ক্রীড়া ডেস্ক :

বলিভিয়াকে আজ হেলায় উড়িয়ে দিল আর্জেন্টিনা। আর সেইসঙ্গে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষস্থানটা ধরে রাখল নীল-সাদা ব্রিগেড। জোড়া গোল করলেন লিওলেন মেসি। বলিভিয়াকে ৪-১ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা।

কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে খেলতে হবে মেসিদের।

হোক না সম্মানরক্ষার ম্যাচ। আজকের দিনটা যে লিওনেল মেসির সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ম্যাচের প্রথমার্ধে নিজে গোল করলেন এবং করালেনও একটা। চলতি কোপা আমেরিকায় ইতিমধ্যেই মেসির দল কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে। অন্যদিকে বলিভিয়া ছিটকে গেছে টুর্নামেন্ট থেকে। এই পরিস্থিতিতে শোনা যাচ্ছিল, আজকের ম্যাচে নাকি নাও খেলতে পারেন মেসি। কোচ তাঁকে বিশ্রাম দিতে চাইলেও সেটা তিনি নিতে চাননি। আজ দেশের হয়ে তিনি সবথেকে বেশি ম্যাচ খেললেন। ইতিপূর্বে এই রেকর্ডটা ছিল জেভিয়ার মাসচেরানোর দখলে। তিনি ১৪৭টি ম্যাচ খেলেছিলেন। আজ মেসি ১৪৮তম ম্যাচ খেলে ফেললেন।

আজ শুরু থেকেই দুরন্ত ছন্দে দেখতে পাওয়া যায় আর্জেন্টিনাকে। ৬ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন আলেয়ান্দ্রো গোমেজ। কোরিয়া অসাধারণ একটা পাস বাড়ান মেসির পায়ে। মেসি খানিকটা চিপ করে বলটা বলিভিয়ার রক্ষণভাগের ওপর দিয়ে গোমেজের কাছে পাঠিয়ে দেন। তারপর আলেয়ান্দ্রো অসাধারণ একটা ভলিতে বলটা নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে পাঠিয়ে দেন।

এরপর ৩১ মিনিটে পেনাল্টি অর্জন করে আর্জেন্টিনা। বক্সের ভিতরে জাস্টিনিয়ানো গোমেজকে একটু কড়া ট্যাকল করে ফেলেন। কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রেফারি। তিনি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিতে কোনও ভুল করেননি। পেনাল্টি নিতে আসেন দলের অধিনায়ক মেসি। ঠান্ডা মাথায় তিনি বলটাকে বলিভিয়ার জালে জড়িয়ে দেন।

৪২ মিনিটে ফের গোল করলেন মেসি। এই নিয়ে তিনি দেশের হয়ে ৭৫তম গোলটা করে ফেললেন। আর সেইসঙ্গে আর্জেন্টিনাও এগিয়ে গেল ৩-০ ব্যবধানে। অ্যাগুয়েরোর বাড়ানো বড় ধরে ফেলেন মেসি। তিনি বল নিয়ে প্রথমে দৌড়তে শুরু করেন। এদিকে বলিভিয়ার গোলরক্ষক থালাস লাম্পেও অনেকটা সামনের দিকে এগিয়ে এসেছিলেন। সেটা মেসির চোখ এড়ায়নি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বলটাকে চিপ করে দেন। লাম্পের চুপচাপ দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।

এই পরিস্থিতিতে শুরু হয় দ্বিতীয়ার্ধের খেলা। এই প্রসঙ্গে আপনাদের একটা তথ্য দিয়ে রাখি। কোপা আমেরিকার শেষ ছ’টা টুর্নামেন্টে চারবার রানার্স আপ হয়েছে আর্জেন্টিনা। ফলে এই মরশুমে ট্রফিটাকে পাখির চোখ হিসেবেই দেখছেন লিওনেল মেসি। আজকের ম্যাচ আর্জেন্টিনার কাছে অতটাও কঠিন ছিল না। কারণ চলতি টুর্নামেন্টে একটাই গোল করেছে বলিভিয়া। প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে পেনাল্টি থেকে একটাই মাত্র গোল করেন স্যাভেদরা।

যাইহোক নিজস্ব ছন্দেই এগোতে থাকে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা। ৫১ মিনিটে হ্য়াটট্রিক করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু, অল্পের জন্য শটটা অফসাইড হয়ে যায়। তবে আর্জেন্টিনা বারবার আক্রমণ করেই যাচ্ছে। ৫৬ মিনিটে গোমেজকে তুলে নিয়ে আলভারেজকে নামালেন আর্জেন্টিনার কোচ লিও স্কালোনি। ৬০ মিনিটে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় গোলটা করে ফেলে বলিভিয়া। গোলদাতা সেই আরউইন মারিও স্যাভেদরা। জাস্টিনিয়ানো স্কোয়্যার করে স্যাভেদরার দিকে বল বাড়িয়ে দেন। দেখতে দেখতে প্রথম টাচেই ফ্রাঙ্কো আরমানিকে পরাস্ত করেন স্যাভেদরা।

তবে পালটা কামড় দেয় আর্জেন্টিনাও। মাঠে নেমেই কাজের কাজটা করে ফেললেন লাওতারো মার্টিনেজ। ৬৫ মিনিটে তাঁর পা থেকে গোল এল। মাঠে নামার মাত্র ১ মিনিটের মধ্যেই তিনি গোল করলেন। লা অ্য়ালবেসেলেস্তে এগিয়ে গেল ৪-১ গোলে। এই নিয়ে দেশের জার্সি গায়ে ১২টি গোল করলেন মার্টিনেজ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে যথেষ্ট নজর কাড়লেন বলিভিয়ার গোলরক্ষক কার্লোস লাম্পে। বেশ কয়েকটা চ্যালেঞ্জিং সেভ করেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে