বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৮ সালে ক্যান্সারের কারণে প্রায় ৯.৬ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে। বেদনাদায়ক এই রোগটি বিশ্বের দ্বিতীয় মৃত্যুর কারণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন হঠাৎ করে ক্যান্সারের প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে শুধুমাত্র আমাদের জীবনধারা এবং খাদ্যাভাসের কারণে। 

প্যাকেটজাত খাবার, ভেজাল খাবারের গ্রহণ করার প্রবণতা দিন দিন বেড়ে চলছে। আর সেটাই ক্যান্সারের মূল কারণ হয়ে উঠেছে। আরও কিছু নির্দিষ্ট খাবার রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের কারণ হয়ে ওঠে। তাই শুরুতেই যদি বিষয়টি অবগত হওয়া যায় এবং সেই সব খাবার খাওয়া বন্ধ রাখা যায় তাহলে ক্যান্সার থেকে বাঁচা যেতে পারে।

এবার জেনে নিন যে পাঁচটি খাবার ক্যান্সারের কারণ-

প্যাকেটজাত দ্রব্য
প্যাকেটজাত যেকোন খাবার থেকে দূরে থাকুন। প্যাকেটজাত খাবারে সিনথেটিক বা প্লাস্টিকের উপাদান মিশে যায়। বাজারে যেসব বোতলজাত পানীয় আছে, সেগুলোতে ফরমালডিহাইড নামের ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকে, যা প্রোস্টেট ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ক্যান্সারের জন্ম দিতে পারে।

প্যাকেটজাত খাবার ফ্রিজে রেখে দিলে বা বাসায় এনে রাখলে তার মান, স্বাদ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। খাবারের প্যাকেট তৈরিতে যে সিনথেটিক কেমিক্যাল তাকে, তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের উপাদান শরীরে স্থায়ী প্রভাব ফেলে।

সাদা ময়দা
সাদা ময়দা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রিফাইন্ড ময়দায় রঙ করার জন্য রাসায়নিক পদার্থ দেওয়া হয়ে থাকে কিছু ক্ষেত্রে। অন্য দিকে ময়দা রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। ময়দা সাদা করার জন্য ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করা হয়। দ্য এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির সূত্র মতে, ক্লোরিন গ্যাস মানবদেহের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী। ক্যান্সার কোষ বা টিউমার বৃদ্ধিসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি করে।

সব্জির তেল

আমরা রান্না করা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করতে পছন্দ করি। তা সে সবজি বা স্বাস্থ্যকর যে খাবারই হোক। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে, এটি আপনার পক্ষে ভাল নয়। এটি একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা উত্তোলন করা হয়, যা অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

সয়াবিন তেল, সূর্যমূখী তেল ও কর্ন তেল নিম্ন তাপমাত্রায় রান্নার জন্য উপযোগী, কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার জন্য অনুপযোগী। যারা দৈহিক পরিশ্রম কম করেন তাদের জন্য পাম তেল, সরিষার তেল, বাদাম তেল উপযোগী নয়।

রেড মিট
বিশেষজ্ঞদের মতে অতিরিক্ত রেড মিট খেলে অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার বা কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের সম্ভাবনা প্রবল থাকবে। ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য প্রতিদিন রেড মিট খাওয়া বাদ দিতে হবে। দি ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ড এবং অ্যামেরিকান ইন্সটিটিউট ফর ক্যান্সার রিসার্চ প্রকাশ করেছে, যেসব মানুষের খাবারে লাল মাংসের আধিক্য থাকে, তাদের প্যানক্রিয়াস, পাকস্থলী, ফুসফুস, উওসোফেগাস, ব্রেস্ট ও এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

লো ফ্যাট প্রোডাক্ট
যেসব প্রোডাক্টে ‘লো-ফ্যাট’লেখা থাকে, সেই সমস্ত প্রোডাক্ট থেকেও সাবধান থাকুন। কারণ, কৃত্রিম সুইটেনার ক্যান্সারের কারণও হতে পারে।

স্থূলতার ভয়ে আজকাল অসংখ্য মানুষ চিনির পরিবর্তে ডায়েট, জিরো ক্যালরি এবং লো-ক্যালরির কৃত্রিম চিনিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ক্যালরিবিহীন কৃত্রিম চিনি ওজন কমাতে বা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করলেও ক্যান্সার তৈরিতেও ভূমিকা রাখে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে