ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মধ্যরাতে ডাকসু’র সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরকে আবারও হেফাজতে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আবারও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সোমবার রাত ১১.৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিছনের গেট থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নুরকে তাদের হেফাজতে নিয়ে একটি গাড়িতে তুলে নেয়।

এসময় গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকা মেডিক্যাল-এর পকেট গেট দিয়ে গাড়িতে তুলে নুরকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নুরের সমর্থকরা সেই গাড়িতে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশ নুরকে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে।

সোমবার রাতে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন: ‘নুরকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। তাকে অফিসিয়ালি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু সে অসুস্থ তাই চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হয়েছিল। অসুস্থতার কারণে তাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে ডিবির গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।’

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়: ছেড়ে দেওয়ার অফিসিয়াল ফর্মালিটির জন্যে নূরকে আবার ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত পৌনে একটার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রাতে ডিবি অফিস থেকে বেরিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুর বলেন, আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়েছে। মারধরের কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়েছেন। পরে মুচলেকা নিয়ে আমাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা জানিনা কেন গ্রেপ্তার করা হলো আর কেন ছাড়া হলো।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের কোনো অঙ্গের সঙ্গে কারো মিল নাই, কাজে-কর্মে মিল নাই। এ কারণে একজনে মারে, একজনে গ্রেপ্তার করে, আর আরেকজনে ছাড়ে, এটাই চলছে।

এই যে আজ আমরা মার খেলাম, আমরা তো কোন অপরাধী না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনটা শেষ করে আসছিলাম। কিন্তু কোনোরকম উস্কানি ছাড়াই পুলিশ আক্রমণ করলো। আসলে আমরা বুঝি নাই, কী কারণে আমাদের ধরে আনা হলো, আর কী কারণে ছাড়া হলো।

এর আগে অসুস্থতার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নুরকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সেখানকার আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান: ভিপি নুরসহ মোট চারজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ভিপি নুরের বেশ কয়েকটি এক্সরে করা হয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট ভালো আছে।

তিনি বলেন: তাদের ভর্তির প্রয়োজন হবে না। এদের মধ্যে সোহরাব নামে একজনের মাথায় আঘাত রয়েছে। তবে সেটা গুরুতর নয়। নুরসহ ৪ জন স্টাবল আছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় মৎস্য ভবন এলাকা থেকে নুরুল হক নুরকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর নুরকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন তখন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন: নুরসহ কয়েকজন মৎস্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন। তাদের মিছিলে বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় ভিপি নুরসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। নুরের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় ধর্ষণ মামলা তো আছেই, সঙ্গে পুলিশের ওপর হামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে রোববার রাতে লালবাগ থানায় নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন ঢাবি’র এক ছাত্রী।

এ মামলার আসামিরা হলেন: হাসান আল মামুন, নাজমুল হাসান, নুরুল হক নূর, মো. সাইফুল ইসলাম, নাজমুল হুদা ও আবদুল্লাহ হিল বাকি।

এদের মধ্যে হাসান আল মামুন ও নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে