ক্রীড়া ডেস্ক:
শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হলেও মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে শেষ পর্যন্ত স্বস্তি নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, মুশফিক-লিটনের ৬ষ্ঠ উইকেটে রেকর্ড জুটিতে দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৭৭ রান। টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি পান মুশফিকুর রহিম। আর তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন লিটন দাস।
ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে লড়লেন তাঁরা। দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ঢাকা টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেললেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। ইনিংস মেরামতই শুধু করলেন না, দাঁড় করালেন স্বস্তির জায়গায়। নিজেদের মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস ভাগ্য সাথেই ছিলো বাংলাদেশের। ঝলমলে রোদেলা সকালেও বাংলাদেশের শুরুটা এত অন্ধকার হবে সেটা হয়তো কারো চিন্তায়ও ছিলো না।
উইকেটে গিয়ে সেট হওয়ার আগেই লঙ্কান বোলারদের তোপে তছনছ বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইন। মাহমুদুল হাসান ও তামিম ইকবাল ফেরেন শুণ্য রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক মুমিনুল হকও ব্যর্থতার বলয় থেকে বেরুতে পারেননি। বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুমে তখন কালো মেঘের ছায়া। মাঠে থাকা আইসিসির চেয়ারম্যানও প্রেসিডেন্ট বক্সে বসে দেখছিলেন টেস্টে বাংলাদেশ দলের করুণ অবস্থা।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আউট হন ব্যক্তিগত রান খাতা খোলার আগেই। তাতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। ২৪ রানে প্রথম ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুম তখন বিধ্বস্ত।
খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। দিনের বাকিটা সময় ম্যাচের চিত্রনাট্য লিখেছেন এই দু’জন। দৃঢ় মনোবল নিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন দলের রান খাতাকে। সফরকারী দলের বোলারদের বিপক্ষে খেলেছেন আস্থা নিয়ে।
উইকেটে টিকে থাকার পাশাপাশি স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ছেন দু’জন। মুশফিকের তুলনায় বেশি আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন লিটন। একবার জীবন পাওয়া লিটন দ্বিতীয়বার অতিথি দলের বোলারদের কোন সুযোগই দেননি।
চা বিরতির পর টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি পান তিনি। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি তার প্রথম টেস্ট শতক। দিনের শেষভাগে টেস্ট ক্যারিয়ারে নবম সেঞ্চুরি পান মুশফিকুর রহিম। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে টানা দুই ইনিংসে এই প্রথম সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখালেন মুশফিক। ১৯৫৯ সালে ঢাকার বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ২৫ রানের নিচে ৫ উইকেটে হারিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ ৮৬ রানের জুটি গড়েছিলেন পাকিস্তানের ওয়ালিস ম্যাথিয়াস ও সুজাউদ্দিন। মিরপুরে প্রথম দিনে সেই রেকর্ড ভেঙ্গে মুশফিক ও লিটন যোগ করেন ২৫৩ রান। ৬ষ্ঠ উইকেটে যা দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। মুশফিক ১১৫ ও লিটন ১৩৫ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন।