মহীতোষ গায়েন, কলকাতা ব্যুরো প্রধান :
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের হাতে রাখলেন স্বরাষ্ট্র দফতর ও পার্বত্য বিষয়ক দফতর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর, ভূমি ও ভূমি সম্পদ এবং উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতরের দায়িত্ব নিজের হাতে রাখলেন। একইভাবে আগের মতোই কর্মীবর্গ ও প্রশাসন, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরও নিজের হাতে রেখেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাজও নিজেই সামলাবেন মমতা।
পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফিরহাদ হাকিমের হাতে। একই সাথে আবাসন দফতরও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
শিল্প দফতরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শারীরিক অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়নি অমিত মিত্রকে। ফের তাঁর হাতেই অর্থ দফতর তুলে দিয়েছেন মমতা। দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণ দফতরের দায়িত্বও। আগামী ছয়মাসের মধ্যে তাকে কোনো কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে।
বন দফতরের দায়িত্ব পেলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ ছাড়াও পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি দফতরের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
আগের বারের মতোই পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব হাতে পেয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাষ্ট্রায়াত্ত এবং শিল্প পুনর্গঠন বিভাগের দায়িত্বও তাঁর হাতে।
২০১১ সাল থেকে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দায়িত্ব সামলে আসছেন সাধন পান্ডে। এ বারও ওই দফতরই হাতে রয়েছে তাঁর। পেয়েছেন স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি দফতরের দায়িত্বও।
বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাকে সুন্দরবন উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং মানস ভুঁইয়া পেয়েছেন জলসম্পদ বিভাগ।
সৌমেন মহাপাত্রর হাতে উঠল সেচ ও জল পরিবহণ। মলয় ঘটক, এবার তাঁকে আইন, বিচার বিভাগ এবং পূর্ত দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অরূপ বিশ্বাসের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ, যুবকল্যাণ এবং ক্রীড়া দফতরের।
উজ্জ্বল বিশ্বাস হলেন কারামন্ত্রী এবং অরূপ রায় হলেন সমবায় মন্ত্রী। রথীন ঘোষ পেলেন খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের দায়িত্ব। চন্দ্রনাথ সিংহের হাতে দেওয়া হলো ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্প এবং একই সঙ্গে বস্ত্র দফতরের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় হলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী।
পুলক রায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি বিভাগ। শশী পাঁজাকে এবার পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের দায়িত্ব দিলেন মমতা। গোলাম রাব্বানি দায়িত্ব পেলেন সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের। বিপ্লব মিত্র পেলেন কৃষি বিপণন বিভাগের দায়িত্ব।
জাভেন আহমেদ খান পেলেন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। স্বপন দেবনাথ রাজ্যের প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব পেলেন।
সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর হাতে এবারও জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার দফতরের দায়িত্ব উঠল। বেচারাম মান্নাকে শ্রম দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হল।
সুব্রত সাহা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। হুমায়ুন কবীরকে কারিগরি শিক্ষা দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করলেন মমতা। অখিল গিরিকে মৎস্য দফতর স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হল।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হল। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, উদ্বাস্তু এবং পুনর্বাসন দফতরের প্রতিমন্ত্রীও তিনি।
রত্না দে নাগকে এবার পরিবেশ ও বিজ্ঞান দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করলেন মমতা। সন্ধ্যা রানী টুডুকে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হল।
মমতার মন্ত্রিসভায় বুলুচিক বরাইক। তাঁকে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হল।
সুজিত বসুর দমকল বিভাগের তার সঙ্গে আপৎকালীন বিভাগের দায়িত্বও পেয়েছেন।
ইন্দ্রনীল সেন পর্যটন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হলেন। শ্রীকান্ত মাহাতো ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী হলেন।
সাবিনা ইয়াসমিন এবার সেচ ও জল পরিবহণ এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হলেন তিনি।
অভিনয় থেকে রাজনীতিতে পা রেখেই সটান রাজ্যের মন্ত্রিসভায় বীরবাহা হাঁসদা। ঝাড়গ্রাম থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। তাঁকে বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হল।
ক্রিকেট থেকে এবারই প্রথম রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন মনোজ তিওয়ারি। তিনি যুব কল্যাণ এবং ক্রীড়া দফতেরর প্রতিমন্ত্রী হলেন।
বিপুল ভোটে জয়ের পর তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল সরকার। ৫ মে মুখ্যমন্ত্রীপদে শপথগ্রহণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শপথ নিল মমতার মন্ত্রিসভার সদস্যরা। মোট ৪৩ জন জয়ী প্রার্থীরা এদিন শপথ নিলেন। এর মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১০ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ৯ জন প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ প্রতি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জের তিন তিনবারের বিজয়ী বিধায়ক আখরুজ্জামান।
রাজ্যপালের উপস্থিতিতে শপথবাক্য পাঠ করেন মন্ত্রীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় মুখ্যমন্ত্রী বাদে আরও ৮ জন মহিলা, ৭ জন সংখ্যালঘু বিধায়কও মন্ত্রী হয়েছেন।