রাজশাহী প্রতিনিধি :-

রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) ভিসি অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিবের বিরুদ্ধে এবার বাসা ও গাড়ি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বাসাটিকে গেস্টহাউস হিসেবে দেখিয়ে কৌশলে তিনি অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। অন্যদিকে ভিসির বদলে নিয়ম ভেঙে গাড়ি ব্যবহার করছেন তাঁর ছেলে।

রামেবি সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী ভবন না থাকায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) ও হাসপাতাল ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ডিভিশনাল কন্টিনিউইং এডুকেশন সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করে রামেবির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালকের বাংলোটি ভিসির বসবাসের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ নেওয়া হয়। পরে রামেবির অর্থায়নে প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সেটি সংস্কারও করা হয়। এরপর গত বছরের অক্টোবর থেকে ভিসির পরিবার সেখানে বসাবাস করছে। তবে ভিসি সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বাসাটিকে কৌশলে গেস্টহাউস হিসেবে দেখিয়েছেন। তিনি বিধি মোতাবেক বেতন-ভাতা থেকে বাসা ভাড়া কর্তন না করে তা নিয়মিতভাবে উত্তোলন ও আত্মসাৎ করছেন।
সূত্র জানায়, শুরু থেকেই ভিসি ঢাকায় থাকেন। আর মাঝে মধ্যে রাজশাহীতে এলে বাসায় থাকেন, কিন্তু ভিসির নামে বরাদ্দের বাসাটিতে তাঁর ছেলে, ছেলের বউ, শ্যালিকা এবং মা-বাবা নিয়মিতভাবে বসবাস করছেন। ভিসি বাসা ভাড়া কর্তন না করলেও বাসায় ব্যবহৃত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র (সাবান, টিস্যু, ফিনাইল, হারপিক ইত্যাদি) রামেবির স্টোর থেকে সরবরাহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ভিসির বেতন স্কেল অনুযায়ী বাসা ভাড়া বাবদ ২২ হাজার ৭০০ টাকা, বিদ্যুৎ বিল পাঁচ হাজার টাকা, ডিস বিল এক হাজার ২০০ টাকা, ইন্টারনেট বিল দুই হাজার ৫০০ টাকা, বাসায় ব্যবহৃত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামসহ প্রতি মাসে অন্তত ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করছেন তিনি।

এদিকে সূত্র আরো জানায়, ভিসির ছেলে ও ছেলের বউ রাজশাহীর গোদাগাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। ভিসির ছেলে তাঁর শ্বশুরের পরিবার নিয়ে ভিসির সরকারি বাসায় বসবাস করেন ও রামেবির ক্যারিবয় গাড়ি (রাজ-মেট্রো-১১-০১১৫) ব্যবহার করে নিয়মিত গোদাগাড়ীতে অফিস করেন। শুধু তা-ই নয়, রামেবির ওই গাড়ি নিয়ে নিয়ম ভেঙে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার রাজশাহী থেকে ঢাকায় যাতায়াত করেন তাঁরা।

ভিসি ডা. মাসুম হাবিবের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি। তবে তাঁর ছেলে ডা. আস-আদ হাবীব বলেন, ‘এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই বাসাটি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ এ ছাড়া রামেবির গাড়ি ব্যবহার করে অফিসে যাতায়াতের বিষয়টিও অসত্য বলে জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে