সানোয়ার আরিফ রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

রাজশাহী বিভাগীয় সামাজিক বন বিভাগ অফিস এখন নানা অনিয়ম আর দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভূক্তভুগি ঠিকাদাররা এই অভিযোগ করেছেন। গত মাসের ১৩ তারিখে হওয়া টেন্ডারের শর্ত ভঙ্গের কারণ দিয়ে প্রায় ২০০ লটের মত উচ্চ দরদাতাকে কাজ না দিয়ে সেকেন্ড ও থার্ড দরদাতাকে কমিশনের ভিত্তিতে কাজ দিয়েছেন।

জানা যায়, প্রায় ৫৫০ লটের কাজের টেন্ডার করেন রাজশাহীর বিভাগীয় সামাজিক বন অফিস। এতে প্রায় ২০০ লটের কাজ নামে মাত্র শর্ত ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে ২য় ও ৩য় দরদাতাকে কমিশনে কাজ দিয়েছেন টেন্ডার বাঁছাই কমিটি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উচ্চ দরদাতা ঠিকাদাররাসহ সুবিধাভোগী। সরকার হারাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব।

নিলামের তালিকা তৈরীর সময় গাছ ব্যবসায়ী, কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সাথে আঁতাত করে শুভঙ্করের ফাকি রাখা হয়েছে। আবার গাছ কর্তন করার সময় লট প্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা করে ঘুষ নিচ্ছে বন কর্মকর্তা ও বন প্রহরীরা।

ভুক্তভুগি ঠিকাদাররা জানান, একটি লটের সর্বোচ্চ উচ্চ দরদাতা ৭৫ হাজার টাকায় কাজ পেয়ে নামে মাত্র ভুল ধরে সেই কাজ তৃতীয় দরদাতাকে ৫২ হাজার টাকায় দেওয়া হয়। এভাবেই প্রায় ২০০ লটের প্রায় ২ কোটি বা তার অধিক টাকার কাজে করা হয়েছে অনিয়ম। টেন্ডারের শর্ত ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে এই কাজগুলো দেওয়া হয়েছে নিম্ন দরদাতাদের। যেখানে টেন্ডারের মূখ্য শর্ত পূরণ থাকলেও নামে মাত্র ভুল বা গৌণ্য ভুলে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে কাজগুলো তৃতীয় বা দ্বিতীয় দরদাতাদের দেওয়া হয়েছে।

এতে সুবিধাভোগীরা যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন তেমন সরকার বঞ্চিত হচ্ছেন রাজস্ব থেকে।
২০০ লটের কাজে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে, যা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আহম্মদ নিয়ামুর রহমান থেকে শুরু করে কমিশন ভিত্তিতে দপ্তরটির সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ভাগবাটোয়া করে নিয়েছে বলে অভিযোগ ঐ সকল ঠিকাদারের। প্রতিটি লটে গড়ে ২০ হাজার টাকা করে নেওয়া হলেও ২০০ লটে ৪০ লক্ষ টাকা হয়। এখানে বিশাল অংকের ক্ষতির সমুখিন হচ্ছে ভূমিহীন সুবিধাভোগীরা। যদিও ৫৫% পাওয়ার কথা এই ভুমিহীন সুবিধাভোগীরা। কিন্তু উচ্চ দরদাতাকে কাজ না দেওয়ায় প্রতিটি কাজে কমেছে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এতে চরমভাবে হতাশগ্রস্ত সুবিধাভোগীরা।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, ফরেস্টার আমজাদ হোসেনসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী এই অনিয়ম আর দূর্নীতির সাথে প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। ডিএফও নিজে কোন টাকা হাতে না নিলেও ফরেস্টার আমজাদসহ অন্যান্যরা নিজ হাতে টাকা নেন।

এ বিষয় কথা বলতে সরাসরি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমানের সঙ্গে দেখা করলে ও জানতে চাইলে তিনি নিজেকে সহ অফিসের সকলেই সৎ এবং নিয়ম মাফিক কাজ হয়েছে বলে দাবি করেন। শর্ত ভঙ্গের কারণে কতটি কাজ ২য় ও ৩য় দরদাতাকে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে বলেন, আমি ও আমার অফিস নিয়ম অনুযায়ী কাজ করে, পারলে সংবাদ প্রকাশ করেন আমি পারলে দেখে নিবো। তথ্য নিতে হলে নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করে এখান থেকে তথ্য নিতে হবে বলেও উল্লেখ্য করেন তিনি।

সাংবাদিকরা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস থেকে বের হলে সেখানে বাবুল নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিকদের চার্জ করেন আপনারা এখানে কি করছেন। তিনি আরও বলেন এখানে আসছেন আমাকে চিনেন। এ সময় কথা না বাড়িয়ে সাংবাদিকরা চলে আসেন।

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে