Dhaka ০৮:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীমৎ তৈলঙ্গস্বামীর তৃতীয় পরম্পরা গুরুদেব শ্রীশ্রী দিলীপ দেববর্মণের মহাপ্রয়াণ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:১৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • ৭৪ Time View

শ্রীশ্রী তৈলঙ্গস্বামীর পরম্পরা পরমানন্দস্বামী ও তাঁর পরম্পরা শ্রীশ্রী যোগানন্দ মহাপ্রভুর পরম্পরা গুরুদেব শ্রী দিলীপ দেববর্মণ ব্রক্ষ্মচারী ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। প্রায় একমাস ধরে কলকাতার মেরীল্যান্ড নার্সিংহোমে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৩০ এপ্রিল বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে প্রয়াত হলেন তার অসংখ্য শিষ্য ও অনুরাগীদের চোখের জলে ভাসিয়ে।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। গতকাল সন্ধ্যায় তার মরদেহ নৈহাটির Peace Heaven -এ শায়িত ছিল।১মে সকাল ৯,২০ মিনিটে হালিশহর আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মরদেহ । সেখানে হালিশহর ও খুলনার আশ্রম থেকে ২ হাজারের বেশি শিষ্য,ভক্ত,অনুরাগী চোখের জলে,পুষ্পমালায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।অবশেষে বেলা ২টো নাগাদ তাঁর মরদেহ আশ্রম থেকে মহা প্রস্থানের পথে যাত্রা করে নৈহাটির রামঘাট মহাশ্মশান অভিমুখে ।বেলা ৩টে,৩০ নাগাদ সেখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

তিনি ছিলেন জীবন সন্ন্যাসী। খুলনা পিসি লাহা বিদ্যালয়ে অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন,গেরুয়া বসন পরেই স্কুলে যেতেন, শিক্ষকতা ছাড়েন নি শুধু তাঁর বেতনের অর্থ দিয়ে আশ্রমের খরচ ও গরীব, অসহায়,অনাথ ছাত্রছাত্রী, পড়াশোনা,থাকা খাওয়া ও পোষাক ইত্যাদির খরচ বহনের জন্য।হালিশহর আশ্রমে তিনি যেমন উত্তরাধিকারী তেমনি বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত খুলনা গ্রামে যোগানন্দ যোগাশ্রমের পরম্পরা মহারাজ ছিলেন তিনি। যোগানন্দ মহাপ্রভু তার সুযোগ্য শিষ্য দিলীপ ব্রক্ষ্মচারীকেই একমাত্র দীক্ষা দানের অধিকার দেন।১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম

দীক্ষা দেন,তার প্রথম শিষ্য ও শিষ্যা ২৪পরগনার ৫২টি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আর এক সংসার সন্ন্যাসী বিনোদ বিহারী গায়েন ও তার সহধর্মিণী যমুনা বালা গায়েন,একে একে অসংখ্য মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব নেন। যোগানন্দ আশ্রমের পরিচালক কমিটির এক সিদ্ধান্তের মতানৈক্যজনিত কারণে সম্পূর্ণ তাঁর বেতনের টাকায় খুলনায় যোগানন্দ আশ্রমের অদূরবর্তী স্থানেই জমি কিনে ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে একটি পাঠশালা আশ্রম গড়েন তিনি, সেখানে ১৫/২০ জন অনাথ,হতদরিদ্র, ছাত্রদের খাওয়া পরা, পড়ার খরচ তাঁর বেতন থেকেই নির্বাহ করতেন। সংসার করেন নি। জগৎসসারই তার সংসার।‌ ধ্যান,উপাসন, কর্মযোগ ও মানবকল্যাণে তিনি সমস্ত জীবনকে সমর্পণ করেন।

এই প্রতিবেদক সহ অসংখ্য ছাত্র ও মানুষের উওরণের অন্যতম মন্ত্রদাতা পুরোহিত ছিলেন তিনি। জাতি, ধৰ্ম, বর্ণ, উচ্চ, নীচ কোন ভেদাভেদ করতেন না তিনি,অরাজনৈতিক হলেও রাজনীতির প্ৰতি বীতশ্ৰদ্ধ ছিলেন না তিনি ।সদালাপী, মিষ্টভাষী, স্পষ্টবাদী, অহঙ্কারহীন,গভীর সংযমী, ব্রক্ষ্মচারী শিক্ষক সন্ন্যাসী বর্তমান সমাজে বিরল থেকে বিরলতম।আজ মহান মে দিবসের দিনে হাজার হাজার মানুষ,সমৃহ সমাজ হারালেন এক মহাপুরুষকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

শ্রীমৎ তৈলঙ্গস্বামীর তৃতীয় পরম্পরা গুরুদেব শ্রীশ্রী দিলীপ দেববর্মণের মহাপ্রয়াণ

Update Time : ০২:১৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

শ্রীশ্রী তৈলঙ্গস্বামীর পরম্পরা পরমানন্দস্বামী ও তাঁর পরম্পরা শ্রীশ্রী যোগানন্দ মহাপ্রভুর পরম্পরা গুরুদেব শ্রী দিলীপ দেববর্মণ ব্রক্ষ্মচারী ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। প্রায় একমাস ধরে কলকাতার মেরীল্যান্ড নার্সিংহোমে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৩০ এপ্রিল বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে প্রয়াত হলেন তার অসংখ্য শিষ্য ও অনুরাগীদের চোখের জলে ভাসিয়ে।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। গতকাল সন্ধ্যায় তার মরদেহ নৈহাটির Peace Heaven -এ শায়িত ছিল।১মে সকাল ৯,২০ মিনিটে হালিশহর আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মরদেহ । সেখানে হালিশহর ও খুলনার আশ্রম থেকে ২ হাজারের বেশি শিষ্য,ভক্ত,অনুরাগী চোখের জলে,পুষ্পমালায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।অবশেষে বেলা ২টো নাগাদ তাঁর মরদেহ আশ্রম থেকে মহা প্রস্থানের পথে যাত্রা করে নৈহাটির রামঘাট মহাশ্মশান অভিমুখে ।বেলা ৩টে,৩০ নাগাদ সেখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

তিনি ছিলেন জীবন সন্ন্যাসী। খুলনা পিসি লাহা বিদ্যালয়ে অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন,গেরুয়া বসন পরেই স্কুলে যেতেন, শিক্ষকতা ছাড়েন নি শুধু তাঁর বেতনের অর্থ দিয়ে আশ্রমের খরচ ও গরীব, অসহায়,অনাথ ছাত্রছাত্রী, পড়াশোনা,থাকা খাওয়া ও পোষাক ইত্যাদির খরচ বহনের জন্য।হালিশহর আশ্রমে তিনি যেমন উত্তরাধিকারী তেমনি বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত খুলনা গ্রামে যোগানন্দ যোগাশ্রমের পরম্পরা মহারাজ ছিলেন তিনি। যোগানন্দ মহাপ্রভু তার সুযোগ্য শিষ্য দিলীপ ব্রক্ষ্মচারীকেই একমাত্র দীক্ষা দানের অধিকার দেন।১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম

দীক্ষা দেন,তার প্রথম শিষ্য ও শিষ্যা ২৪পরগনার ৫২টি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আর এক সংসার সন্ন্যাসী বিনোদ বিহারী গায়েন ও তার সহধর্মিণী যমুনা বালা গায়েন,একে একে অসংখ্য মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব নেন। যোগানন্দ আশ্রমের পরিচালক কমিটির এক সিদ্ধান্তের মতানৈক্যজনিত কারণে সম্পূর্ণ তাঁর বেতনের টাকায় খুলনায় যোগানন্দ আশ্রমের অদূরবর্তী স্থানেই জমি কিনে ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে একটি পাঠশালা আশ্রম গড়েন তিনি, সেখানে ১৫/২০ জন অনাথ,হতদরিদ্র, ছাত্রদের খাওয়া পরা, পড়ার খরচ তাঁর বেতন থেকেই নির্বাহ করতেন। সংসার করেন নি। জগৎসসারই তার সংসার।‌ ধ্যান,উপাসন, কর্মযোগ ও মানবকল্যাণে তিনি সমস্ত জীবনকে সমর্পণ করেন।

এই প্রতিবেদক সহ অসংখ্য ছাত্র ও মানুষের উওরণের অন্যতম মন্ত্রদাতা পুরোহিত ছিলেন তিনি। জাতি, ধৰ্ম, বর্ণ, উচ্চ, নীচ কোন ভেদাভেদ করতেন না তিনি,অরাজনৈতিক হলেও রাজনীতির প্ৰতি বীতশ্ৰদ্ধ ছিলেন না তিনি ।সদালাপী, মিষ্টভাষী, স্পষ্টবাদী, অহঙ্কারহীন,গভীর সংযমী, ব্রক্ষ্মচারী শিক্ষক সন্ন্যাসী বর্তমান সমাজে বিরল থেকে বিরলতম।আজ মহান মে দিবসের দিনে হাজার হাজার মানুষ,সমৃহ সমাজ হারালেন এক মহাপুরুষকে।