রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

স্থানীয় প্রশাসনের বেধেঁ দেওয়া সময় অনুযায়ী শনিবার (১৫ মে) থেকে রাজশাহীতে আম পাড়া শুরু হয়েছে।

তবে, ঈদের ছুটির আমেজ কাটিয়ে আমের বাজার জমে উঠতে এখনো আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা জানান, কম বৃষ্টিপাত ও খরা পরিস্থিতির কারণে অল্প কিছু আম আগেই পেঁকে গেছে। ফলে ইতোমধ্যে অল্প পরিমাণ আম বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে, বিভিন্ন জেলা থেকে আমের ক্রেতারা এখনো রাজশাহী আসতে শুরু করেননি। আম পরিবহনের জন্যে শ্রমিকরাও এখনো কাজ শুরু করেননি। এসব কারণে এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে পুরোদমে আমের বাজার জমে ওঠার সম্ভাবনা কম।

রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারের ফল ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘লিচুর বাজারই তো সবে শুরু হলো, এখনই আম কিসের? সাধারণত লিচু শেষ হওয়ার কিছু আগে বাজারে আম উঠতে শুরু করে। সেই লিচু কেবল বাজারে আসতে শুরু করেছে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার বসে রাজশাহীর বানেশ্বরে। সেখানে গতকাল ছিল প্রায় আম শূন্য। অল্প কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী লিচুর পসরা সাজিয়ে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের দুই ধারে বসেছিলেন। গতকাল বিকেলে সেখানে কোথাও আম বিক্রি হতে দেখা যায়নি। তবে, বাজারের এক পাশে দেখা গেছে, কিছু যুবক ঝড়ে পড়া কাঁচা আম বাজারে নিয়ে এসেছেন বিক্রি করতে। ঝড়ে পড়া আম বিক্রি হচ্ছে তিন শ টাকা মণ দরে।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমের ব্যবসা জমে উঠলে যেখানে প্রতিদিন শত শত আমচাষি রিকশা বা ভ্যানে টনকে টন আম বোঝাই করে নিয়ে আসেন বানেশ্বর বাজারে। সেখানে গতকাল অল্প কয়েকজন আমচাষি অল্প পরিমাণ আম বাজারে এনেছিলেন সকালের দিকে।

তারা বলেন, আজকে সংগ্রহ করা আমগুলো বিভিন্ন আড়তে প্যাকেট করে রাখা হয়েছে। গাড়ি চলাচল শুরু হলে সেগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে।

গত ৬ মে রাজশাহী জেলা প্রশাসন, আম বিশেষজ্ঞ, চাষি ও ব্যবসায়ীদের এক সভায় ১৫ মে থেকে গুটি জাতের আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করেদেয়।

গোপালভোগ জাতের আম ২০ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রানিপছন্দ ২৫ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাত ২৮ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে। এ ছাড়া, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ নামানো যাবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বলেন, ‘গুটি আম সবার আগে পাকে। আঁশযুক্ত এই আমের স্বাদ তুলনামূলক কম, তাই খুব জনপ্রিয় হয়নি। জনপ্রিয় গোপালভোগ, লখনা, ক্ষীরশাপাত, ল্যাংড়া ও ফজলি জাতগুলো দেরিতে পাকে। তবে, খরার কারণে এ বছর আম পাকতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। তাপদাহের কারণে আমের আকারে ও ফলনেও প্রভাব পড়তে পারে।’

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আম হয়েছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হেক্টর প্রতি ১১ দশমিক ৯ টন ধরে মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দাড়ায় দুই লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে