‘মাঘের শীত বাঘের গাঁয়ে লাগে’- সেই প্রবাদ এখন আর বস্তবে দেখা মেলে না। বিশেষ করে শহরগুলোতে। এরই মধ্যে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
তবে মাঘ মাসের মাঝামাঝিতেই শীতের বিদায় ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
প্রথম এক সপ্তাহ শীতের দাপট দেখিয়ে মাঘ মাস যেন প্রকৃতির সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার ছিল হালকা বৃষ্টি। বুধবার ভোররাত থেকে ঘন কুয়াশা। সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা ও চুয়াডাঙ্গায়ও সামান্য বৃষ্টির দেখা মেলে। এর সঙ্গে ছিল হিমেল বাতাস, আকাশে ছিল মেঘও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই মেঘ আর কুয়াশা কেটে যেতে থাকে। রোদও ওঠে। ফলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছিল কিছুটা উষ্ণ। তবে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আবার কুয়াশা পড়তে শুরু করে। ফলে শীতের অনুভূতিও কিছুটা বাড়ে।
এদিকে তাপমাত্রা আরও কমে আজ শুক্রবারের মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ফের শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মাঘের পরবর্তী দিনগুলোতে কনকনে আমেজ পাওয়া গেলেও তা স্থায়ী হবে না। দিন যত যাবে, শীত সরিয়ে গরমের মাত্রা বাড়তে থাকবে। এবার মাঘ মাসের মাঝামাঝিতেই শীতের বিদায় ঘটতে পারে।
উত্তর জনপদে পৌষের শেষ ও মাঘের শুরুতে সপ্তাহখানেক টানা শৈত্যপ্রবাহ ছিল। গত ১৫ জানুয়ারি নওগাঁর বদলগাছীতে তাপমাত্রা নেমে যায় ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন। সেই শৈত্যপ্রবাহ বিদায় নেয় তিন দিন আগে। বুধবারের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও তা ১০ ডিগ্রির নিচে নামেনি।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে বলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।
শুক্রবার থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা জানায়, এটি মৃদু থেকে মাঝারি হতে পারে। তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। আবার কোথাও কেথাও ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। তবে ঢাকায় এবার শৈত্যপ্রবাহ দেখা নাও দিতে পারে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সম্ভাব্য শৈত্যপ্রবাহ দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী হতে পারে। তারপর তাপমাত্রা আবার বেড়ে তা এক থেকে দু’দিন স্থায়ী হতে পারে। আবার জানুয়ারির শেষে তাপমাত্রা কমতে পারে। এরপর শীত বিদায় নিতে পারে।