আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ফের লকডাউন বিরোধী কথা মন্তব্য করলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। তার মতে, এতে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। বেতন না পেয়ে, চাকরি হারা হয়ে মানুষ মরবে।
বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিশ্বের অন্যতম হটস্পট ব্রাজিল। আক্রান্ত-মৃত্যুতে বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পরই তাদের অবস্থান। দেশটিতে করোনারোগীর সংখ্যা এরই মধ্যে ২০ লাখ ছাড়িয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৮ হাজার।
শুরু থেকেই করোনা নিয়ে উদাসীন ভাব দেখিয়ে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। লকডাউন, মাস্ক পরার ঘোর বিরোধী ছিলেন। তার দাবি, করোনা ‘সাধারণ ফ্লু’ জাতীয় রোগ।
দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতির ভয়ে লকডাউন ও অন্যান্য কঠোর বিধিনিষেধে একেবারে বিরোধী বলসোনারো। তার দাবি, লকডাউনের পক্ষের লোকেরা অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনছে।
ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় সরকারকে পাশ কেটেই অনেক অঙ্গরাজ্য ও আঞ্চলিক সরকার করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ও অন্যান্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
তাদের সমালোচনা করে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ভিডিও পোস্টে বলসোনারো বলেন, “বেতন ছাড়া, চাকরি ছাড়া মানুষ মরবে। লকডাউন অর্থনীতি ধ্বংস করে দেবে, অর্থনীতির দম বন্ধ করে ফেলবে।”
করোনার কারণে এ বছর ব্রাজিলের অর্থনীতি ৬.৪ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হতে পারে। এমন পূর্বাভাসের পরই লকডাউন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলেন অতি ডানপন্থী এই রাজনীতিক।
বলসোনারো নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। গত ৭ জুলাই কভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আক্রান্ত হলেও কোনো লক্ষণ নাই তার। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার নমুনা টেস্ট করিয়েছেন তিনি, তাতেও রিপোর্ট পজিটিভ।
করোনায় আক্রান্ত হলেও ব্রাসিলিয়ায় সরকারি বাসভবন আলভোরাদা প্যালেসে সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করেছেন ৬৫ বছর বয়সী বলসোরানো। অবশ্য মাস্ক পরে কয়েক মিটার দূরে অবস্থান করছিলেন তিনি।
এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বিতর্কিত ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন খেয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বলসোনারো। শুরুতে কয়েকটি দেশ করোনা নিরাময়ে ম্যালেরিয়ার এই ওষুধটি প্রয়োগ করছিল। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অনেক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ওষুধে করোনার ক্ষেত্রে কাজে দেওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিন্তু ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জানালেন, “হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন কাজে দেয় আমি এর জীবন্ত প্রমাণ।”