Dhaka ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ক্ষমতার দাপটে ভাড়াটিয়াকে হয়রানির শিকার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০৬:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মে ২০২১
  • ৭৬ Time View

মোঃ পাভেল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি:

রাজশাহী মহানগরীতে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদে তাঁকে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওয়াসে উদ্দিন আহমেদ পাভেল নামের এই ব্যক্তি সেমিপাকা একটি ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে মিষ্টির কারখানা গড়ে তুলেছেন। এককালীন বিনিয়োগ করেছেন ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এছাড়া নিয়মিত ভাড়াও দিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

পাভেল নগরীর বোয়ালিয়া থানা সংলগ্ন সাগরপাড়া মৌজায় ‘মিঠাই বাজার’ নামের একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। ২০০৬ সালে তিনি ওই এলাকার মৃত মোসলেম শাহ’র স্ত্রী সালেহা খাতুনের সঙ্গে তাঁর সেমিপাকা ভবনটি ভাড়া নেয়ার চুক্তি করেন। এ সময় তাঁকে এককালীন ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তখন মাসিক দুই হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, পাঁচ বছর পর পর ভাড়া ২০ শতাংশ বাড়বে। সে অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করছেন পাভেল।

প্রায় ছয় বছর আগে সালেহা বেগম মারা যান। এরপর পাভেল সালেহার মেয়ে ইলা বেগম ওরফে সায়েদা বেগমকে ভাড়া দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কে ভাড়া নেবেন, এই নিয়ে সালেহা বেগমের ওয়ারিশদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে পাভেল আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত ঠিক করে দেন সালেহা বেগমের ছেলে সালাহউদ্দিন রাজুকে ভাড়া দিতে হবে। এরপর থেকে পাভেল নিয়মিতই ভাড়া প্রদান করে আসছেন। হঠাৎ ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জমির ওয়ারিশেরা সেখানে ঘর তুলতে শুরু করেন। এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ দেন পাভেল। হঠাৎ গত বৃহস্পতিবার ইট আর মাটি ফেলে কারখানার চলার রাস্তা বন্ধ করে দেন সালাহউদ্দিন রাজু।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইট-মাটি ফেলে কারখানার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে পাভেলের ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। পাভেল বলেন, এখানে আমার অনেক টাকা বিনিয়োগ করা আছে। চুক্তিরও মেয়াদ শেষ হয়নি। এ অবস্থায় আমাকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি জানান, চুক্তিপত্রে সালেহা খাতুন স্বাক্ষর দিয়ে গেছেন। এর স্বাক্ষীও আছেন। এরপরও চুক্তিপত্র লঙ্ঘন করে তাঁকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন রাজু দাবি করেন, চুক্তিপত্রটি জাল। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে আমার বাবা মারা গেছেন। তাহলে সেই সময় থেকেই আমরা এই জমির ওয়ারিশ। আমার মা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর দিলেও সেটা আইনসম্মত নয়। তারপরও আমরা জেনেছি, চুক্তিপত্রটি জাল। এখন আমার জমিতে আমি ইট ফেলব, নাকি মাটি ফেলব সেটা আমার বিষয়।

তবে সালাহউদ্দিন রাজুর দাবিকে অসত্য বলেন ভুক্তভোগী পাভেল। তিনি শুক্রবার নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

রাজশাহীতে ক্ষমতার দাপটে ভাড়াটিয়াকে হয়রানির শিকার

Update Time : ০৩:০৬:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মে ২০২১

মোঃ পাভেল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি:

রাজশাহী মহানগরীতে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদে তাঁকে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওয়াসে উদ্দিন আহমেদ পাভেল নামের এই ব্যক্তি সেমিপাকা একটি ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে মিষ্টির কারখানা গড়ে তুলেছেন। এককালীন বিনিয়োগ করেছেন ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এছাড়া নিয়মিত ভাড়াও দিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

পাভেল নগরীর বোয়ালিয়া থানা সংলগ্ন সাগরপাড়া মৌজায় ‘মিঠাই বাজার’ নামের একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। ২০০৬ সালে তিনি ওই এলাকার মৃত মোসলেম শাহ’র স্ত্রী সালেহা খাতুনের সঙ্গে তাঁর সেমিপাকা ভবনটি ভাড়া নেয়ার চুক্তি করেন। এ সময় তাঁকে এককালীন ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তখন মাসিক দুই হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, পাঁচ বছর পর পর ভাড়া ২০ শতাংশ বাড়বে। সে অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করছেন পাভেল।

প্রায় ছয় বছর আগে সালেহা বেগম মারা যান। এরপর পাভেল সালেহার মেয়ে ইলা বেগম ওরফে সায়েদা বেগমকে ভাড়া দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কে ভাড়া নেবেন, এই নিয়ে সালেহা বেগমের ওয়ারিশদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে পাভেল আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত ঠিক করে দেন সালেহা বেগমের ছেলে সালাহউদ্দিন রাজুকে ভাড়া দিতে হবে। এরপর থেকে পাভেল নিয়মিতই ভাড়া প্রদান করে আসছেন। হঠাৎ ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জমির ওয়ারিশেরা সেখানে ঘর তুলতে শুরু করেন। এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ দেন পাভেল। হঠাৎ গত বৃহস্পতিবার ইট আর মাটি ফেলে কারখানার চলার রাস্তা বন্ধ করে দেন সালাহউদ্দিন রাজু।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইট-মাটি ফেলে কারখানার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে পাভেলের ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। পাভেল বলেন, এখানে আমার অনেক টাকা বিনিয়োগ করা আছে। চুক্তিরও মেয়াদ শেষ হয়নি। এ অবস্থায় আমাকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি জানান, চুক্তিপত্রে সালেহা খাতুন স্বাক্ষর দিয়ে গেছেন। এর স্বাক্ষীও আছেন। এরপরও চুক্তিপত্র লঙ্ঘন করে তাঁকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন রাজু দাবি করেন, চুক্তিপত্রটি জাল। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে আমার বাবা মারা গেছেন। তাহলে সেই সময় থেকেই আমরা এই জমির ওয়ারিশ। আমার মা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর দিলেও সেটা আইনসম্মত নয়। তারপরও আমরা জেনেছি, চুক্তিপত্রটি জাল। এখন আমার জমিতে আমি ইট ফেলব, নাকি মাটি ফেলব সেটা আমার বিষয়।

তবে সালাহউদ্দিন রাজুর দাবিকে অসত্য বলেন ভুক্তভোগী পাভেল। তিনি শুক্রবার নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।