Dhaka ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাছের বাড়তি দামে ক্রেতাদের অস্বস্তি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:১৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৭ Time View

বাজারে মুরগি, সবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম ওঠা-নামা করলেও মাছের দাম বাড়তিই রয়ে গেছে দীর্ঘদিন ধরে। বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। এতে করে ক্রেতাদের অস্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লারের দাম কিছুটা কমেছে। দেশি, কক, সোনালী মুরগি এবং গরু, খাসির মাংসের দাম খুচরা বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে সব মাছের দাম বাড়তি।

আজকের বাজারে পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা প্রতি কেজি, রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ৩৫০ টাকা, পাবদার কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, টেংরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, শিং মাছ আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, আঁইড় মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, মলা মাছ কেজি ৪০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, সোনালি মুরগি আগের মতোই প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, কক প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাসুদ রানা। তিনি বলেন, মাংস, মুরগি, ডিম, সবজিসহ অন্যান্য সব পণ্যের দাম ওঠা-নামা করে কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু মাছের বাজার। মাছের দাম কমছে না, দীর্ঘদিন ধরে মাছের দাম বেশি যাচ্ছে। কোনো সময়ের জন্য মাছের দাম কমতে দেখা যায়নি। আজকের বাজারেও সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি দেখলাম। এত দাম যদি হয়, তাহলে তো সাধারণ মানুষ মাছ কিনে খেতে পারবে না।

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা হাবিবুর রহমানও একই ধরনের অভিযোগ জানিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষ সাধারণত তেলাপিয়া, চাষের কই, রুই, পাঙাশ মাছ কেনে নিয়মিত। কিন্তু এই মাছগুলোরও এখন বাড়তি দাম। অন্যান্য ভালো মাছগুলোতো আমরা সাধারণ ক্রেতারা বেশি দামের কারণে সাধারণত কিনতে পারি না। দীর্ঘদিন ধরে মাছের বাজারে বাড়তি দাম চলছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ, সংশ্লিষ্টদের মনিটরিং করতে দেখা যায় না। যে কারণে যে যার মতো করে মাছের দাম বাড়িয়ে বসে আছে। বিক্রেতাদের এমন ভাব যেন তোমরা মাছ কিনলে কিনো না কিনলে আমার ক্রেতার অভাব নেই।

বাড়তি দামের বিষয়ে বাজারের মাছ বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, আসলেই বাজারে অনেকদিন ধরে মাছের দাম কিছুটা বাড়তি। মূলত ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে মাছের দাম বেড়েছে। এরপর আর কমেনি। প্রান্তিক পর্যায়ে মাছের উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণে বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। মাছ চাষীরা তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছও বেশি দামে বিক্রি করছে, এরপর পাইকারি বাজার সব শেষ বাজারে বাড়তি দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তবে রাজধানীর অন্যান্য বাজারগুলোর চেয়ে পাইকারি বাজার অর্থাৎ কারওয়ানবাজার, যাত্রাবাড়ী, আব্দুল্লাহপুর, মেরুল বাড্ডা এসব বাজারগুলোতে পাইকারি মাছ বিক্রি হয়। সে কারণে এই বাজারগুলোতে তুলনামূলক মাছের কম দাম থাকে, এসব বাজার থেকেই যখন খুচরা বিক্রেতারা মাছ কিনে নিয়ে গিয়ে রাজধানীর অন্যান্য ছোট ছোট বাজারগুলোতে বিক্রি করে তখন সেখানে এসব বাজারের চেয়ে আরও বেশি দামে বিক্রি হয়। কারণ এসব বিক্রেতারা এখান থেকে মাছ নিয়ে যাওয়ার পরিবহন খরচ, লেবার খরচ, দোকান ভাড়া, রাস্তা খরচ, নিজের লাভ এসব যুক্ত করে মাছের দাম নির্ধারণ করে, হলে বাজারগুলোতে মাছের বেশি দাম হয়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মাছের বাড়তি দামে ক্রেতাদের অস্বস্তি

Update Time : ০৬:১৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

বাজারে মুরগি, সবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম ওঠা-নামা করলেও মাছের দাম বাড়তিই রয়ে গেছে দীর্ঘদিন ধরে। বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। এতে করে ক্রেতাদের অস্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লারের দাম কিছুটা কমেছে। দেশি, কক, সোনালী মুরগি এবং গরু, খাসির মাংসের দাম খুচরা বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে সব মাছের দাম বাড়তি।

আজকের বাজারে পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা প্রতি কেজি, রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ৩৫০ টাকা, পাবদার কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, টেংরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, শিং মাছ আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, আঁইড় মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, মলা মাছ কেজি ৪০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, সোনালি মুরগি আগের মতোই প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, কক প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাসুদ রানা। তিনি বলেন, মাংস, মুরগি, ডিম, সবজিসহ অন্যান্য সব পণ্যের দাম ওঠা-নামা করে কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু মাছের বাজার। মাছের দাম কমছে না, দীর্ঘদিন ধরে মাছের দাম বেশি যাচ্ছে। কোনো সময়ের জন্য মাছের দাম কমতে দেখা যায়নি। আজকের বাজারেও সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি দেখলাম। এত দাম যদি হয়, তাহলে তো সাধারণ মানুষ মাছ কিনে খেতে পারবে না।

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা হাবিবুর রহমানও একই ধরনের অভিযোগ জানিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষ সাধারণত তেলাপিয়া, চাষের কই, রুই, পাঙাশ মাছ কেনে নিয়মিত। কিন্তু এই মাছগুলোরও এখন বাড়তি দাম। অন্যান্য ভালো মাছগুলোতো আমরা সাধারণ ক্রেতারা বেশি দামের কারণে সাধারণত কিনতে পারি না। দীর্ঘদিন ধরে মাছের বাজারে বাড়তি দাম চলছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ, সংশ্লিষ্টদের মনিটরিং করতে দেখা যায় না। যে কারণে যে যার মতো করে মাছের দাম বাড়িয়ে বসে আছে। বিক্রেতাদের এমন ভাব যেন তোমরা মাছ কিনলে কিনো না কিনলে আমার ক্রেতার অভাব নেই।

বাড়তি দামের বিষয়ে বাজারের মাছ বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, আসলেই বাজারে অনেকদিন ধরে মাছের দাম কিছুটা বাড়তি। মূলত ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে মাছের দাম বেড়েছে। এরপর আর কমেনি। প্রান্তিক পর্যায়ে মাছের উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণে বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। মাছ চাষীরা তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছও বেশি দামে বিক্রি করছে, এরপর পাইকারি বাজার সব শেষ বাজারে বাড়তি দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তবে রাজধানীর অন্যান্য বাজারগুলোর চেয়ে পাইকারি বাজার অর্থাৎ কারওয়ানবাজার, যাত্রাবাড়ী, আব্দুল্লাহপুর, মেরুল বাড্ডা এসব বাজারগুলোতে পাইকারি মাছ বিক্রি হয়। সে কারণে এই বাজারগুলোতে তুলনামূলক মাছের কম দাম থাকে, এসব বাজার থেকেই যখন খুচরা বিক্রেতারা মাছ কিনে নিয়ে গিয়ে রাজধানীর অন্যান্য ছোট ছোট বাজারগুলোতে বিক্রি করে তখন সেখানে এসব বাজারের চেয়ে আরও বেশি দামে বিক্রি হয়। কারণ এসব বিক্রেতারা এখান থেকে মাছ নিয়ে যাওয়ার পরিবহন খরচ, লেবার খরচ, দোকান ভাড়া, রাস্তা খরচ, নিজের লাভ এসব যুক্ত করে মাছের দাম নির্ধারণ করে, হলে বাজারগুলোতে মাছের বেশি দাম হয়ে যায়।