অনুকূল বিশ্বাস,মালদহ জেলা প্রতিনিধি। পশ্চিমবঙ্গ:

সাহিত্য ও মানবিকতা যখন মিলেমিশে একাকার,তখন সেই মিলনে এমন কিছু সৃষ্টি হয় যা আসলে সুন্দরতম সৃষ্টির সৃষ্টিকেও হার মানায়।

তখন মনন ও মানবিকতার মেলবন্ধনে স্রষ্টার মাহাত্ম প্রকাশ পায়।মানুষ তখন প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে।নিজেদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন হয়। আমরা সমাজ থেকে প্রতিমুহূর্তে অজস্র কিছু নিচ্ছি এবং সেসব নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছি। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের এই সমাজের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। সমাজ থেকে প্রতিমুহূর্তে আমরা যেমন নিচ্ছি তেমনি সেই সমাজকেও কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের রয়েছে না হলে এই সমাজও একদিন সম্বলহীন হয়ে পড়বে। সেদিন আমরা আর এই সমাজের নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবো না, বিলীন হয়ে যাবে মনুষ্য সমাজের গৌরবময় উপস্থিতি।

সমাজের প্রতি এমনই দায়বদ্ধতা থেকে চন্দ্রপুর মনন ফর লিটারেচার ,কলকাতার পক্ষ থেকে প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মানবিকতার এমন সব নজির স্থাপন করেন। এটি একটি সাহিত্য সংস্থা হওয়া সত্ত্বেও তারা সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ। শারদ উৎসবের প্রাক্কালে প্রতি বছর তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের কোনো একটি নির্দিষ্ট জেলায় পৌঁছে যান নতুন বস্ত্র ও মধ্যাহ্নকালীন আহারের আয়োজন নিয়ে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।


এবছর এই সাহিত্য সংস্থার সদস্য-সদস্যারা ১৭.০৯.২০২২ তারিখে পৌঁছে গেলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের রাজীবপুর এলাকার মিশনপাড়ায়। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তাঁরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবার গুলোর জন্য একটি নতুন শাড়ি ও মধ্যাহ্নকালীন আহার প্রদান করেন।স্থানীয় শিক্ষক ও কবি মাননীয় শ্রী দেবব্রত মুর্মু মহাশয়ের সুব্যবস্থাপনায় এক নান্দনিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গ্রামবাসীর হাতে সংস্থার পক্ষ থেকে দানসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।


অনুষ্ঠানের শুরুতে একদল আদিবাসী যুবতী অসাধারণ লহমায় অপূর্ব সাজগোজে মনোমুগ্ধকর ছন্দে আদিবাসী নৃত্য পরিবেশন করেন।যা অনুষ্ঠানের শুরুতেই অনুষ্ঠানকে অনন্যমাত্রা দেয়।সাহিত্য পত্রিকার অনুষ্ঠান অথচ সেখানে কবিতা পাঠ হবে না সে আবার হয় নাকি ! তাই তো নৃত্যের পর স্থানীয় কবি দেবব্রত মুর্মু ও বরিষ্ঠ কবি কিষ্টু মুর্মু স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।

চদ্রপুর মনন ফর লিটারেচারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক শ্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী মহাশয় অনুষ্ঠানের মূলভাবনা নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন। তিনি তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে বলেন “আমাদের শ্রদ্ধা, প্রণাম, আদর, ভালোবাসা জানাচ্ছি যারা(ডালিয়া দত্ত ( ডালিয়া দত্ত’র আত্মীয় বন্ধুবান্ধব ), নিতু সামন্ত, শিখা দে, মিরা চ্যাটার্জী, অঞ্জনা গঙ্গোপাধ্যায়, সীমা দাসগুপ্ত, বন্দিতা ব্যানার্জী, বৈশাখী মৈত্র চ্যাটারজী, অনুকূল বিশ্বাস, প্রবীর ভদ্র, সিক্তা পাল, শান্তনু পাঁজা, রমেন বিশ্বাস, বৈশালী সেন, ঋতুপর্ণা পতি কর, রেশমা লস্কর প্রমুখ সদস্যদের ) যাঁরা আমাদের এই কাজে আমাদের পাশে অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে এসে পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের সকলকেই। সমগ্র অনুষ্ঠানটিকে সফল করে তোলার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি শ্রী অনুকূল বিশ্বাস, দেবব্রত মুর্মু, কিষ্টু মুর্মু, অরিন্দম ঘোষ সহ ঐ অঞ্চলের সাধারণ অধিবাসীদের” ।

অনুষ্ঠানের শেষে আরও একবার আদিবাসী নৃত্যের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘোষিত হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে