ভাষাসৈনিক ‘সৈয়দ রফিকুল ইসলাম’ ও
তাঁর কন্যা বহু উপাধিতে ভূষিত ‘সৈয়দা রাশিদা বারী’র সম্পর্কে কিছু কথা:
সৈয়দ আবু বোরহান জাকারিয়া (খোকা মিঞা)

১. ‘এ দেশের মাটি যেন শীতল পাটি, সবুজ ঘাসের ঘ্রাণ। গাছের শাখায় দোয়েল নাচে জুড়িয়ে দেয় প্রাণ …’। হ্যাঁ সেই ২৬জুন ২০০৭ইং সালের কথা, যখন আমি নিয়মিতই রেডিও শুনতাম। পকেটের মধ্যে ছোট্ট একটি রেডিও থাকতো ব্যক্তিগত ভাবে। সেই রেডিও শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম, আবার শুনতে শুনতেই জেগে উঠতাম। অবশ্যই সেটা কাজ কাম এবং পড়াশুনার পাশাপাশি। এই পকেটের মধ্যে গান বাজার শব্দ একদিন বি.এস.সি স্যারের আয়ত্ব বলবো না তবে কর্ণ গোচর হয়। তিনি আমার বেত দিয়ে মেরেছিলেন! কিন্তু আমি তো ক্লাসের ফাস্ট বয় ছিলাম। যতই গান শুনি, আর কাজ করি না কেন? ক্লাস ওয়ান থেকে ১রোল আমারই দখলে ছিল- সব শ্রেণীতে- অন্তত ১০০/২০০ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। যা হোক গানের নেশা পেয়ে বসায় এই- এ দেশের মাটি যেন শীতল পাটি, কবি রাশিদার দেশ প্রেমের এই গানের স্পেশাল রেকর্ডিং এর দিন বাণিজ্যিক কার্যক্রম, গানের তাল- দ্রুত দাদরা, গানটি বাংলাদেশ বেতারে বহুবার প্রচারিত। তবে প্রথম প্রচার হয় বিকাল ৪.৫৫মিনিট, ১৫.০৮.২০০৭ইং। হ্যাঁ রেকর্ডিং এর ঐ সময় আমি বাংলাদেশের শাহবাগ বেতার কেন্দ্রে উপস্থিত হলাম।

২. সে বেতার কেন্দ্র এখন বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের দখলে। ৬জন শিল্পীর সংমিশ্রণ কণ্ঠে এই গান রেকর্ডিং হলো। সুরের এমনই মধুর ঝংকার আর পাগল করা উত্তাল- যা শুনে ঠিক থাকতে না পেরে, শেখ সাদীর মতো বিখ্যাত সুরকার তার ডেস্ক ছেড়ে রুম থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন! যে- এটা কার লেখা গান? এই পাগল করা কথা ও সুরের- কণ্ঠ দিচ্ছে- কোন শিল্পীরা!! গীতিকার রাশিদাকে তিনি আগের থেকেই চিনতেন। এখান থেকে আরো ভালো করে চিনে ও জেনে নিলেন। এই গান নিয়ে আরো অনেক অনেক কথা আছে। তবু এখানেই রাখলাম। তবে আমি ১শত গ্রন্থের লেখক সৈয়দা রাশিদা বারীর কথাই বলবো। তবে এর আগে তার ভাষাসৈনিক বাবার কথা জানবো। হ্যাঁ ডাক্তার যখন রোগ দেখেন, রোগীর সম্পর্কে কিছু কাহিণী জানতে চান। আবার রোগের কাহিণীও শোনেন। প্রকৃত ভালো লিখতে যেমন তথ্য লাগে। তথ্য সেই বিষয়ের আগে পরের ইতিহাস ঘেটে খুঁজে প্রয়োজনীয় বস্তুগুলো নিয়ে ব্যবহার করার নাম। জানার নাম, জানাবার নাম। ভালো কাজের জন্য এমনই পিছনের সহ সামনের কথা- কাহিনীই কিন্তু আসল নির্বাচিত তথ্য।
৩. এরপর সমসাময়িক এবং রানিং। অর্থাৎ Present-Past-Future ৩টার সমন্বয় লাগে ভালো কোন বির্নিমাণে। তাই আজ আমি গুণী সাহিত্যিক সৈয়দা রাশিদা বারীর কথা লিখতে, একটু তার পিছনেও যেতে চাই। প্রথমেই তার বাবার পরিবারের সামান্য বিষয় বা চিত্র তুলে ধরছি। এতে পাঠকদের পাঠ সফল ভাবে পূর্ণতা পাবে। বুঝতেই পারছেন এই পূর্ণতার মধ্যেই অন্তর্নিহিত আছেন, আমার আপনার সবার কাঙ্খিত লেখক। হ্যাঁ বলতে চাই কবি রাশিদা বারীর বাবা সৈয়দ রফিকুল ইসলামের কথা। সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ছিলেন একজন ত্যাগী, বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন এক অকুতোভয় দেশপ্রেমিক, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ মিছিলে অংশ গ্রহণকারী ভাষাসৈনিক। সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বার এর মিছিলে অংশ গ্রহণকারী সহযোদ্ধা। যে আন্দোলনে স্বাধীনতার অংকুরোদগম ছিলো। দেশপ্রেম ছিলো যার হৃদয়ের মনিকোঠায়, দেশের কল্যাণে যিনি জেলও খেটেছেন। সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ১৯২৬ সালে কুষ্টিয়া জেলায় এক সম্ভ্রান্ত বংশ, বিশিষ্ট শিল্পপতি, শিক্ষাবিদ সৈয়দ নাসির উদ্দিন ওয়াহেদ আলী-ওরফে ওয়াহেদ আলী মিঞা ও হযরত আল্লামা সৈয়দা মসিরুন্নেছা খাতুনের ঔরসে জন্মলাভ করেন।

৪. এই গুণী মানুষটির জন্মদাতা পিতা সৈয়দ নাসির উদ্দিন ওয়াহেদ আলী- ওয়াহেদ আলী মিঞা (১৮৭৪-১৯৩৭ইং) একজন ১৪টি ভাষায় কথাবলা সুদক্ষ পন্ডিত। তিনি ব্রিটিশ আন্দোলকদের স্পন্সার, শিক্ষাবিদ, শিল্পপতি, বিশ্বের নানা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির খন্ডকালীন লেকচারার/ প্রফেসর, শিক্ষা ইন্সেপেক্টর, আন্তর্জাতিক সাহিত্য সেবক, নানামুখী সৌখিন, প্রভৃতি উপাধিতে কৃতার্থ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। ওয়াহেদ আলী মিঞার ৬সন্তানের মধ্যে সর্ব কণিষ্ঠ পুত্র- ভাষাসৈনিক, ডাক্তার, শিল্পী, শিক্ষক- হাজী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ওরফে সৈয়দ জালাল উদ্দিন ওয়াহেদ আলী- পুনু মিঞা (১৯২৬ – ৩জুন ২০০৮ইং)। তাঁর স্ত্রী আলহাজ সৈয়দা রোকেয়া রফিক ওরফে সৈয়দা রোকেয়া জালাল- তোতা (জন্ম- ২৭.০২.১৯৪০- মৃত্যু -২৭.১২.২০২০ইং) এঁর সাথে- ১৯৫৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর গুণের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। একজন সফল রত্ন গর্ভ পিতা, ধার্মিক, সমাজসেবক, পরোপকারী, দেশপ্রেমিক ও শেষ ব্রিটিশ থেকে শুরু পূর্ব পাকিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তান আমলের মাতৃভাষা, মাতৃভূমি শত্রু মুক্ত আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

৫. ব্যক্তি জীবনে তিনি সংস্কৃতিমনা একজন সাত্মিক মানুষ ছিলেন। যে কারণে তিনি নিজের খালাতো ভাইকে গান শিখিয়েছিলেন। দেশমাতৃকার কাজে অল্প বয়সে ছাত্রবস্থায় ১৯৪৬/১৯৪৭ইং সালে ঢাকায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে যান। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তাঁর রাজনৈতিক প্রাথমিক গুরু। এমতাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সাথে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে কয়েকবার জেলে যান। তার মধ্যে একবার জেল কতৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু ও রফিকুলকে জেলের একই রুমের মধ্যে আটকিয়ে রেখেছিল! কিন্তু এটা একটা বিরল ঘটনা, যা জেলখানার দায়িত্ব প্রাপ্ত লোক কখনোই করে না অথচ তারা করেছিল! হয়তো শ্রষ্ঠার ইশারা ছিল তাই। সৈয়দ রফিকুল ১৯৫২ইং সালে ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ সৈনিক হওয়ায় জেলে যান এবং জেলে যাওয়ার দরুণ আই এস সি’র ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেন নাই। এ সয়য় তিনি জগন্নাথ কলেজে আইএসসি’র শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ইং সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল হতে ফার্স্ট ডিভিশনে মেট্রিকুলেশন পাশ করেছিলেন।

৬. রফিকুল মিডফোর্ড হাসপাতাল (বর্তমান সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হতে ডাক্তারীর উপরে এলএমএফ ডিপ্লোমা সেকেন্ড ইয়ার পর্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেছিলেন। যেহেতু ভাষা আন্দোলনে জেলে থাকায় আই.এস.সির ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়া যায়নি, তাই ডাক্তারী পড়ার এই সুযোগ তিনি নিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধের একজন পুরান ঢাকার কলতা বাজারের চক্ষু বিশেষজ্ঞ, আব্দুর রহমান খান, কর্তৃক চোখের ভূল (জরা গরুর নাভির মধ্যে, পায়ের খোরার মধ্যে, এক প্রকার পোকা হতো তখন, সেই পোকা মারার, পোকা ধ্বংসের আয়োডিন জাতীয় বিষ- ফোটার ড্রপ দিয়েছিলো! পরে ডা. বলেছিলো ভুলে একজনেরটা অন্যজনের এভাবে বদলিয়ে দেওয়া হয়েছে)। চিকিৎসার দুর্ঘটনায়, চোখের জ্যোতির সমস্যা হয়। ফলে মিডফোর্ট হাসপাতালের ডাক্তারের নির্দেশ ক্রমে পড়াশোনা বন্ধ করতে বাধ্য হন। তার জগতি সুগার মিলে বড় পোষ্টে চাকুরী হয়েছিলো। সেখানে ঘুষ অনাচার থাকায় নিজ দেশের ক্ষতি সে মেনে নিতে না পেরে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু দুর্নীতির দল ভারী হওয়ায় সফল হতে পারেন নাই। অর্থাৎ দুর্নীতি বন্ধ করতে পারেন নাই।

৭. যে দেশের কল্যাণের কাজ করার জন্য জীবনের আসল ধন-সম্পদ ধ্বংস করেছেন, আজ স্বাধীন দেশের সেই অকল্যাণকর কাজে, তার হাত দিয়ে স্বাক্ষর করবেন না। কখনোই না। দেশ মাতৃকার কাছে এই প্রতি শ্রুতি রেখে ওয়াদা বা পণ করেছেন মাটি ছুঁয়ে সেই ছাত্র জীবনে জেলে বসেই। জীবন থাকতে তিনি সেই শপথ ভাঙতে পারেন না। ফলে স্বেচ্ছায় সেই চাকুরী তিনি রিজাইন দেন। চাকুরী থেকে অব্যাহতি নিয়েও স্বস্থির হতে পারেন নি। পরে মাতৃভাষা ও স্বদেশীয় প্রেম অটুট রাখতে এই ভাষাসৈনিক দেশপ্রেমিক ও বঙ্গবন্ধুর খুদে বন্ধু, রবীন্দ্র সংগীত, ব্রিলিয়ান্ট বয় উল্লেখ্য এই ৩টি নামেই তখন শেখ মুজিবুর রহমান নিজে আদর করে রফিকুলকে ডাকতেন। রফিকুল শিশুদের বেড়ে ওঠার শুরু থেকেই দেশপ্রেম ও বাংলাভাষার শিক্ষা দিতে, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকেই বেছে নেন। চেয়েছিলেন ডা. হয়ে দেশের মানুষের সেবা দিতে, তা যখন পারলেন না। এদিকে তার সন্তানদেরও তিনি প্রকৃতি এবং দেশ প্রেমের অটুট শিক্ষা দিয়েছেন।

৮. শিল্পী হিসেবে রফিকুল তার খালাতো বোনের ছেলে, বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আনোয়ার উদ্দিন খানকে গান শিখিয়েছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ বেতারের তাঁর অফার শিল্পী হিসেবে যোগদান করার, আনোয়ার উদ্দিন খানকে তিনি দিয়েছিলেন। যেন আনোয়ার উদ্দিন খান ভালো কাজ করে বেড়ে ওঠে, দেশকে সমৃদ্ধ করেন। প্রথম সারির শিল্পী হিসেবে আনোয়ার উদ্দিন খান সত্যিই বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করেছিলেন। এবং আনোয়ার উদ্দিন খান ভাষাসংগ্রামীর বটে। রফিকুল বাংলাদেশ বেতারে যোগ দিলেন না। যেহেতু বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতিতে সময় দিতে হতো এবং ব্রিটিশ আমলে ইংরেজি দক্ষতা নিয়ে লেখাপড়া, ফাঁকির প্রশ্নই ছিল না। তারপরেও ভালো ছাত্র হিসেবে লেখাপড়ারও চাপ ছিল একটু বেশিই। বঙ্গবন্ধু রফিকুলের কণ্ঠে ১. ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি; ২. ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা; ৩. বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু-বাংলার ফল; ৪. ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা-তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা, ৫. স্বার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে, ৬. যে তোমার ছাড়ে ছাড়ুক আমি তোমার ছাড়বো না মা, ৭. আজ বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, ৮. আমরা মিলেছি আজ মায়ের ডাকে, ৯. আমার সাধ না মিটিল আশা না ফুরালো সকলই ফুরায়ে যায় মা, ১০. আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই, আমি আমার আমিকে চিরদিন-এই বাংলায় খুঁজে পাই … ইত্যাদি গান শুনতে পছন্দ করতেন।

৯. তখনকার স্বাধীনতা আন্দোলনের সেমিনারেও রফিকুল এসব গান গেয়েছেন। তার বড় ভাই: শিক্ষাবিদ সৈয়দ মুজাফ্ফর উদ্দিন ওয়াহেদ আলী- খোকা মিঞা (১৯০৫-১৯৪৬ইং) বিদ্যুৎ বা বাজ পরে মারা যান। যার গৃহ শিক্ষক ছিলেন দেবদাস গ্রন্থের রচয়িতা, প্রখ্যাত উপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। উল্লেখ্য দেবদাস গ্রন্থ রচনার জন্য খোকা মিঞা তাকে বলেছিলেন। মাষ্টার মশাই আপনার কাছে আমার তো আর পড়তে মন বসছে না, ভালো লাগছে না। কারণ আপনি অমানবিক, অনেক নিষ্ঠুর একজন মানুষ। যে দেবদাসের মতো চরিত্র দিয়ে বই লিখতে পারে, না জানি তার দারা আরো কত নির্মম কাজ হতে পারে। পরে শরৎচন্দ্র তার ব্রিলিয়ান্ট নম্র, ভদ্র, সভ্য, বাধ্য প্রিয় ছাত্রের কাছে- নত স্বীকার করে, বলেছিলেন বাবারে এটা আমার এখনকার লেখা হলেও যখন আমার বয়স ১৫ তখনকার থিওরী। কাজেই তুমি আমাকে ভুল বুঝো না। তুমি বরং ভুলে যাও। যদি এখনকার মন মানসিকতায় ধ্যান ধারণায় লিখতে যেতাম, তাহলে এটা আমি লিখতে পারতাম না।

১০. রফিকুলের একমাত্র বড় বোন সৈয়দা সেলিমা নূরজাহান বেগম- খুকু (১৯০৮-১৩.০৩.১৯৬৩ইং)। ছিলেন বেশ কয়েকটি মহিলা সংস্থার নির্বাচিত সভাপতি। তিনিও গান পারতেন। কবি কাজী নজরুলের ভক্ত এবং কিছুকাল নজরুলকে অর্থ বৃত্তি দিয়েছিলেন। খুকু বাংলাদেশ বেতারে শিল্পীর অফার পান। কিন্তু সৈয়দ ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার হওয়ায় সে অফর তিনি ফিরিয়ে দেন। ফিরিয়ে দেবার অন্য কারণ তার শ্বশুর মশায় একজন বড় মাপের পীর ছিলেন। খুকুর স্বামী: ডেপুটি জেলা ম্যাজেষ্ট্রেট খান বাহাদুর মৌলভি সৈয়দ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ আব্দুল হাই (১৮৮৪-১৯৪৫ইং)। রফিকুলের মেজো ভাই ছিলেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং পরবর্তীতে নির্বাচিত ইউ পি চেয়ারম্যান সৈয়দ মহিউদ্দিন ওয়াহেদ আলী- গেদা মিঞা (১৯১০-২০০১ইং)। সেজো ভাই: আইন বিশেষজ্ঞ, সরকারের পিপি (ইনকাম ট্যাক্স) নূর উদ্দিন ওয়াহেদ আলী- মণি মিঞা (২১.০৬.১৯১৭ – ০৬.১২.১৯৮৮ইং)। নোয়া ভাই ইউ এস এ অবস্থানরত প্রকৌশলী, বিশ্বভ্রমণকারী, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক সৈয়দ রফিউদ্দিন ওয়াহেদ আলী ওরফে সৈয়দ আর. ডবিøউ আলী (২৪.০৬.১৯২৪- ১৩.০৪.২০১৪ইং)। এবার আসি- যার জন্য তার পূর্ব পুরুষের বিশাল অংশের সামান্য কিছু দেওয়া হলো, আমরাও জানলাম তার প্রসঙ্গে।

১১. হ্যাঁ রফিকুল ইসলামের ৯সন্তানের মধ্যে: দ্বিতীয় সন্তান সৈয়দা রাশিদা বারী। যার ডাক নাম বেবী এবং অনেকগুলো ছদ্দ নাম আছে। ভাষা সৈনিক কন্যা সৈয়দা রাশিদা বারী একজন প্রতিথযশা কথা সাহিত্যিক, কবি, সাংবাদিক, গীতিকার, ছড়াকার, প্রবন্ধকার, প্রকাশক সম্পাদক, মূলত একজন বহুমাত্রিক লেখক। যাঁর রচনার পরিমাণ বিপুল। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক এবং বিজ্ঞানী। মা বাবার পরিবার, পরিসরে ভাই-বোন সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার প্রবক্তা। নারীর ক্ষমতায়ন মূল্যায়ন ও বাস্তবায়নে পুত্র-কন্যাকে আলাদা দেখেন না, বিশেষ করে মা-বাবার ঘরে প্রাপ্ত অংশ অর্থ-সম্পদ ও অধিকারের ক্ষেত্রে। তাঁর পিতা ভাষা সৈনিক সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, ভাষা আন্দোলনের একজন প্রথম সারির প্রতিবাদী মিছিলে অংশ গ্রহণকারী নয় মিছিলের কয়েকজন হোতার মধ্যের একজন। অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনের অর্জিনাল আন্দোলক ব্যক্তিত্ব। যিনারাই এই আন্দোলনরে মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনের স্মারক বহন করে। স্বাধিকার আন্দোলনের একজন প্রথম শপথ গ্রহণকারী যোদ্ধা।

১২. যাঁদের অবদানে আজকের এই শত্রুমুক্ত বাংলা ভাষায় কথা বলা, আজকের এই শত্রুমুক্ত বাংলাদেশে বসবাস করা। রফিকুলও তাদেরই একজন। তাই তো সৈয়দা রাশিদা বারীও একজন আপাদ মস্তকে সংস্কৃতি ব্যাক্তিত্ব, সংস্কৃতিসেবী, উদার মনের প্রগতিশীল সমাজ সেবক। দেশপ্রেমিক। দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে যার লেখনী ১০০ভাগ পারফেক্ট। ঐ সময় তার পূর্বপুরুষরা, এই দেশ ও দশের জন্য নিঃস্বার্থ অবদান দিয়েছেন-রেখেছেন। এখন তাদের উত্তরসুরি এই রাশিদা সেরকমই করছেন। তাই তার লেখনিই আমাদেরকে একটি সভ্য, সত্য, সুন্দর সমাজ তথা দেশের পথ দেখায়। আমাদের গর্ব আমাদের মাঝে সৃষ্টিকর্তা এধরনের একজন উত্তরসুরি জ্ঞানী ও গুণী পাঠিয়েছেন। তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য, নীতি নাট্য, দেশ, জাতির, কল্যাণকর তথ্য সমৃদ্ধ করেন ও মন্দ কাজে প্রতিবাদ ব্যক্ত করে থাকেন। এটা কোন স্বার্থের জন্য নয় সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থে নিঃশর্তে। সৈয়দা রাশিদা বারী এ সকল ভালো কর্মকান্ডের জন্য প্রশংসিত। তিনি দেশ বিদেশের নামী দামী বিভিন্ন পুরষ্কার অর্জন করেছেন। সেই সাথে তিনি বিভিন্ন খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।

১৩. সেগুলো যথাক্রমে- ১. কাব্যশ্রী, ২. কাব্যরত্ন, ৩. কবিরত্ন, ৪. সাহিত্য রত্ন, ৫. সাহিত্য পদ্মভূষণ, ৬. সাহিত্য বিষারদ, ৭. সাহিত্য বিদ্যা বিনোদন, ৮. সাহিত্য সাগর, ৯. সাহিত্য স্বরসতী, ১০. স্বরসতী মায়ের মানস কন্যা, ১১. সব্যসাচী লেখক, ১২. বাংলাদেশ রত্ন, ১৩. ভাষাসৈনিক কন্যা ১৪. জীবন্ত কিংবদন্তী প্রভৃতি। লেটেষ্ট গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখে সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকাস্থ ‘বন্ধন কালচারাল ফোরাম এর উদ্যোগে, চ্যানেল আই এর মিডিয়া পার্টনারে, ঢাকার বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এটা বন্ধন কালচারাল ফোরামের ৩৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে পালিত হলো। জমকালো এ আয়োজন অনুষ্ঠানে, গীতিকার, কবি ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দা রাশিদা বারীকে বন্ধন কালচারাল ফোরাম কর্তৃক ‘সাহিত্য সাগর’ উপাধীতে ভূষিত করা হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব খন্দকার নাজমুল হক (প্রথম সচিব জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ঢাকা) ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জনাব মুকিত মজুমদার বাবু (চেয়ারম্যান- প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন), জনাব আবুল কাশেম মোঃ সালেহ্ (রেমিটেন্স যোদ্ধা, বন্ধন উপদেষ্টা), জনাব লোকমান হাকিম (বিশিষ্ট সুরকার ও সংগীত পরিচালক) জনাব সৈয়দা রাশিদা বারী (কবি, গীতিকার, সাংবাদিক, সংগঠক, সম্পাদক) জনাব জেবিন সুলতানা কান্তা (সেরা নারী উদ্যোক্তা ও বন্ধন উপদেষ্টা), শাহনূর (চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, সাংগঠনিক সম্পাদক- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি) মোঃ মেজবার উদ্দীন (ইউনিট ম্যানেজার সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স লিঃ) প্রমুখসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

১৪. এই সমস্ত উপাধী পেয়েছেন কবি, কথাসাহিত্যিক, গীতিকার সৈয়দা রাশিদা বারী সাহিত্যের সর্বাঙ্গনে অসামান্য অবদান রাখায়। এটা তার সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক লেখালেখির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি প্রচুর পরিমাণে হিন্দু শাস্ত্রের তথা হিন্দু ধর্মের উপরে সাহিত্য সাংস্কৃতিতে অবদান রেখেছেন। করেছেন লেখালেখি। করেছেন কিশোর ও বালক বেলার পূজা সম্পর্কীয় স্মৃতিচারণ। আবার তিনি একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের। জন্ম সূত্রে নবীজির বংশধর হৃদয় আত্মা বিরহ প্রেম, মুসলমান ধর্মে ১০০তে ১০০ভাগ। পৃথিবীর মসজিদ, মাদ্রাসা, দরবার শরীফ, মাজার এসবের প্রতিও দুর্বল মানসিকতার। করেছেন লেখালেখি,- তার ইসলাম ভিত্তিক রচনায় সেটা লক্ষণীয়। ইচ্ছা প্রকাশে বলেছেন পৃথিবীর মাজার এবং মসজিদের উপরে কাজ করবেন। প্রকৃত ভাবেও কবি সৈয়দা রাশিদা বারী আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত। তিনি ভগবান, স্রষ্টা, ঈশ্বর, আল্লাহতে বিশ্বাসী এবং মনে করেন যে, মূলে উপর আল্লাহ, একই জন।

১৫. তিনি কোন ধর্মকেই ছোট করে দেখেন না। করেন না হেলা অশ্রদ্ধা। যার ফলে দূর্গাপূজায় যে সমস্ত মন্ডুপ থেকে শারদীয় সংখ্যা বের হয়, তার লেখা প্রায় প্রতি সংখ্যায় থাকে। এমন কি ভারত থেকেও বের হয়েছে দূর্গা পূজার স্মারদীয় সংখ্যায়। এটাকে কেন্দ্র করে ভারতসহ বাংলাদেশেরও ‘লুপ্তসুপ্ত জয়গুরু মহাগুরু’ নামক একটি প্রতিষ্টান তাকে ‘সাহিত্য স্বরসতী’ উপাধিতে ভূষিত ও পুরষ্কৃত করেছে।

এর অর্থ এই নয় তিনি হিন্দু প্রতিনিধি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোরআন শরীফ পাঠ করতেন। তার মানে এই নয় রবীন্দ্রনাথ মুসলিম প্রতিনিধি। কোরআন শরীফের প্রথম বাংলা করেছেন গিরিশ চন্দ্র সেন, যিনি একজন জাতি ধর্মে খাস- সম্ভ্রান্ত হিন্দু। জন্মসূত্রে যে- যে ঘরে আসবে, পরিবারের সবাইকে কাদিয়ে ভাসিয়ে ধর্ম ত্যাগ করলেই- সে ভালো মানুষ হয়ে যান, কোন লেখক সাধারণত এই নীতি আদর্শে বিশ্বাসী নন, তার মধ্যে সৈয়দা রাশিদা বারী একজন। তিনি আত্ম অর্হকার হিংসা পরশ্রিকাতরতাকে আমলে নেন না বা প্রশ্রয় দেন না। যেহেতু তিনিও তো খাটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম লাভই করেন নি শুধু- তিনি নবীজির বংশধর থেকেও এসেছেন। তাই তিনি আল্লাহর ইবাদতে এবং রাসূলে পূর্ণ আস্থাশীল, স্বয়ংক্রিয় স্বয়ং সম্পন্ন।

১৬. প্রকৃতি প্রেমিক ও গরীব অসহায় এতীম প্রেমিক, নবীর আদর্শে নীতিধর্মে বিশ্বাসী সম্পূর্ণ এবং সর্বোচ্চ, মানবিক মূল্যবোধে আকৃষ্ট একজন বাস্তববাদী লেখক। আমি মনে করি তিনি একজন আধ্যাত্মিক জগতেরও সাধক। তার লেখার ধারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে মোড়ানো। কিন্তু কোন রাখ ঢাক নেই। ছাড় দেওয়া নেই। তিনি সুবিধাবাদী, দলকানা, দালাল চামচাকে এড়িয়ে যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে তার লেখালেখির তুলনা নেই। এটা তার শত্রæও স্বীকার করবে। আসলেও তার লেখালেখির মাত্রা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। একজন মেয়ে মানুষের পক্ষে এটা বিরল দৃষ্টান্ত। এই বাংলাদেশে কি সামগ্রিক বিশ্বেও এমন কোন নারী লেখক আছে কিনা সেটা সন্দেহের বিষয়। এক জনমে জীবনের এতো স্বল্প সময় পরিসরে, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অবদানে বিস্তর জায়গায় তিনি ঠিক সাগরের গভীরতর জলধার মতোই পৌঁছে গেছেন। সাহিত্য সাগরসহ অন্যান্য উপাধি সম্পন্ন পুরষ্কারগুলো তার জন্যই ঠিক আছে বটে। এটা তার ন্যায্য প্রাপ্তী। এতো ব্যাপক অর্জন করেছেন তিনি, যা অহংকার করারই মতোন কিন্তু এই লেখকের কোন গর্ব অহংকার নাই।


১৭. উল্লেখ্য যে এই গুনী মানুষটি এ যাবৎ ভারী ভারী এবং গুরুত্বপূর্ণ ২শত এর উপর গ্রন্থ রচনা করেছেন। তবে প্রকাশিত গ্রন্থ ১শতটিরও উপরে, বেশকিছু উল্লেখযোগ্য অন্তত ৮০টি গ্রন্থ প্রকাশের অপেক্ষায়, কাজ চলছে। যা তিনি এক সংঙ্গেই দিতে চান এবং কারণ বর্ণণায় অনেক ব্যাপার আছে বলে জানিয়েছেন। এক হলো- হাড়ির একটা ভাত টিপলে যেমন সবগুলোর অবস্থান বোঝা যায় এবং কম বেশি একই সময় লাগে, এই সময়ের জন্যই। ছুটতেই যখন হবে তখন আর ১টা ২টা নিয়ে নয়। তিনি ৪হাজারেরও বেশি গান লিখেছেন। তবে শুধু সৈয়দা রাশিদা বারীই নয়, এ যাবতকাল বেশী রচনাশীল কোন গীতিকারই জীবদ্দশায় তার নিজের রচিত সব গান প্রকাশ করেন নাই। যারা বিপুল লেখেন তাদের পক্ষে এটা সম্ভব না। লালন, নজরুল, প্রভৃতি গীতিকারের গান, পরবর্তী পুরুষ, ভক্ত উত্তরসূরী সরকারী উদ্যোগ ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকাশ করেছে, এমনকি এখনও যা অব্যাহত আছে। তাদের অপ্রকাশিত অন্যান্য পান্ডডুলিপিও ছিলো। যা পরবর্তীতে প্রকাশ হয়েছে।

১৮. সৈয়দা রাশিদা বারী সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপরে সংবর্ধনা, সম্মাননা, পুরস্কার, ক্রেস্ট, উত্তরীয়, মেডেল, মানপত্র, শুভেচ্ছা শ্রদ্ধা ও প্রশংসাপত্র প্রভৃতি পেয়েছেন, তার কর্মের স্বীকৃতিতে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকসহ প্রায় ৮৫টি।

তবে উপাধী পেয়েছেন ১৪টি। মাশাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, এ জন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন তাকে। এটাও বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতি ক্ষেত্রের উন্নয়ন উন্নতির এক বৃহৎ- মহামূল্যবান সংযোজন। তার গর্ব যে তিনি চেয়ে এবং ধন্যা দিয়ে কখনোই কোন পুরষ্কার গ্রহণ করেন নাই। তার সৃজনশীল কর্মকান্ডের উপর নজর বিশ্লেষণে যে সংস্থা মূলায়ন করে সম্মাননা দিয়েছে, উপাধি দিয়েছে, সেটাই মাত্র তিনি গ্রহণ করেছেন কৃতজ্ঞ চিত্তে। তার জন্ম: সংস্কৃতির রাজধানী কুষ্টিয়া। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও চলচ্চিত্রের গীতিকার। সম্পাদক-প্রকাশক জাতীয় সচিত্র মাসিক ‘স্বপ্নের দেশ’ ঢাকা। তিনি তার এই ‘স্বপ্নের দেশ’ পত্রিকায় বেশ কিছু দিন থেকে মহান ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে কাজ করছেন। যা তিনি ভাষাসৈনিক বা ভাষা লড়াকুদের সৌজন্যে বের করেন। তিনি নিজেও নারী এবং ভাষা আন্দোলন নিয়েই রিসার্চ এবং লেখালেখি করেন। মূলত: তার কলম চলে, এক প্রান্তর থেকে আরেক প্রান্তরে শেখড়ের সন্ধানে। তিনি-
১৯. সাংবাদিকতায়: ১. দৈনিক আজকের সংবাদ, ঢাকা এর বিশেষ প্রতিনিধি; ২. দৈনিক জনপদ, ঢাকা এর সাবেক বিশেষ সংবাদদাতা; ৩. দৈনিক আল আমীন, ঢাকা এর বিভাগীয় সম্পাদক/নারী ও শিশু বিভাগের প্রধান এবং পূর্বে কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ছিলেন; ৪. মাসিক ডাকপিয়ন (ঢাকা) এর সাবেক চীফ রিপোর্টার, এছাড়াও পূর্বে অন্যান্য দৈনিকে ছিলেন।

২০. সাংগঠনিক ক্ষেত্রে: ১. প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক: শতাব্দী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র (বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা শাখা)। ২. প্রতিষ্ঠাতা প্রধান/ভূতপূর্ব সাধারণ সম্পাদক: বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ (কুষ্টিয়া জেলা শাখা)। ৩. প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক: আধুনিক সাহিত্য পরিষদ (কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ)। ৪. প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি: বাংলাদেশ আধুনিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ। ৫. প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি: বাংলাদেশ ভাষাসৈনিক প্রজন্ম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ। ৬. প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি: ভাবনায় বাংলাদেশ, ঢাকা, বাংলাদেশ। ৭. প্রতিষ্ঠাতা- নির্বাহী সদস্য: ড. মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ (ঢাকা)। ৮. সহ-সভাপতি: বাউল তরী শিল্পী গোষ্ঠী, ঢাকা। ৯. উপদেষ্টা: ‘বন্ধন’ কালচারাল ফোরাম, ঢাকা। ১০. উপদেষ্টা: ‘শুদ্ধচিত্র বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’, ঢাকা। ১১. যুগ্ম সম্পাদক: জয় বাংলা সাংস্কৃতিক পরিষদ, ঢাকা। ১২. সাবেক সহ-সম্পাদক: বাংলাদেশ জাতীয় লেখক ফোরাম, ঢাকা। ১৩. বিভাগীয় সচিব: জাতীয় গীতি কবি পরিষদ, ঢাকা। ১৪. নির্বাহী সদস্য: বাংলাদেশ টেলিভিশন শিল্পী সমিতি, ঢাকা। ১৫. প্রাক্তন নির্বাহী সদস্য: জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা- ঢাকা, কেন্দ্রীয় পরিষদসহ ইত্যাদি।

২১. স্থায়ী সদস্য: ১. বাংলা একাডেমি (ঢাকা); ২. লালন একাডেমী (কুষ্টিয়া); ৩. জেলা শিল্পকলা একাডেমী (কুষ্টিয়া); ৪. বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (কুষ্টিয়া শাখা); ৫. বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ (ঢাকা); ৬. ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া জেলা সমিতি (ঢাকা); ৭. কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরী; ৮. কুমারখালী পাবলিক লাইব্রেরি; ৯. কবি সংসদ বাংলাদেশ, ঢাকা; ১০. ভারত-বাংলাদেশ সাহিত্য সংস্থা, ঢাকা, ভারত; ১১. কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী পরিষদ ঢাকা, কলকাতা; ১২. সার্ক কালচারাল ফোরাম এবং ১৩. বিশ্ববঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন (ভারত) ইত্যাদি।

২২. সম্মাননা/ পুরস্কার: ১. বাংলাদেশ জাতীয় লেখক ফোরাম (ঢাকা) বেগম রোকেয়া পদক; ২. বাংলাদেশ লেখিকা সংঘর (ঢাকা) সাহিত্য সংবর্ধনা; ৩. বাংলাদেশ কবিতা সংসদ (পাবনা) বাংলা সাহিত্য পদক; ৪. সুললনা স্বাধীনতা পদক (রাজশাহী); ৫. নোঙর সাহিত্য পুরস্কার (ঈশ্বরদী); ৬. সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী সাহিত্য পুরষ্কার (সিরাজগঞ্জ); ৭. আরশী নগর বাউল সংঘ (রাজবাড়ী) সাহিত্য পুরস্কার ; ৮. জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা; ৯. শতাব্দী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের সম্মাননা; সাংবাদিকতা এবং সাহিত্যের উপর; ১০. কুষ্টিয়া উন্নয়ন পরিষদ এর স্বর্ণপদক ও নাগরিক সংবর্ধনা; ১১. সাপ্তাহিক বিচিত্র সংবাদ পত্রিকার সাহিত্য সম্মাননা; ১২. কবি বে-নজীর আহমদ; ১৩. জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি; ১৪. বাউল তরী; এছাড়া ভারতের ১৫. আন্তর্জাতিক আলো আভাষ; ১৬. আন্তর্জাতিক বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন এর আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরষ্কার; ১৭. ‘এবং বাউল’ পত্রিকা; ও ১৮. ‘কুশুমে ফেরা’ সংস্থা হতে, নেতাজি সুবাস স্মৃতি পুরস্কারসহ ভারতেরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪টি সংবর্ধনা ও সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

সৈয়দা রাশিদা বারী দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী। আমাদের পত্রিকার পক্ষ থেকে অভিনন্দনসহ সাহিত্যের উজ্বল ভবিষ্যত ও সুস্বাস্থ্য দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে