ বসনে এক বৃদ্ধা কিছু চারাগাছ নিয়ে বসে আছে।

বাবু, ও বাবু একটা চারা নিয়ে যাও, তোমার আঙিনার এককোণে লাগিয়ে দিবে।

শুনেও যেন শুনেনা বাবা। বাবা..ও বাবা নাওনা একটা মাধবীলতার চারা। মায়ের রান্নাঘরের কোণে বসাবো।

বাবা কিনে দিলেন দুটি পয়সা দিয়ে। বৃদ্ধার মনে হাসি ফুটলো,প্রাণ ভরে আশির্বাদ করলো।

ছোট্ট মিনি একরত্তি মাধবীলতা চারা হাতে নিয়ে আহ্লাদে বাড়ির পথে পা বাড়ায়।

মা, ও মা দেখবে এসো কি এনেছি, মা..ও মা শুনতে পাওনা বুঝি?

আসছি বাবা আসছি,নিশ্চয় ছোট মাছ এনে কাজ বাড়িয়েছে আমার। মিনির হাতে ছোট্ট চারাগাছ দেখে অবাক হলেন মা, এ আবার কি? কোথায় বসাবি এটা?

এই যে, মা তোমার রান্নাঘরের কোণে।

অতি যত্নে বেড়ে উঠতে থাকে। ছোট্ট মাধবীলতা শৈশব,কৈশোর পেরিয়ে ভরা যৌবনে রান্নাঘরের চাল ভরে উঠেছে অসংখ্য মাধবী ফুলে।

মিনিও আর ছোট্টটি নেই। তাকেও এ বাড়ি,বাবা-মা আর তার সখি মাধবীকে ছেড়ে শশুর বাড়ি যেতে হলো।

অতি আদরের মিনি শশুর বাড়ির ধমকানি-চমকানি ও অনাদরে মুষড়ে পড়ে। ক্রমাগত রোগা হয়ে যায়। হাসতে ভুলে যায় সর্বদা হাসিখুশি থাকা সেই মেয়েটি।

বাবা আর নেই,মায়ের আঁচলে চোখ মুছে মিনি। মাধবীলতা গাছটিকে আঁকড়ে ধরে সে। মাধবী ও মাধবী একটি চারা দিবে আমায়?

ছোট্ট মাধবী মিনির সাথে আসে নতুন বাড়িতে,নতুন পরিবেশে। ধীরে ধীরে হাসি ফুটতে থাকে মিনির চোখে-মুখে।

এভাবেই বেঁচে থাকে মিনি-মাধবীর সখিত্ব।