চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিল বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস। কিন্তু সবার চোখ ছিল ফুটবলের বর্তমান দুই শ্রেষ্ঠ তারকা লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দ্বৈরথের দিকে। কিন্তু রোনালদোর আলো ছড়ানো দিনে ম্রিয়মাণ থাকলেন মেসি। তাই দুই বছর পর মুখোমুখির এই দ্বৈরথটা ঠিক জমেনি। রোনালদোরদের কাছে নিজেদের মাঠে কোন পাত্তাই পায়নি মেসিরা।
মঙ্গলবার বার্সেলোনার মাঠ ন্যু ক্যাম্পে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতে নিয়েছে জুভেন্টাস। রোনালদো করেছেন জোড়া গোল।
অন্য গোলটি ওয়েস্টন ম্যাককেনির। এছাড়া অফসাইডের কারণে একটি গোল বাতিল না হলে ব্যবধান হতে পারতো ৪-০।
১৭ বছর পর বার্সার মাঠে জিতেছে জুভেন্টাস। একই সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা শেষ ষোলোতে উঠেছে। যদিও প্রথম লেগে জুভেন্টাসের মাঠ থেকে বার্সেলোনা ০-২ গোলে জয় নিয়ে ফিরেছিল।
শুরু থেকে বার্সাকে চেপে ধরেছিল জুভেন্টাস। ৯ মিনিটে রোনালদো প্রথম শট নেন লক্ষ্যে। অবশ্য তা সহজে ঠেকান স্বাগতিক গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন। এর তিন মিনিট পর পেনাল্টি আদায় করেন রোনালদো। বক্সের মধ্যে বল নিয়ে এগোতে থাকা পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে ফাউল করেন রোনাল্ড আরাউজো। স্পট কিক থেকে গোল করেন রোনালদো। ১৩ মিনিটের এই গোলটি ছিল বার্সার বিপক্ষে সব প্রতিযোগিতায় রোনালদোর ১৬তম।
রক্ষণভাগের ফাঁক খুঁজে বের করে হুয়ান কুয়াদ্রাদো কয়েকবার বার্সাকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। এই কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার ২০ মিনিটে জুভেন্টাসকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেন। তার ডানপায়ে ভাসানো ক্রস থেকে দুর্দান্ত অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে স্কোর ২-০ করেন ওয়েস্টন ম্যাককেন্নি।
দুই গোল হজম করার পর বার্সা ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ছিল। বিশেষ করে মেসি আর জুভেন্টাস গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফনের লড়াই জমে উঠেছিল। ২২ মিনিটে বার্সা অধিনায়কের বাঁ পায়ের জোরালো শট ঠেকান ইতালিয়ান এই গোলকিপার। প্রথমার্ধে আরও দুইবার মেসির প্রচেষ্টা রুখে দেন বুফন। তাই ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় জুভেন্টাস।
বিরতির পর অন্তত মেসি জ্বলে উঠবেন, ঘুরে দাঁড়াবে বার্সা, এখন স্বপ্ন ছিল মেসি ভক্তদের। কিন্তু রোনালদোরা তো হতে দেয়নি। ৫০ মিনিটে জুভেন্টাসের আক্রমণ দারুণ দক্ষতায় রুখেছিলেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান। কিন্তু বিল্ড আপের সময় ক্লেমন্ত লংলের হ্যান্ডবলের আভাস পান রেফারি। পেনাল্টি চেকআউটের পরও কোনও সমাধান না হওয়ায় তাকে মনিটর দেখতে হয়। তাতে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি এবং স্পট কিক নেন রোনালদো। এবারও টের স্টেগেনকে ভুল দিকে পাঠিয়ে বাঁ দিকে কোনাকুনি শটে গোল করেন তিনি।
৫৮ মিনিটে মেসির ফ্রি কিক থেকে দূরের পোস্ট দিয়ে আন্তোয়ান গ্রিজমানের শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৭৬ মিনিটে জুভেন্টাস চতুর্থ গোলের উচ্ছ্বাসে মেতেছিল। কুয়াদ্রাদোর কর্নার থেকে রোনালদোর দুর্বল শট বোনুচ্চির গায়ে লেগে জালে জড়ায়। তবে বোনুচ্চি অফসাইডে থাকায় ভিএআরে গোলটি বাতিল হয়।
শেষ পর্যন্ত তুরিনের ক্লাবটি ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
এই জয়ে ৬ ম্যাচে জুভেন্টাস ও বার্সার সমান ১৫ পয়েন্ট। তবে হেড টু হেড রেকর্ডে এগিয়ে থেকে ‘জি’ গ্রুপের সেরা হলো জুভেন্টাস।