সুবীর মণ্ডল বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

বাঁকুুুড়াজেলা হল ভারতের পপশ্চিমবঙ্গ   রাজ্যের মেদিনীপুর বিভাগের অন্তর্গত পাঁচটি জেলার অন্যতম একটি জেলা। এই জেলার উত্তরে ও পূর্বে পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণে পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ-পূর্ব হুগলি এবং পশ্চিমে পুরুলিয়া জেলা। দামোদর নদ বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলাদুটিকে পৃথক করেছে। এই জেলাকে “পূর্বের বঙ্গীয় সমভূমি ও পশ্চিমের ছোটোনাগপুর মালভূমির মধ্যকার সংযোগসূত্র” বলে বর্ণনা করা হয়। জেলার পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভাগের জমি নিচু ও উর্বর পলিমাটিযুক্ত। পশ্চিম ভাগের জমি ধীরে ধীরে উঁচু হয়েছে। ১৯৫৬  সালে, খাতড়া শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মুকুটমণিপুরে একটি বিশালাকার জলাধার প্রকল্প গৃহীত হয়। এই জল প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের তদনীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ড. বিধানচন্দ্র রায়ের পরিকল্পনা।
বাঁকুড়া, পুরুলিয়াপশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার প্রায় ৮,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জলসেচের জন্য এই প্রকল্প গৃহীত হয়। জলাধার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বনগোপালপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চল একটি উল্লেখযোগ্য একটি আদর্শ হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা যেখানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধটি মুকুট বা “মুকুট” এর মতো রহস্যময় টিলা দ্বারা বেষ্টিত। দুটি নদীর সঙ্গমে অবস্থিত, এটি সবুজ রঙের মোড়কযুক্ত “রাঙ্গামাটি” এর নেকলেস আকৃতির বাঁধের জন্য বিখ্যাত। নীল জলের নির্মল প্রকৃতি এবং দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যে ধন্য, মুকুটমণিপুর হল সবুজ বন এবং টিলা ঘেরা এক লুকানো সম্পদ মুকুটমণিপুর বাঁধটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ হিসাবে বিবেচিত হয়। ভিড় এবং বাণিজ্যিকীকরণ থেকে দূরে মুকুটমণিপুরের একটি অংশ এখনও উপজাতীয় সংস্কৃতির গন্ধে বাস করে এবং পর্যটকদের দর্শনীয় দর্শনীয় স্থান দেয়। এটি ফটোগ্রাফির জন্য স্বপ্নের গন্তব্য হিসাবেও বিবেচিত হয়। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, ‘বাঁকুড়ার রানী’ আপনার ব্যস্ত সময়সূচির একঘেয়েমি ভাঙার জন্য আপনাকে ছুটির এক নিখুঁত সময় অফার করছে। আপনি যদি ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন তবে আপনার জন্য একটি স্বপ্নের গন্তব্য। এটি বাজি যে আপনি দুর্দান্ত ফ্রেমগুলি ক্যাপচার থেকে নিজেকে প্রতিহত করতে মুকুটমনিপুর একটি  জলাধার।
অপরূপ সৌন্দর্যের আধার। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সচেতনতামূলক প্রচার চলেছে  জলাধার থেকে জল ছাড়ার।
কয়েক দিন ধরে একনাগাড়ে ভারী বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল সমগ্র জেলায়। পাশের জেলা পুরুলিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে প্রচুর। সেই কারণেই  মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের জলের পরিমাণ  বৃদ্ধি পেয়েছে। জল বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের  নদীত । অতিরিক্ত জল ছাড়া আর কিছুই করার নেই। সকাল থেকে  প্রশাসন মাইকে প্রচার  করতে  শুরু  করেছে, যাতে  জল ছাড়ার বার্তা   সাধারণ মানুষ  জানতে পারে।  নদী  সংলগ্ন এলাকায়  স্থানীয় প্রশাসন ও  পঞ্চায়েত  মানুষকে  সচেতন করার কাজ শুরু  করেছে। একসঙ্গে জল ছাড়লে  জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে  না পড়ে ,সেই কারণেই  সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
গতকাল  রাত ১০ টায় কংসাবতী জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। আপাতত ৫০০০ কিউসেক জল ছাড়া হবে। অবস্থা বুঝে পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে কংসাবতী প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক জানিয়েছেন। জলাধার  জলের স্তর ক্রমশ বাড়ছে।মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সকালের আবহাওয়া ভাল থাকলেও এখন  আবার  বৃষ্টি  চলছে। নদীর তীরবর্তী  মানুষের মধ্যে ভয় দূর করার চেষ্টা করছে মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে