রঙিন ফলমূল-শাকসবজি থেকে যে পুষ্টিবৈচিত্র্য আমরা পাই, এককথায় তা অতুলনীয়।

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিদিন পাঁচ থেকে নয় প্রকারের ফল ও শাকসবজি খান। এর পর্যাপ্ত ভিটামিন বি, সি এবং অন্যান্য ভিটামিন-মিনারেল, আঁশ ও বার্ধক্য-প্রতিরোধী এন্টি-অক্সিডেন্ট বাড়াবে আপনার রোগ প্রতিহত করার ক্ষমতা। সুস্থ থাকবেন আপনি।

প্রত্যেক ভিন্ন রংবিশিষ্ট ফল-সবজির মধ্যে রয়েছে দারুণ সব স্বাস্থ্য-হিতকর উপাদান। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—দৈনন্দিন খাবারে ফল-সবজির রংধনু সাজান। প্রাকৃতিক এই খাদ্যসম্ভার দেহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে করবে অধিকতর শক্তিশালী। তবে এসব খাবার যত কাঁচা এবং অর্ধসেদ্ধ অবস্থায় খাওয়া যাবে, কার্যকারিতার সম্ভাবনাও তত বেশি।

লাল: টমেটো, তরমুজ, ডালিম, স্ট্রবেরি, আপেল, লাল মূলা ও শালগম, লাল বাঁধাকপি, লাল কিডনি বিন, গোলমরিচ ইত্যাদি। এ ধরনের খাবারে রয়েছে লাইকোপিন ও অ্যান্থোসায়ানিন, যা প্রোস্টে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, দেহাভ্যন্তরে টিউমার ও উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি হ্রাস করে। ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিনাশ ঘটায়। আর্থ্রাইটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অস্থিসন্ধির প্রদাহ কমায়।

কমলা ও হলুদ: আম, কমলা, পেঁপে, আনারস, কলা, কামরাঙা, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা, স্কোয়াশ ইত্যাদি প্রচুর বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ এবং পটাশিয়াম পাওয়া যায় এসব খাবারে।

সাদা: মাশরুম, ফুলকপি, সাদা মূলা ও শালগম, রসুন ইত্যাদি। এ রংয়ের ফল-সবজিগুলো দেহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দারুণ উদ্দীপ্ত করে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ সৈনিক এবং ক্যান্সার প্রতিরোধী ন্যাচারাল কিলার সেলের (বি ও টি সেল) কর্মক্ষমতা বাড়ায়। ফলে অন্ত্র, স্তন, প্রোস্টেট ও হরমোনজনিত ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। ঘন ঘন জ্বর, সর্দি, ফ্লু ও ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা আছে যাদের, তাদের জন্যে সাদা রংবিশিষ্ট ফল সবজি বেশ উপকারী।

সবুজ: পালংসহ নানা ধরনের শাক, লেটুস, লাউ, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, করলা ইত্যাদি। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা রাখে বলে এগুলো ঘুরেফিরে খাওয়া দরকার প্রতিদিনই। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ম্যাগনেশিয়াম পটাশিয়াম আয়রন রয়েছে এসব খাবারে। হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। আরো আছে চোখের জন্যে উপকারী ‘ল্যুটিন’ ও ‘জিয়াক্স্যানথিন’। মনে রাখতে হবে, সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজির রং যত গাঢ় হবে পুষ্টি ও উপকারিতাও মিলবে তত বেশি।

নীল ও বেগুনি: জাম, কিশমিশ, রঙিন আঙুর, পেঁয়াজ, বেগুন, বিট ইত্যাদি। হজমশক্তি বাড়ায়। পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। বয়সজনিত স্মৃতিভ্রষ্টতার ঝুঁকি কমায়। বার্ধক্যগতিকে ধীর করে। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ-ঝুঁকি কমায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে