Dhaka ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগে মারা গেছেন পোপ, চলে গিয়েছিলেন কোমায়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩৬:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • ৩৩ Time View

বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ নেতা পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) ইস্টারে ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান।

এদিকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান। এছাড়া মৃত্যুর আগে পোপ কোমায় চলে গিয়েছিলেন বলেও তার মৃত্যুসনদে উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা।

বিবিসি বলছে, রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান নেতা পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। ভ্যাটিকান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্ট্রোক এবং পরবর্তীকালে অপরিবর্তনীয় হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতায় তিনি মারা গেছেন।

পৃথক প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (সেরিব্রাল স্ট্রোক) এবং হৃদযন্ত্রের চূড়ান্ত ব্যর্থতার কারণে মারা গেছেন বলে ভ্যাটিকান জানিয়েছে। ভ্যাটিকানের চিকিৎসক আন্দ্রেয়া আর্কাঞ্জেলি তার মৃত্যুসনদে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সোমবার প্রকাশিত মৃত্যুসনদে বলা হয়, মৃত্যুর আগে পোপ কোমায় চলে গিয়েছিলেন এবং এরপর তার মৃত্যু হয়। তিনি স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে তার সান্তা মার্তা বাসভবনে মারা যান।

মৃত্যুর আগের দিনই পোপ ফ্রান্সিস তার শেষ বড় কোনও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে খোলা পোপমোবাইল গাড়িতে তিনি হাজির হয়ে হাজারো ইস্টার উপাসকের সামনে একটি বার্তা প্রদান করেন, যদিও সেটি একজন সহকারীর মাধ্যমে পাঠ করা হয়।

১২ বছরের দায়িত্বে থাকাকালীন পোপ ফ্রান্সিস বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগেছেন। সম্প্রতি তিনি ডাবল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে রোমের জেমেলি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ৩৮ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মৃত্যুসনদে আরও উল্লেখ করা হয়, ফ্রান্সিস উচ্চ রক্তচাপ, বহুস্থানে ব্রঙ্কিয়েকটাসিস (ফুসফুসের একধরনের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা) এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন—যা আগেই জনসমক্ষে জানানো হয়নি।

পোপের মৃত্যুর পর ভ্যাটিকান তার আধ্যাত্মিক উইল বা বিশ্বাসপত্রও প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, তিনি চান রোমের সেন্ট মেরি মেজর গির্জায় তাকে কবর দেওয়া হোক, সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় নয়—যেখানে অনেক পোপকে সমাহিত করা হয়েছে।

বিশ্বাসপত্রে লেখা ছিল, তিনি চান “মাটির নিচে, বিনা অলঙ্কারে” সমাধি হোক, শুধু ল্যাটিন ভাষায় ‘ফ্রান্সিসকাস’ (ফ্রান্সিস) নামের শিলালিপিসহ।

এই উইলটি তিনি লিখেছিলেন ২০২২ সালের ২৯ জুন। পোপ ফ্রান্সিস উইলে বলেন, “আমি যখন আমার পৃথিবীর জীবনের শেষ সময় ঘনিয়ে আসা অনুভব করছি, তখন আমি শুধুমাত্র আমার সমাধির স্থান সংক্রান্ত ইচ্ছাগুলো ব্যক্ত করছি। যারা আমাকে ভালোবেসেছেন এবং আজও আমার জন্য প্রার্থনা করছেন, তাদের জন্য প্রভু যেন উপযুক্ত প্রতিদান দেন।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগে মারা গেছেন পোপ, চলে গিয়েছিলেন কোমায়

Update Time : ০৩:৩৬:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ নেতা পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) ইস্টারে ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান।

এদিকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান। এছাড়া মৃত্যুর আগে পোপ কোমায় চলে গিয়েছিলেন বলেও তার মৃত্যুসনদে উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা।

বিবিসি বলছে, রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান নেতা পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। ভ্যাটিকান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্ট্রোক এবং পরবর্তীকালে অপরিবর্তনীয় হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতায় তিনি মারা গেছেন।

পৃথক প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (সেরিব্রাল স্ট্রোক) এবং হৃদযন্ত্রের চূড়ান্ত ব্যর্থতার কারণে মারা গেছেন বলে ভ্যাটিকান জানিয়েছে। ভ্যাটিকানের চিকিৎসক আন্দ্রেয়া আর্কাঞ্জেলি তার মৃত্যুসনদে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সোমবার প্রকাশিত মৃত্যুসনদে বলা হয়, মৃত্যুর আগে পোপ কোমায় চলে গিয়েছিলেন এবং এরপর তার মৃত্যু হয়। তিনি স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে তার সান্তা মার্তা বাসভবনে মারা যান।

মৃত্যুর আগের দিনই পোপ ফ্রান্সিস তার শেষ বড় কোনও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে খোলা পোপমোবাইল গাড়িতে তিনি হাজির হয়ে হাজারো ইস্টার উপাসকের সামনে একটি বার্তা প্রদান করেন, যদিও সেটি একজন সহকারীর মাধ্যমে পাঠ করা হয়।

১২ বছরের দায়িত্বে থাকাকালীন পোপ ফ্রান্সিস বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগেছেন। সম্প্রতি তিনি ডাবল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে রোমের জেমেলি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ৩৮ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মৃত্যুসনদে আরও উল্লেখ করা হয়, ফ্রান্সিস উচ্চ রক্তচাপ, বহুস্থানে ব্রঙ্কিয়েকটাসিস (ফুসফুসের একধরনের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা) এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন—যা আগেই জনসমক্ষে জানানো হয়নি।

পোপের মৃত্যুর পর ভ্যাটিকান তার আধ্যাত্মিক উইল বা বিশ্বাসপত্রও প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, তিনি চান রোমের সেন্ট মেরি মেজর গির্জায় তাকে কবর দেওয়া হোক, সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় নয়—যেখানে অনেক পোপকে সমাহিত করা হয়েছে।

বিশ্বাসপত্রে লেখা ছিল, তিনি চান “মাটির নিচে, বিনা অলঙ্কারে” সমাধি হোক, শুধু ল্যাটিন ভাষায় ‘ফ্রান্সিসকাস’ (ফ্রান্সিস) নামের শিলালিপিসহ।

এই উইলটি তিনি লিখেছিলেন ২০২২ সালের ২৯ জুন। পোপ ফ্রান্সিস উইলে বলেন, “আমি যখন আমার পৃথিবীর জীবনের শেষ সময় ঘনিয়ে আসা অনুভব করছি, তখন আমি শুধুমাত্র আমার সমাধির স্থান সংক্রান্ত ইচ্ছাগুলো ব্যক্ত করছি। যারা আমাকে ভালোবেসেছেন এবং আজও আমার জন্য প্রার্থনা করছেন, তাদের জন্য প্রভু যেন উপযুক্ত প্রতিদান দেন।”