মোহাম্মাদ আলী, মোংলা প্রতিনিধি:
মোংলার গর্বিত সন্তান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কবি হিমেল বরকতের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মোংলা মিঠাখালী বাজারের ফুটবল মাঠে সোমবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় তৃতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন,মোংলা পৌর মেয়র জুলফিক্কার আলী,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, মরহুমের দুলাভাই ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মাহমুদ হাসান ছোট মনি, মোংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এইচ এম দুলাল, মিঠাখালী ইউপি আ-লীগের সাধারণ সম্পাদক মেঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সাংবাদিক আবু হোছাইন (সুমন) সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনূর সরদার, মরহুমের রড় ভাই ডা. সাইফুল্লাহ্, সুবির ওবায়েদ, সাংবাদিক সুমেল সারাফাত সহ বিভিন্ন সামাজিক পেশাজীবি রাজনৈতিক নেতা-কর্মিরা সহ মরহুমের স্বজন ও বন্ধুরা।
জানাযার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা তৈয়েবুর রহমান।
কবি হিমেল বরকত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসা থেকে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সময় তার হার্টঅ্যাটাক হয়। এর পর পরই তাকে রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ওই দিন রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রবিবার রাত সাড়ে ৪ টায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
পরে তার মরদেহ ধানমন্ডিতে তার বড় বোনের বাসায় নেয়া হলে জোহরের নামাজের পর পাশের মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাকে নেয়া হয় তার প্রিয় ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সেখানে বিকাল সাড়ে ৩ টায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে।সেখান থেকে সন্ধ্যায় এম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ জন্মস্থান মোংলায় আনা হয়। সোমবার সকাল ১০ টায় হিমেল বরকতের তৃতীয় জানাজায় অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহসহ কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লী।
উল্লেখ্য,অধ্যাপক ও কবি হিমেল বরকত বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সফল গবেষক। কবি রুদ্রের মৃত্যুর পর তার সৃষ্টিকর্মকে দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। হিমেল বরকত একাধারে কবি, উপন্যাসিক, ছড়াকার, গবেষক ও বহু গ্রন্থের প্রণেতা। দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও লেখনীর মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছেন।
চোখে ও চৌদিকে’, ‘দশমাতৃক দৃশ্যাবলি’ এবং ‘বৈশ্ববিদ্যালয়’ কবি হিমেল বরকতের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। ‘আদিবাসী কাব্যসমগ্র’, ‘চন্দ্রাবতীর রামায়ণ’ ও ‘প্রাসঙ্গিক পাঠ’ তার সম্পাদিত বই। এ ছাড়াও তিনি ‘প্রান্তস্বর’ এবং ‘প্রান্তভাবনা’ নামের কবির দুটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে।
সুন্দরবন নিয়েও তিনি গবেষনাগ্রন্থ রচনা করেছেন। সম্প্রতি তিনি বাংলা পথকবিতাবিষয়ক একটি গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেছেন।সাহিত্য অঙ্গনের ব্যাক্তি মহল মনে করেন কবি হিমেল বরকতের অকাল মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যে অফুরন্ত ক্ষতি হয়েছে যেটা পুষিয়ে নেয়ার নয়।