Dhaka ০৪:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী পিএন স্কুলে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় হত্যা মামলার আসামি সুজন !

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৩৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৫৪ Time View

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ কর্মস্থলে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় এলাকার হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন রাজশাহী মহানগরীর সরকারী পিএন স্কুলের সুজন আল হাসান নামের এক মালি। ওই মামলায় যে দিন ও সময় দেখানো হয়েছে ওই দিন ওই সময় তিনি স্কুলের দ্বায়িত্বপালন করছিলেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে প্রত্যায়নপত্র দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুলাই নগরীর ভুগরইল এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশিদের সংঘর্ষে সেলিম নামের এক যুবক জখম হন।
পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় সের্লিমের পিতা আব্দুল হান্নান বাদি হয়ে ২১ জনের বিরুদ্ধে শাহমুখদুম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে সুজন আল হাসানকে।
এ ঘটনায় সুজনকে পুলিশ আটকও করে। পরে প্রায় তিনমাস জেল হাজতে থাকার পর তিনি জামিন পান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুলাই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভেন্যু হিসেবে সরকারী পিএন বালিকা বিদ্যালয় ব্যবহৃত হয়। ২৬ ও ২৭ জুলাই এ দুইদিন পরীক্ষা হওয়ার কারণে সুজন স্কুলে দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন। উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে হয়রানী করানোর জন্য মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সরকারী পিএন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৌহিদ আরার দেয়া প্রত্যায়ন পত্রে বলা হয়েছে ২০১০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সুজন আল হাসান স্কুলের মালী পদে কর্মরত রয়েছে। গত বছরের ২৬ ও ২৭ তারিখ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে সুজন এখানে দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। এলাকায় যে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে সে কোনভাবেই জড়িত না। কারণ ঘটনার সময় সুজন তো স্কুলে দ্বায়িত্ব পালন করছিল।
এদিকে স্থানীয় লোকজনও সুজনের আসামি হওয়ায় অনেকটাই বিস্মিত হয়েছেন। এমনকি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও বলছেন, সুজন ঘটনাস্থলেই ছিলোই না। তারপরও তাকে আসামি করা হয়েছে । এটা উদ্দেশ্যমূলক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নাসরিন নামের এক মহিলা বলেন, সুজন ভালো ছেলে। সে তো চাকরি করে। ওইদিন সে ঘটনাস্থলেই ছিলো না। মারামারি তো অন্যরা করেছে। সুজনকে হয়রানী করার জন্যই আসামি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
একই কথা বলেন নাসরিনের স্বামী গোপাল। তিনি বলেন, সুজন কোনভাবেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাকে ফাঁসানোর জন্যই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওইদিন আমার বাড়ির সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে।
অন্যদিকে মামলার স্বাক্ষী শরিফ বলেন, আমার জানা মতে সুজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আদালত যখন আমাকে স্বাক্ষী হিসেবে ডাকবে আমি এই কথাই বলবো।
স্বাক্ষী হান্নান বলেন, আমি ওই দিন এলাকাতেই ছিলাম না, তারপরও আমাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। আমি লোকজনের মুখে শুনেছি সুজন ঘটনার দিন স্কুলে ছিল।
মামলার অপর স্বাক্ষী হাকিম, কাইমুদ্দিন, মাইনুল, বাবু এবং সোবহানও একই কথা বলেন। তারা বলেন, ঘটনার সময় সুজন স্কুলে ডিউটি করছিল। সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, এই মামলায় সুজনকে উদ্দেশ্যেমূলক ও হয়রানী করার জন্যই আসামি হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে। সঠিক তদন্ত করে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতরা শাস্তি পাক এটাই আমরা চাই।
সুজনের দাবি এই ঘটনায় তাকে উদ্দেশ্যের্মূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। প্রশাসন সঠিক তদন্ত করুক। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা শাস্তিপাক এটি আমিও চাই। আমি যেহেতু ঘটনার সাথে জড়িত না সেহেতু আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

রাজশাহী পিএন স্কুলে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় হত্যা মামলার আসামি সুজন !

Update Time : ০১:৩৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ কর্মস্থলে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় এলাকার হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন রাজশাহী মহানগরীর সরকারী পিএন স্কুলের সুজন আল হাসান নামের এক মালি। ওই মামলায় যে দিন ও সময় দেখানো হয়েছে ওই দিন ওই সময় তিনি স্কুলের দ্বায়িত্বপালন করছিলেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে প্রত্যায়নপত্র দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুলাই নগরীর ভুগরইল এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশিদের সংঘর্ষে সেলিম নামের এক যুবক জখম হন।
পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় সের্লিমের পিতা আব্দুল হান্নান বাদি হয়ে ২১ জনের বিরুদ্ধে শাহমুখদুম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে সুজন আল হাসানকে।
এ ঘটনায় সুজনকে পুলিশ আটকও করে। পরে প্রায় তিনমাস জেল হাজতে থাকার পর তিনি জামিন পান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুলাই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভেন্যু হিসেবে সরকারী পিএন বালিকা বিদ্যালয় ব্যবহৃত হয়। ২৬ ও ২৭ জুলাই এ দুইদিন পরীক্ষা হওয়ার কারণে সুজন স্কুলে দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন। উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে হয়রানী করানোর জন্য মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সরকারী পিএন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৌহিদ আরার দেয়া প্রত্যায়ন পত্রে বলা হয়েছে ২০১০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সুজন আল হাসান স্কুলের মালী পদে কর্মরত রয়েছে। গত বছরের ২৬ ও ২৭ তারিখ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে সুজন এখানে দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। এলাকায় যে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে সে কোনভাবেই জড়িত না। কারণ ঘটনার সময় সুজন তো স্কুলে দ্বায়িত্ব পালন করছিল।
এদিকে স্থানীয় লোকজনও সুজনের আসামি হওয়ায় অনেকটাই বিস্মিত হয়েছেন। এমনকি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও বলছেন, সুজন ঘটনাস্থলেই ছিলোই না। তারপরও তাকে আসামি করা হয়েছে । এটা উদ্দেশ্যমূলক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নাসরিন নামের এক মহিলা বলেন, সুজন ভালো ছেলে। সে তো চাকরি করে। ওইদিন সে ঘটনাস্থলেই ছিলো না। মারামারি তো অন্যরা করেছে। সুজনকে হয়রানী করার জন্যই আসামি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
একই কথা বলেন নাসরিনের স্বামী গোপাল। তিনি বলেন, সুজন কোনভাবেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাকে ফাঁসানোর জন্যই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওইদিন আমার বাড়ির সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে।
অন্যদিকে মামলার স্বাক্ষী শরিফ বলেন, আমার জানা মতে সুজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আদালত যখন আমাকে স্বাক্ষী হিসেবে ডাকবে আমি এই কথাই বলবো।
স্বাক্ষী হান্নান বলেন, আমি ওই দিন এলাকাতেই ছিলাম না, তারপরও আমাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। আমি লোকজনের মুখে শুনেছি সুজন ঘটনার দিন স্কুলে ছিল।
মামলার অপর স্বাক্ষী হাকিম, কাইমুদ্দিন, মাইনুল, বাবু এবং সোবহানও একই কথা বলেন। তারা বলেন, ঘটনার সময় সুজন স্কুলে ডিউটি করছিল। সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, এই মামলায় সুজনকে উদ্দেশ্যেমূলক ও হয়রানী করার জন্যই আসামি হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে। সঠিক তদন্ত করে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতরা শাস্তি পাক এটাই আমরা চাই।
সুজনের দাবি এই ঘটনায় তাকে উদ্দেশ্যের্মূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। প্রশাসন সঠিক তদন্ত করুক। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা শাস্তিপাক এটি আমিও চাই। আমি যেহেতু ঘটনার সাথে জড়িত না সেহেতু আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক।