মালয়েশিয়ার সরকার সে দেশের আদালতের আদেশ অমান্য করে ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আবেদন অগ্রাহ্য করে মিয়ানমারের ১০৮৬ জন নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।
তবে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের মধ্যে কোন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু অথবা শরণার্থী নেই বলে জানিয়েছে কুয়ালালামপুর সরকার।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ফেরত পাঠানো বর্মীদের মধ্যে কিছু সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর লোকজনও রয়েছেন যারা মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
তারা বলছে, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিয়েছে। তাই এখন তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়ায় তারা আরও বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন। কিন্তু মালয়েশিয়া বলছে, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা শরণার্থী না, এবং তারা অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেছে।
বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, মালয়েশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে মিয়ানমার নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজে করে এসব অভিবাসন প্রত্যাশীকে ফেরত পাঠানো হয়।
এর আগে কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেছিল।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক খাইরুল জাইমি দাউদ এক বিবৃতিতে জানান, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা সবাই ফেরত যেতে স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছেন, কাউকে জোর করে পাঠানো হয়নি। যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে কোন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু অথবা শরণার্থী নেই বলেও তিনি বলেন।
তিনি এর আগে মালয়েশিয়ার এক বিবৃতির প্রতিধ্বনি করেছেন যেখানে বলা হয়েছিল, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এ যারা নাম লিপিবদ্ধ করেছেন তাদের কাউকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না।
গোড়ার দিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ১২০০ বন্দিকে ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু পরে তাদের সংখ্যা কেন কমলো তা পরিষ্কার হয়নি।
এই বহিষ্কারের ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটলো যখন ১৩০টি এনজিও মিয়ানমারের সামরিক সরকারের কাছে সব ধরনের সামরিক অথবা সামরিক-বেসামরিক কাজে ব্যবহৃত হয় এমন সব যন্ত্রপাতি বিক্রি বন্ধের ডাক দিয়েছে।
এক খোলা চিঠিতে এনজিওগুলি বলছে, এসব যন্ত্রপাতি বিক্রি বা সরবরাহ করা হলে সেগুলো মিয়ানমারের নাগরিকদের ওপর নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অথবা কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে দিয়েছে।
তবে সে দেশে সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দুই দেশ চীন এবং রাশিয়া অতীতে নিষেধাজ্ঞার ডাক উপেক্ষা করেছে, এবং এখনও সেটা করবে না বলে জানিয়েছেন বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সংবাদদাতা জনাথান হেড।