Dhaka ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহানবী (সা.) মায়ের কবর জিয়ারত করে যা বলেছিলেন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • ১৩ Time View

প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম মাত্র ৬ বছর বয়সে নিজের মাকে হারিয়েছিলেন। মায়ের সঙ্গে তার সুখ স্মৃতি বা স্মৃতি খুব একটা ছিল না। নবীজির জন্মের আগেই পিতা ইন্তেকাল করেন।

শিশু মুহাম্মদের জন্মের পর তার চাঁদ মাখা মায়াবী চেহারা দেখে স্বামীর দুঃখ ভুলার চেষ্টা করেন মা আমেনা। কিন্তু সন্তানকে বেশি দিন কাছে রাখতে পারলেন না তিনি। আরবের তৎকালীন রীতি মেনে দিয়ে দিতে হলো দুধ মায়ের কাছে।

মুহাম্মদ সা. দুধ মায়ের কাছে পাঁচ বছর পর্যন্ত থাকলেন। হালিমা (রা.) শিশু মুহাম্মদকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর মা আমেনার খুশির সীমা নেই। তাকে দেখে, তার যত্ন নিয়ে সময় কাটে মা আমেনার। এর মাঝে মা আমেনার ইচ্ছা জাগলো শিশু মুহাম্মদকে নিয়ে মদিনায় গিয়ে স্বামী কবর জিয়ারত ও মায়ের বাড়ি ঘুরে আসার।

তিনি আব্দুল মুত্তালিবকে জানিয়ে দাসী উম্মে আয়মানকে নিয়ে মদিনায় গেলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে এক রাতে ইন্তেকাল করেন তিনি। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। মায়ের ইন্তেকালের সময় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর। এরপর তিনি দাদা আব্দুল মুত্তালিব ও চাচা আবু তালিবের কাছে লালিত-পালিত হন।

হিজরতের কয়েক বছর পর মায়ের কবরের সেই পথ দিয়ে সাহাবিদের নিয়ে যাচ্ছিলেন প্রিয় নবী (সা.)। সারা জাহানের সর্দার নবীকুল শিরোমণি তখন কিছুক্ষণের জন্য বিমূঢ় হয়ে গেলেন। সাহাবিদের সেখানে অবস্থানের নির্দেশ দিয়ে তিনি মায়ের কবর পানে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন। দীর্ঘক্ষণ মোনাজাত করে কাঁদলেন।

উপস্থিত সাহাবিরাও রাসুল (সা.)-এর এ অবস্থা দেখে কান্না সংবরণ করতে পারলেন না। যারা জানতেন যে এখানে প্রিয় রাসুল (সা.)-এর সম্মানিত আম্মাজানের কবর তারা তো বুঝলেনই, আর যারা জানতেন না তারা রাসুল (সা.)-এর জিয়ারত শেষে জিজ্ঞেস করলে রাসুল (সা.) বলেন, এটি আমার আম্মাজানের কবর। (মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদিস : ৩২৯২)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—

একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) তার আম্মাজানের কবর জিয়ারত করার জন্য গমন করেন। এ সময় রাসুল (সা.) কাঁদলেন এবং তাঁ সঙ্গীরাও কাঁদল। এরপর রাসুল (সা.) বলেন—

‘আমি আমার রবের কাছে, আমার মায়ের কবর জিয়ারত করতে চাইলে তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন। কাজেই তোমরা কবর জিয়ারত করবে। কেননা তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩২৩৪)

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

মহানবী (সা.) মায়ের কবর জিয়ারত করে যা বলেছিলেন

Update Time : ০৬:০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম মাত্র ৬ বছর বয়সে নিজের মাকে হারিয়েছিলেন। মায়ের সঙ্গে তার সুখ স্মৃতি বা স্মৃতি খুব একটা ছিল না। নবীজির জন্মের আগেই পিতা ইন্তেকাল করেন।

শিশু মুহাম্মদের জন্মের পর তার চাঁদ মাখা মায়াবী চেহারা দেখে স্বামীর দুঃখ ভুলার চেষ্টা করেন মা আমেনা। কিন্তু সন্তানকে বেশি দিন কাছে রাখতে পারলেন না তিনি। আরবের তৎকালীন রীতি মেনে দিয়ে দিতে হলো দুধ মায়ের কাছে।

মুহাম্মদ সা. দুধ মায়ের কাছে পাঁচ বছর পর্যন্ত থাকলেন। হালিমা (রা.) শিশু মুহাম্মদকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর মা আমেনার খুশির সীমা নেই। তাকে দেখে, তার যত্ন নিয়ে সময় কাটে মা আমেনার। এর মাঝে মা আমেনার ইচ্ছা জাগলো শিশু মুহাম্মদকে নিয়ে মদিনায় গিয়ে স্বামী কবর জিয়ারত ও মায়ের বাড়ি ঘুরে আসার।

তিনি আব্দুল মুত্তালিবকে জানিয়ে দাসী উম্মে আয়মানকে নিয়ে মদিনায় গেলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে এক রাতে ইন্তেকাল করেন তিনি। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। মায়ের ইন্তেকালের সময় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর। এরপর তিনি দাদা আব্দুল মুত্তালিব ও চাচা আবু তালিবের কাছে লালিত-পালিত হন।

হিজরতের কয়েক বছর পর মায়ের কবরের সেই পথ দিয়ে সাহাবিদের নিয়ে যাচ্ছিলেন প্রিয় নবী (সা.)। সারা জাহানের সর্দার নবীকুল শিরোমণি তখন কিছুক্ষণের জন্য বিমূঢ় হয়ে গেলেন। সাহাবিদের সেখানে অবস্থানের নির্দেশ দিয়ে তিনি মায়ের কবর পানে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন। দীর্ঘক্ষণ মোনাজাত করে কাঁদলেন।

উপস্থিত সাহাবিরাও রাসুল (সা.)-এর এ অবস্থা দেখে কান্না সংবরণ করতে পারলেন না। যারা জানতেন যে এখানে প্রিয় রাসুল (সা.)-এর সম্মানিত আম্মাজানের কবর তারা তো বুঝলেনই, আর যারা জানতেন না তারা রাসুল (সা.)-এর জিয়ারত শেষে জিজ্ঞেস করলে রাসুল (সা.) বলেন, এটি আমার আম্মাজানের কবর। (মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদিস : ৩২৯২)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—

একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) তার আম্মাজানের কবর জিয়ারত করার জন্য গমন করেন। এ সময় রাসুল (সা.) কাঁদলেন এবং তাঁ সঙ্গীরাও কাঁদল। এরপর রাসুল (সা.) বলেন—

‘আমি আমার রবের কাছে, আমার মায়ের কবর জিয়ারত করতে চাইলে তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন। কাজেই তোমরা কবর জিয়ারত করবে। কেননা তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩২৩৪)