সানোয়ার আরিফ রাজশাহীঃ
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পযর্ন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন সম্পন্ন হতে হয়তো আরও বেশ কিছু বছর সময় লাগবে। রাজশাহী বা এই অঞ্চলের আশেপাশের মানুষ কি সারা জীবন এই জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে? এই লাইনটি ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন হলে এই অঞ্চলের মানুষ দেশের সবগুলো অঞ্চলের সাথে রেল সেবা যুক্ত করা সম্ভব হবে। তাছাড়া এই সিঙ্গেল লাইনটি বহু বছরের পুরানো একটি ব্রডগেজ লাইন। পুরনো লাইন হওয়ার কারনে ট্রেনের আঙ্কিত গতি উঠানো সম্ভব হয় না।
এখানে অনেকেই বলবেন ব্রডগেজ ডবল লাইন করা দরকার ডুয়েল গেজ নয়। ডুয়েল গেজ লাইন হলে এখনই আমরা সারা দেশের সাথে যুক্ত হতে পারবো, যা শুধু ব্রডগেজ লাইন করলে হবে না।
রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর মাত্র ৪০ কিলোমিটার রেলপথে ডুয়েলগেজ বসানো হলে রাজশাহী থেকেও দুই ধরণের ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সেক্ষেত্রে রাজশাহী থেকে সান্তাহার হয়ে বগুড়া, লালমনিরহাট, পাটগ্রাম পর্যন্ত আবার পার্বতীপুর থেকে রংপুর সরাসরি ট্রেন যেতে পারবে।
আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ না থাকায় রাজশাহী থেকে বগুড়া, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামের সাথে কোন রেলযোগাযোগ নেই।
আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ হলে রাজশাহী থেকে জামালপুর-ময়মনসিংহ হয়ে অথবা টঙ্গী হয়ে চট্টগ্রাম এবং সিলেট পর্যন্ত রাজশাহীর ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পন্য পরিবহণেও এই স্টেশন বড় ভূমিকা রাখবে কারণ সিলেট থেকে কয়লা ও পাথর, চট্রগ্রাম বন্দর থেকে বিভিন্ন পন্য, পাটগ্রাম-বুড়িমারী সীমান্ত থেকে কয়লা পন্য রাজশাহীতে সহজেই আসতে পারবে। এছাড়া আব্দুলপুর-রাজশাহী পর্যন্ত ডাবল লাইন হলে এ সকল বাড়তি ট্রেনের ক্রসিংয়ে কোন সমস্যা থাকবে না এবং এতে করে এই ৪০ কিঃমিঃ ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ও থাকবে না।
ডুয়েলগেজ রেলপথের মাধ্যমে এখান থেকে কন্টেইনারের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা করা হলে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারাই রাজশাহীতে পোশাক কারখানা গড়ে তুলবেন, কারণ ঢাকার আশে পাশে যেমন ময়মনসিংহের ভালুকা, গাজীপুরের কালিয়াকৈর এই সকল স্থান থেকে যানযট পেরিয়ে তৈরী পোশাক পণ্য কমলাপুর কন্টেইনার ডিপোতে আসতে যে সময় লাগে তার চেয়ে কম সময়ে রাজশাহী থেকে পণ্য ঢাকা হয়ে চট্রগ্রাম পৌঁছে যেতে পারবে। তাই রাজশাহীর সাথে রেল পথে সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ করতে পারলে শিল্পের যেমন বিকেন্দ্রীকরণ হবে, ঠিক তেমনি বেকারত্বের প্রকটতা হ্রাস পাবে। সেই সঙ্গে সারা দেশের অর্থের তারল্য প্রবাহ অর্থনীতির গতিময়তা সুষমভাবে প্রবাহিত হবে।
অন্য অঞ্চলের মানুষ অনেক কথাই বলবে কিন্তুু এটা আসলে রাজশাহীর মানুষের কতটা প্রয়োজন তা শুধু এ অঞ্চলের মানুষই অনুভব করতে পারে।