বৃষ্টি শুরুর আগেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি শেষ করতে নিয়ম হয়েছে আগেই। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনও নিয়ম বেধে দিয়েছে সম্প্রতি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে কমেনি সমন্বয়হীনতা। বৃষ্টিতে দুর্ভোগ আগের মতোই রয়েছে। করপোরেশন বলার পরও রাজধানীজুড়ে বহু রাস্তা কেটে রাখায় ক্ষুব্ধ নগরবাসী।
ভুক্তভোগীরা জানান, ‘ঘনঘন এখানকার রাস্তাগুলো কাটা হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স আসার মতো অবস্থা নেই। আবার কোন কোন রাস্তায় হাটার মতো অবস্থা নেই। হঠাৎ বড় ধরনের কোন সমস্যা হলে ফায়ার সার্ভিস ঢুকার মতোও জায়গা নেই।’
স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন জানান, ‘কন্ট্রাক্টর বলেছিল গত ঈদের আগেই কাজ শেষ করে দিবে কিন্তু হয়নি। এ রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ অফিস বা কর্মস্থলে যাওয়া আসা করে। ফলে, চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’
কোথাও আবার প্রধান সড়কের চেয়েও বেশি কাটা হয়েছে মহল্লার অভ্যন্তরীণ সড়ক। রাজধানী ঘুরে এমন চিত্র মিলেছে অনেক জায়গায়। এমন দুর্যোগ থেকে কবে মুক্তি মিলবে তা জানতে চান নগরবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ,‘গত কয়েকদিন আগেও মেয়ররা জানিয়েছিলেন রাস্তা মেরামত করতে হলে তিনদিন আগে অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু কোন নোটিশ ছাড়াও অহরহ রাস্তা কাটা হচ্ছে। কারো সঙ্গে কোন সমন্বয় নেই।’
তারা বলেন, ‘রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারটা পুরোটাই একটা পদ্ধতির মধ্যে আনতে হবে। এলোমেলোভাবে সড়ক না কেটে, একসাথে যেন একটা রাস্তাই মেরামত, পাইপলাইন ঠিক করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত আমাদের সেই নিয়মের মধ্যে আনা গেল না। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক একবার এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিন্তু তা আলোর মুখ দেখেনি। এক গ্রুপ ঢালাই দিয়ে কাজ শেষ না করেই চলে যায়, পরে সে রাস্তা ঠিক কবে ঠিক হবে তা অনিশ্চিত থেকে যায়। ফলে নতুন টেন্ডারের অপেক্ষা করতে হয়। যা আমাদেরকে চরম বিপাকে দাঁড় করিয়েছে।’
পশ্চিম আগারগাঁওয়ের একটি রাস্তা খুঁড়ে লাপাত্তা ঠিকাদার। বাসা বাড়ির ময়লাতে সয়লাব গুরুত্বপূর্ণ অফিস এলাকা। এখানকার ভুক্তভোগীরা জানান, ‘সংসদ সচিবালয়, প্রশাসনিক এরিয়া ও পাশেই আইসিটি মন্ত্রণালয় হওয়া সত্ত্বেও এই রাস্তার নাজুক অবস্থা। পাশেই ময়লার ড্রাম্প। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।’
এমতাবস্থায় সমন্বয় ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে জানান ঢাকার দুই সিটিতে দীর্ঘ সময় কাজ করা সাবেক প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপণ কুমার সাহা (অব.)। তিনি বলেন, ‘একটা লেন যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে অন্য লেনের ওপর যদি চাপ পড়ে পুরো রাস্তাটা নষ্ট হয়ে যাওয়া, জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এই সমস্ত থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে কেবলমাত্র মেয়রের শক্তিশালী নেতৃত্বে। যিনি বলে দিবেন কখন সিটি করপোরেশন সংস্কার কাজ করবে। তার আগেই পূর্বের কাজ শেষ করতে হবে। তাই দাতা সংস্থার যে চাপই থাকুক কিংবা অর্থ যে সময়েই ছাড় হোক না কেন তাকে কাজটা ওই সময়েই করতে হবে। তাহলেই অর্থের অপচয় রোধ ও জনসাধারণ ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।’