চীনের ইন্টারনেট ব্যবসার সিংহভাগ দখল করে নিয়েছেন আলিবাবা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। কিন্তু ভারতে সম্ভবত অমন একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ পাবে না কেউ।

১৩০ কোটি মানুষের দেশে বিশাল ইন্টারনেট বাজারে আগামী দিনে রিলায়েন্সের মুকেশ অম্বানীর প্রতিযোগী হয়ে দাঁড়াতে পারে টাটা সনস। ঐ সংস্থা এখন ইন্টারনেট ব্যবসা শুরু করার জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজছে।

খবর ব্লুমবার্গ নিউজ ও দ্যা ওয়াল’র। টাটা সনস প্রাইভেট লিমিটেডের মূল্য ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। কফি থেকে গাড়ি, নানা পণ্যের ব্যবসা করে ঐ হোল্ডিং কোম্পানি। এবার রিলায়েন্স কর্তা মুকেশ অম্বানীর মতো তারাও দেশবিদেশে বিনিয়োগকারীর সন্ধান করছে। ডিজিটাল ব্যবসায় ইতোমধ্যে ২ হাজার কোটি ডলার বা প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ এনেছেন মুকেশ। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আছে ফেইসবুক ইনকর্পোরেটেড, আলফাবেট ইনকর্পোরেটেড এবং সিলভার লেক পার্টনারস। ইদানীং খুচরা ব্যবসার জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারী খুঁজছেন মুকেশ। সে ক্ষেত্রে সম্ভবত বিনিয়োগ করতে চলেছে অ্যামাজন ডট কম।

১৫২ বছরের পুরানো টাটা গ্রুপ এখন ‘সুপার অ্যাপ’ নামে এক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের জন্য নানা সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে। তার মধ্যে ওয়ালমার্ট ইনকর্পোরেটেডের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা কিছুদূর এগিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ঐ অ্যাপের মাধ্যমে আগামী দিনে ফ্যাশন, লাইফস্টাইল, ইলেকট্রনিক্সের সরঞ্জাম, খাবার, মুদির দোকানের জিনিসপত্র, বিমা, অন্যান্য আর্থিক পরিষেবা এবং শিক্ষা জগতের নানা পরিষেবা দিতে চায় টাটা। সেখানে ২৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারে ওয়ালমার্ট।

ইন্টারনেটের ব্যবসায় এখনও পর্যন্ত টাটার চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে আছেন অম্বানী। ৬৩ বছর বয়সী মুকেশ অম্বানীর ফোর জি টেলিকমিউনিকেশনস নেটওয়ার্কের গ্রাহক সংখ্যা ইতোমধ্যে ছুঁয়েছে ৪০ কোটি। ইতোমধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় রিটেল চেনের মালিক হলেন মুকেশ।

অন্যদিকে ৮২ বছর বয়সী রতন টাটা বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ১০০ ব্যবসায়। টেটলে টি থেকে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার, টাটার সব পণ্যেরই সাপ্লাই চেন আছে ভারতে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভারতে হয়তো আলিবাবার ধাঁচে চলতে চাইবেন টাটা। তাঁদের কোনও অ্যাপে টাটা সনসের প্রতিটি পণ্য মিলবে ডিসকাউন্টে। আলিবাবা তাদের দু’টি অ্যাপ টি-মল এবং তাওবাও-এর মাধ্যমে ওইভাবে ব্যবসা করে। তার ওপরে ওয়ালমার্ট যদি টাটার অ্যাপে বিনিয়োগ করে তাহলে টাটাও ওয়ালমার্টের ই-কমার্স ওয়েবসাইট ফ্লিপকার্ট থেকে সুবিধা পেতে পারে।

কনজিউমার বিজনেসে অম্বানীর চেয়ে বেশিদিনের অভিজ্ঞতা আছে টাটার। যদিও তার সস্তা গাড়ি তৈরির প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। এক সময় টাটা গ্রুপ মুকেশ অম্বানীর জিও ফোর জি নেটওয়ার্কের গুরুত্ব বুঝতে পারেনি। তাই তাদের মোবাইল পরিষেবা দেওয়ার ব্যবসা হাতছাড়া হয়েছে।

আগামী দিনে ভারতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে পারে দু’টি সুপার অ্যাপ। ভোক্তাদের বেশিরভাগই অবশ্য ডাটা ডাউনলোড করবেন স্মার্টফোনে। সেখানে স্টোরেজের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে